মাঝে দিন কয়েকের দুর্যোগের পর ঝড়বৃষ্টির প্রকোপ খানিক কমেছে দক্ষিণবঙ্গে। গরমের কারণে অস্বস্তিও বেড়েছে। তবে আর নয়! আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাল, বুধবারই মধ্য বঙ্গোপসাগরে নতুন করে একটি নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। তার জেরে বুধবার থেকে ফের ঝড়বৃষ্টি শুরু হতে পারে কলকাতা-সহ দক্ষিণের জেলাগুলিতে।
হাওয়া অফিস জানিয়েছে, মৌসুমি অক্ষরেখা এই মুহূর্তে জলপাইগুড়ির উপর দিয়ে অসমের হাফলং বরাবর দক্ষিণ-পূর্বে মণিপুর পর্যন্ত বিস্তৃত। তা ছাড়া, মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় মধ্য ও উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরির প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় এই নিম্নচাপ ক্রমশ শক্তিশালী হবে। যার জেরে উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গেও ফের দুর্যোগ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বুধবার থেকে শনিবার পর্যন্ত বাংলা এবং সংলগ্ন ওড়িশার উপকূলে সমুদ্র উত্তাল থাকতে পারে। ফলে মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে যাওয়া নিয়ে সতর্কবার্তা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর।
আরও পড়ুন:
আপাতত দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির সম্ভাবনা উত্তরের চেয়ে কম। বুধবার কলকাতা, হাওড়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টির পাশাপাশি ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ও বইতে পারে। বৃহস্পতিবার উপকূলের জেলাগুলিতে বৃষ্টির সম্ভাবনা বাড়বে। ওই দিন দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই কমবেশি ঝড়বৃষ্টি হতে পারে। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুরে দুর্যোগের সম্ভাবনা বেশি। শুক্রবার বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়বৃষ্টির হলুদ সতর্কতা রয়েছে দুই ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়ায়।
অন্য দিকে, উত্তরবঙ্গে সপ্তাহভর দুর্যোগ চলবে। বুধবার দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং এবং আলিপুরদুয়ারে অতি ভারী বৃষ্টির (৭ থেকে ২০ সেন্টিমিটার) সম্ভাবনা রয়েছে। ভারী বৃষ্টির (৭ থেকে ১১ সেন্টিমিটার) সম্ভাবনা রয়েছে কোচবিহারেও। বৃহস্পতিবার ভারী বৃষ্টি হতে পারে আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি জেলায়। শুক্র ও শনিবার উত্তরবঙ্গের জন্য ঝড়বৃষ্টির কোনও সতর্কতা জারি হয়নি। তবে রবিবার থেকে ফের ভারী বৃষ্টি শুরু হতে পারে। রবিবার জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সোমবার থেকে ভারী বর্ষণ শুরু হবে কালিম্পঙেও। দিনকয়েকের ভারী বৃষ্টির জেরে দার্জিলিং এবং কালিম্পঙের পার্বত্য এলাকায় ধস নামার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ধস নামতে পারে সিকিমেও। টানা বৃষ্টির জেরে তিস্তা, তোর্সা এবং জলঢাকা নদীতে জলস্তর বাড়তে পারে বলেও জানিয়েছে আলিপুর।
বুধবার সকাল থেকে কলকাতার আকাশ আংশিক মেঘলা। বাতাসে জলীয় বাষ্প থাকায় বেলা বাড়লে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তিও বাড়তে পারে। বুধবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৮.৪ ডিগ্রি, যা স্বাভাবিকের থেকে ১.৬ ডিগ্রি বেশি। মঙ্গলবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪.২ ডিগ্রি, স্বাভাবিকের থেকে ১.৮ ডিগ্রি বেশি।