Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
BSF

ভোট দিতে চাপের অভিযোগ তৃণমূলের, খণ্ডন বিএসএফের

মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরার নেতৃত্বে কমিশনের ফুল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার কলকাতায় সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২১ ১৫:৩৭
Share: Save:

নির্বাচন কমিশনের সামনে বিএসএফের ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ ঘিরে বিতর্ক বাধল রাজ্য রাজনীতিতে। রাজ্যে সীমান্তবর্তী কিছু এলাকায় একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে ভোট দেওয়ার জন্য বিএসএফ চাপ সৃষ্টি করছে বলে কমিশনের কাছে অভিযোগ জানাল তৃণমূল। বিএসএফের তরফে পাল্টা বিবৃতি দিয়ে জানানো হল, এমন অভিযোগ ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসত্য’। এই ক্ষেত্রে বিএসএফের পাশে দাঁড়িয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করল বিজেপি। কিন্তু রাজ্যে ভোটার তালিকায় অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের নাম আছে বলে দিলীপ ঘোষদের অভিযোগ আসলে বিএসএফের ভূমিকার দিকেও আঙুল তুলছে, এই যুক্তিতে পাল্টা সরব তৃণমূল।

মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরার নেতৃত্বে কমিশনের ফুল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার কলকাতায় সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকেই বিএসএফের ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ করেছেন তৃমমূলের মহাসচিব ও রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিমেরা। পরে বিজেপির নাম না করেই পার্থবাবু বলেন, ‘‘রাজ্যের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিতে বিএসএফ জওয়ানেরা একটি নির্দিষ্ট দলকে ভোট দেওয়ার জন্য ভোটারদের চাপ দিচ্ছেন। গ্রামবাসীদেরবলছেন, ভোট না দিলে টিকতে পারবেন না। জেলাশাসক, পুলিশ সুপার— ওঁরা তো সারাক্ষণ থাকবেন না! আমরাই থাকব।’’ ফিরহাদ জানান, কমিশন নিজস্ব প্রক্রিয়ায় অভিযোগ যাচাই করার কথা বলেছে। ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন পার্থবাবুরা।

রাজ্যের শাসক দলের এমন অভিযোগের পরে বিবৃতি জারি করে নিজেদের দায়িত্বের ব্যাখ্যা দিয়েছে বিএসএফ। তাদের বক্তব্য, দুই মন্ত্রী পার্থবাবু ও ফিরহাদের অভিযোগ ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসত্য’। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বিএসএফ একটি পেশাদার নজরদারি বাহিনী। দেশের সীমান্ত ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ণ রাখতে অতীতে এবং বর্তমানে নিষ্ঠা এবং কর্তব্যপরায়ণতার প্রমাণ বহু বার দিয়েছে বিএসএফ। আমরা সক্রিয় ভাবে অনুপ্রবেশ এবং চোরাচালান রুখতে এবং এই ধরনের কার্যকলাপে যুক্তদের আইনি পথে বিচারের ব্যবস্থা করেছি’। তাদের আরও দাবি, ‘বিএসএফ আমৃত্যু তাদের কর্তব্যে একনিষ্ঠ’। এরই পাশাপাশি দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকারি সূত্রেও বলা হয়েছে, বিএসএফকে নিয়ে তৃণমূলের এমন অভিযোগের পক্ষে কোনও তথ্যপ্রমাণ থাকলে তারা এফআইআর দায়ের করুক। তার পরে দেখা যাবে।

পার্থবাবুদের কটাক্ষ করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবুর মন্তব্য, ‘‘বিএসএফ গরু আর সিআইএসএফ কয়লার পাচার আটকে দেওয়ায় তৃণমূলের রোজগার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ওদের ছোটখাটো নেতারা যে বিরাট গাড়ি চেপে ঘুরে বেড়ান, সে সব বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই মাথা খারাপ হয়ে পার্থবাবুরা এ সব বলছেন।’’

বাংলায় ভোটার তালিকায় বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী, রোহিঙ্গাদেরনাম আছে, এই অভিযোগ মাঠে-ময়দানে করে থাকেন দিলীপবাবুরা। কমিশনের সদস্যদের কাছে গিয়ে এ দিন দিলীপবাবু, মুকুল রায়, সব্যসাচী দত্ত, শিশির বাজোরিয়াদের নিয়ে বিজেপির প্রতিনিধিদলসেই অভিযোগই জানিয়েছে। যার প্রেক্ষিতে পার্থবাবু এবং ফিরহাদের পাল্টা বক্তব্য,‘‘দিশেহারা ঘোষ অভিযোগ করেছেন রোহিঙ্গারা ভোটার তালিকায় ঢুকেছেন। কিন্তু তালিকা তৈরি করে নির্বাচন কমিশন। আর সীমান্ত পাহারা দেওয়া কেন্দ্রীয় বাহিনীর কাজ। এ ভাবে কমিশনের উপরে চাপ সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে!’’ ভোটের দু’মাস আগে থেকে আধা-সামরিক বাহিনীর রুট মার্চ, বুথের ভিতরে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও বাইরে রাজ্য পুলিশ মোতায়েন, যে সব এলাকায় অস্বাভাবিক ভোটার বেড়েছে, সেখানে বিশেষ নজরদারির দাবিও তুলেছে বিজেপি।

রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক, বিভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটার তালিকায় ‘ভূতুড়ে’ নাম থেকে যাওয়ার অভিযোগ করেছে বাম প্রতিনিধিদলও। সেই দলে ছিলেন রবীন দেব, শমীক লাহিড়ী, সুখেন্দু পানিগ্রাহীরা। কংগ্রেসও সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। তবে তাদের প্রতিনিধিদলে প্রথম সারির কোনও নেতা ছিলেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE