E-Paper

কেষ্ট, সুদীপের ক্ষমতা হ্রাস, ভোটের আগে সমতা মমতার

বেশ কয়েকটি জেলায় প্রবীণদের সরিয়ে দেওয়া বা দায়িত্ব ছাঁটা হয়েছে। আবার কিছু জেলায় নেতৃত্বে পুরনোদের রেখে কাজ করতে চাইছেন দলীয় নেতৃত্ব।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২৫ ০৭:০৪
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

কিছু প্রবীণ, কিছু নবীন— এই সূত্র মেনে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক রদবদল সারলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বছরখানেক আগে দলে রদবদলের যে পরিকল্পনা হয়েছিল, শুক্রবার তা আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করেছে তৃণমূল। এই পর্বে বেশ কয়েকটি জেলায় প্রবীণদের সরিয়ে দেওয়া বা দায়িত্ব ছাঁটা হয়েছে। আবার কিছু জেলায় নেতৃত্বে পুরনোদের রেখে কাজ করতে চাইছেন দলীয় নেতৃত্ব। এ বারের এই রদবদলে গুরুত্বপূর্ণ তৃণমূলে ‘বীরভূমের বাঘ’ হিসেবে পরিচিত অনুব্রত মণ্ডলের অব্যাহতি। জেলার নতুন কোর কমিটিতে ৭ জনের এক জন হয়ে থাকবেন তিনি।

এ বার উত্তর কলকাতা জেলা দলের সভাপতি পদ থেকে সরানো হয়েছে বর্ষীয়ান সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। তবে দীর্ঘ দিনের সভাপতি সুদীপ নতুন কমিটির চেয়ারপার্সন হয়েছেন। এই সাংগঠনিক এলাকার জন্য ৮ দলীয় বিধায়ক ও এক পুর-প্রতিনিধিকে নিয়ে একটি কমিটি গড়ে দিয়েছে তৃণমূল। একই ভাবে বারাসাত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বদলের ইঙ্গিত রয়েছে এ দিনের তালিকায়। তবে স্থানীয় সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারের বদলে ওই দায়িত্ব কে পাবেন, তা পরে জানানো হবে বলে তালিকায় উল্লেখ করা হয়েছে। এই রদবদলের আগে চূড়ান্ত টানাপড়েন তৈরি হলেও নিজের পদ দখলে রেখেছেন কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সাংসদ মহুয়া মৈত্র। সভাপতি পদে তাঁকে নিয়ে জেলা তৃণমূল ও বিধায়কদের মধ্যে অসন্তোষ ছিল। কিন্তু বিধানসভা ভোটের আগে মহুয়াকে সরাননি মমতা।

ব্যারাকপুর- দমদম সাংগঠিক জেলায় সভাপতি হয়েছেন সাংসদ পার্থ ভৌমিক। এখানে চেয়ারম্যান আছেন বিধায়ক নির্মল ঘোষই। বসিরহাটের সভাপতি হয়েছেন বুরহানুল মুকাদ্দিম (লিটন), চেয়ারপার্সন হয়েছেন সরোজ বন্দ্যোপাধ্যায়। বনগাঁ সাংগঠনিক জেলায় সভাপতি থাকছেন বিশ্বজিৎ দাস।

রাঢ়বঙ্গের দুই জেলা বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায় একাধিক রদবদল করেছে তৃণমূল। বাঁকুড়া জেলার সভাপতি পদে অরূপ চক্রবর্তীর বদলে আনা হয়েছে তারাশঙ্কর রায়কে। অরূপ হয়েছেন রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি হয়েছেন যুব সংগঠনের সভাপতি সুব্রত দত্ত। বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিক্রমজিৎ চট্টোপাধ্যায় এখন সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান হয়েছেন। পুরুলিয়ায় জেলা সভাপতি করা হয়েছে রাজীবলোচন সোরেনকে। রাজীব বান্দোয়ানের বিধায়ক ও পুরুলিয়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান। জেলায় তৃণমূলের অন্যতম আদিবাসী মুখ তিনি।

দার্জিলিঙের শিলিগুড়ি সমতলের সভাপতি পদ থেকে পাপিয়া ঘোষ এবং চেয়ারপার্সন অলোক চক্রবর্তীকে সরানো হয়েছে। সমতলের নতুন সভাপতির নাম ঘোষণা না করা হলেও চেয়ারপার্সন করা হয়েছে শহরের অবাঙালি মুখ সঞ্জয় টিব্রেওয়ালকে। মালদহে জেলার নতুন চেয়ারপার্সন হয়েছেন নিহত দুলাল সরকার ওরফে বাবলার স্ত্রী, ইংরেজবাজার পুরসভার পুর-পারিষদ চৈতালী ঘোষ সরকার। রতুয়ার বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়কে সরিয়ে চৈতালীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের চেয়ারপার্সন করা হয়েছে চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুর রহমানকে।

দুই মেদিনীপুরেই সাংগঠনিক রদবদল হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক সাংগঠনিক জেলায় সভাপতি ও চেয়ারম্যান দুই-ই বদলেছে। জেলা সভাপতি হয়েছেন তমলুকের পুর-প্রধান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায়। আর সাংগঠনিক চেয়ারম্যান হয়েছেন সুজিত রায়। তবে কাঁথিতে দু’টি পদেই পুরনো মুখে আস্থা রেখেছে দল। পশ্চিম মেদিনীপুরে ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি হয়েছেন বিধায়ক অজিত মাইতি। ঘাটালের চেয়ারম্যান হয়েছেন রাধাকান্ত মাইতি। মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম অপরিবর্তিত।

মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলায় কোনও পরিবর্তন হয়নি। এই সাংগঠনিক জেলার অন্তর্গত শমসেরগঞ্জ, সুতি ও ধুলিয়ানেই সম্প্রতি গোলমাল হয়েছিল। তবে বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান পদে বিধায়ক রবিউল আলম চৌধুরীর জায়গায় এসেছেন দলেরই বিধায়ক নিয়ামত শেখ। এই জেলার সভাপতি থাকছেন বিধায়ক অপূর্ব (ডেভিড) সরকার।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TMC Anubrata Mondal Sudip Bandyopadhyay

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy