Advertisement
E-Paper

কান ধরে ওঠবস তমলুকের তৃণমূল কাউন্সিলরের! ‘দোষ’ কী? জানিয়ে দিলেন নিজেকে শাস্তি দিতে দিতেই

তমলুক পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পার্থের পোস্ট করা ওই ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। পার্থের দাবি, টাকার বিনিময়ে অযোগ্য শিক্ষকদের নিয়োগে পূর্ব মেদিনীপুরের একঝাঁক তৃণমূল নেতা জড়িত।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৫:৫৯
কান ধরে ওঠবস করছেন তৃণমূল কাউন্সিলর।

কান ধরে ওঠবস করছেন তৃণমূল কাউন্সিলর। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত।

মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে কান ধরে ওঠবস করলেন পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক পুরসভার কাউন্সিলর তথা আইনজীবী পার্থসারথি মাইতি! তাঁর অভিযোগ, নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত জেলার তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ। জড়িত রাজ্যের বিরোধী দলনেতাও। অথচ দলের নেতারা সব জেনেও চুপ! তাই তাঁদের হয়ে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছেন তিনি। নিজের সমাজমাধ্যমে পোস্টও করলেন সেই ভিডিয়ো।

তমলুক পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পার্থের পোস্ট করা ওই ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে (ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)। পার্থের দাবি, টাকার বিনিময়ে অযোগ্য শিক্ষকদের নিয়োগে পূর্ব মেদিনীপুরের একঝাঁক তৃণমূল নেতা জড়িত। কিন্তু তাঁরা মুখ না খোলায় পার পেয়ে যাচ্ছেন নিয়োগ দুর্নীতির নেপথ্যে থাকা মূলচক্রী! তাই নিজের দলের দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের হয়ে জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে কান ধরে ওঠবস করেছেন তিনি।

ভিডিয়োয় পার্থকে বলতে শোনা যাচ্ছে, “আমাদের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার যে সমস্ত নেতা টাকা নেওয়ার পরেও মুখ খুলছেন না এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুবাবু যে বড় বড় ভাষণ দিচ্ছেন, তার একমাত্র কারণ আমাদের নেতৃত্বের মুখ না খোলা। তাঁদের হয়ে মানুষের কাছে আমি ক্ষমা চাইছি।’’

প্রসঙ্গত, দাগি অযোগ্য শিক্ষকদের নামের তালিকা সদ্য প্রকাশ করেছে এসএসসি। আর সেই তালিকাতেই উঠে এসেছে পূর্ব মেদিনীপুরের একঝাঁক অযোগ্যের নাম। এ নিয়ে ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে জেলা জুড়ে। অভিযোগ, শাসক দলের বহু নেতাকর্মী, তাঁদের আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠদের নাম এই তালিকায় জ্বলজ্বল করছে। পার্থের দাবি, ২০১৬ সালে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের একচ্ছত্র নেতা যিনি ছিলেন, তাঁর হাত ধরেই এই অবৈধ নিয়োগ হয়েছে। অথচ জেলা জুড়ে এই বিপুল সংখ্যক ভুয়ো শিক্ষক নিয়োগের নেপথ্যে ‘মাস্টারমাইন্ড’কে সব জানা সত্ত্বেও আড়াল করছে তৃণমূলেরই একাংশ।

ভিডিয়ো ‘ভাইরাল’ হওয়ার পর কী বলছেন পার্থ? কাউন্সিলরের কথায়, “আমি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মানুষ। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা আন্দোলনের জেলা, স্বাধীনতার জেলা। কিন্তু এই জেলার মানুষ হয়েও আজ আমরা দুঃখিত। কারণ, শুভেন্দুর মতো একজন মহাচোর আমাদের কিছু স্বার্থান্বেষী নেতার মদতে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। লজ্জার বিষয় হল, এই জেলার সমস্ত তৃণমূল নেতৃত্বই জানেন কে ভুয়ো শিক্ষক নিয়োগের মাস্টারমাইন্ড ছিলেন। কিন্তু মূল চোরের নাম কিছুতেই সামনে আনা হচ্ছে না।” পার্থের মতে, দলেরই একাংশ এই কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছিলেন। কিন্তু এখন নিজেদের গদি বাঁচাতে তাঁরা সমস্ত প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও শুভেন্দুকে আড়াল করছেন।

অন্য দিকে, শুভেন্দু আগেই জানিয়েছেন তাঁর কোনও আত্মীয় বা ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির নাম দাগি অযোগ্যদের তালিকায় নেই। তিনি বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে কেউ যদি এ ধরনের অভিযোগ করে থাকেন তা হলে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।” তমলুক পুরসভার বিজেপি কাউন্সিলর শবরী চক্রবর্তীও বলছেন, “১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পার্থ মাইতির কথায় তাঁর দলের নেতৃত্বই গুরুত্ব দেন না। সেই ব্যক্তি নিজেকে প্রচারের কেন্দ্রে আনার জন্য উল্টোপাল্টা কথা বলছেন। এ সব কথায় আমরা কোনও গুরুত্ব দিচ্ছি না।’’

অন্য দিকে, তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজিত রায় বলেন, “এই জেলায় কি এখনও শুভেন্দু দল চালাচ্ছেন? উনি একজন আইনজীবী হয়েও কী ভাবে এই সব বেআইনি কথা বলছেন? দলের হয়ে লড়াইয়ের নামে তিনি আসলে তৃণমূলকেই ছোট করছেন।’’

tmc councillor Councillor Sit Up Viral Video Suvendu Adhikari TMC SSC Recruitment Case
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy