স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিবসে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে উত্তপ্ত হল জোড়াবাগান, পাথুরিঘাটা থেকে সংলগ্ন সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ।
স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিবসের সকালেই রক্তাক্ত হল কলকাতা। তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে সকাল থেকেই উত্তপ্ত হয়ে উঠল জোড়াবাগান, পাথুরিঘাটা থেকে সংলগ্ন সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ। পরস্পরকে লক্ষ্য করে চলল ইটবৃষ্টি। যার জেরে মাথা ফাটল নিরীহ পথচারীর। দফায় দফায় সংঘর্ষ, লাঠালাঠিতে বেশ কিছুক্ষণ যান চলাচল বন্ধ থাকল সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউতে।
এই ‘পাড়ার গোলমাল’-এর জের অবশ্য পাড়া ছাড়িয়ে, রাজ্য ছাড়িয়ে পৌঁছে গিয়েছে দিল্লি পর্যন্ত। বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ নিজে ফোনে কথা বলেছেন দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে।
সংঘর্ষের জন্য একে অপরের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে তৃণমূল এবং বিজেপি। যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আজকের দিনে স্বামীজির চরণে শ্রদ্ধা জানানোই আমাদের কর্তব্য। শান্তিপূর্ণ ভাবে স্বামীজির জন্মদিন পালন করব এটাই উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। কিন্তু, এ দিনের ঘটনায় তাঁকে অপমান করা হয়েছে। বিজেপির কার্যকলাপে ধিক্কারের অন্ত নেই।’’
আরও পড়ুন:
জন্মদিনে স্বামীজির ভিটের অদূরেই তৃণমূল-বিজেপি লাঠালাঠি, মারপিট
অশান্তি র্যালি ঘিরে, ফের আদালতে ধাক্কা রাজ্যের
অন্যদিকে, রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের অভিযোগ, বিজেপির বাইক মিছিলে হামলা চালিয়েছে তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরা। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা বলে আর কিছু নেই। আমাদের বাইক মিছিলে হামলা হয়েছে। আমাদের কর্মীদের আটকে রাখা হয়েছিল। স্থানীয় ছেলেরা গিয়ে তাদের ছাড়ানোর চেষ্টা করে।’’
কাল রাত থেকেই গোলমালের সূত্রপাত। আজ সকাল থেকে তা ফের নতুন করে ছড়ায়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সংঘর্ষ তীব্র আকার নেয়। রাজপথে নেমেও হাতাহাতিতে জড়ায় দু’পক্ষ। দিলীপ ঘোষের বলেন, এ দিনের পুরো ঘটনাই ফোনে অমিত শাহকে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘অমিতজি বলেছেন এই ঘটনাকে সামনে রেখেই যেন মিটিং মিছিল চালিয়ে যায় বিজেপি।’’ একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, এ দিনের ঘটনা রাজ্যপালকে জানানো হয়েছে। আজকের ঘটনাকে সামনে রেখে আগামিকাল সব থানার সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করবে বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা।
অন্যদিকে, এ দিনের সংঘর্ষ প্রসঙ্গে তৃণমূলের দাবি, বাইরে থেকে লোক নিয়ে এসে রাজ্যকে অশান্ত করতে চাইছে বিজেপি। ‘‘ডাণ্ডাকে ঝান্ডায় পরিণত করেছে বিজেপি’’ মন্তব্য পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। এ দিনের ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন বিধায়ক শশী পাঁজা। তিনি বলেছেন, ‘‘পরিকল্পিত ভাবে তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা চালিয়েছে বিজেপি। শান্তিপূর্ণ ভাবে স্বামীজির জন্মদিন পালন করছিলাম আমরা। তার মাঝেই, বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করল বিজেপি।’’
হাইকোর্টের অনুমতি নিয়েই ‘প্রতিরোধ সঙ্কল্প যাত্রা’-র কর্মসূচি নিয়েছিল রাজ্য বিজেপি যুব-মোর্চা। সেই উপলক্ষ্যেই ক’দিন ধরে রাজ্যের নানা জায়গায় মিটিং, মিছিল এবং সমাবেশ চলছিল। শুক্রবার সকালে জোড়াবাগান এলাকা থেকে বাইক মিছিল করার কথা ছিল বিজেপি কর্মী সমর্থকের। অভিযোগ, সেই মিছিল শুরুর আগেই বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা চালায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। পাল্টা হামলা চালায় বিজেপিও। বাঁশ, লাঠি, রড নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বেধে যায় ধুন্ধুমার কাণ্ড। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় পৌঁছয় বিশাল পুলিশবাহিনী। অন্য দিকে তৃণমূলের অভিযোগ, গতকাল রাত থেকেই মত্ত অবস্থায় এলাকায় তাণ্ডব চালিয়েছে কয়েকজন বিজেপি কর্মী। মেয়েদের কটূক্তি করেছে কারা। পুলিশের অনুমতি না নিয়েই মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে। সেটা রুখতেই সক্রিয় হয়েছিলেন তৃণমূল কর্মীরা।
ঘটনার তীব্র নিন্দা করে রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বলেছেন, ‘‘পুলিশের অনুমতি বলেও একটা ব্যাপার রয়েছে। অশান্তি ঠেকাতে গেলে সরকারকে কিছু অবস্থান নিতেই হয়। আমরা তো বলিনি মিটিং, মিছিল হবে না। শুধু বলেছি, এই সময় হবে না।’’
তৃণমূলের দিকে পাল্টা অভিযোগের আঙুল তুলেছেন মুকুল রায়ও। তাঁর কথায়, ‘‘প্রমাণ হল বাংলায় গণতন্ত্র নেই। আমরা অনেক শাসক দেখেছি। এমন শাসক দেখিনি। কোর্ট অফিসারের উপরেও হামলা হল। বাংলা আজ রক্তাক্ত। পুলিশ প্রশাসনের অসহায়তা আমাকে অবাক করেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy