লালকেল্লার সামনে সোমবার বিস্ফোরণের খানিক ক্ষণ পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে জানিয়েছিলেন, তিনি ‘স্তম্ভিত’! মঙ্গলবার সকালে দিল্লি বিস্ফোরণ নিয়ে আদালতের তত্ত্বাবধানে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠনের দাবি তুলে এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দুপুরে মমতা এবং অভিষেকের পক্ষ থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করে দিল্লি বিস্ফোরণের ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ইস্তফা দাবি করলেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা এবং ব্যারাকপুরের তৃণমূল সাংসদ পার্থ ভৌমিক।
দিল্লি পুলিশ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন। লালকেল্লার মতো এলাকায় কী ভাবে এই বিস্ফোরণ ঘটল, সে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। বঙ্গের শাসকদলের বক্তব্য, একটার পর একটা ঘটনা ঘটছে আর দেখা যাচ্ছে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বলে কিছু নেই। সোমবার সকালে ফরিদাবাদে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার হওয়ার পরেও কেন সতর্ক হওয়া গেল না? কেন এত বড় বিস্ফোরণ ঘটল, সেই প্রশ্ন তুলে শাহের ইস্তফা দাবি করেছে তৃণমূল।
আরও পড়ুন:
মঙ্গলবার সকালে দু’দিনের ভুটান সফরে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ইতিমধ্যে পড়শি দেশের সেই মঞ্চ থেকে অপরাধীদের ছাড়া হবে না বলে বার্তাও দিয়েছেন তিনি। কিন্তু বিস্ফোরণে বিপর্যস্ত দিল্লি ফেলে মোদীর ভুটান সফরকে ‘বেড়াতে যাওয়া’ বলে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। তাদের বক্তব্য, বর্ধমানের খাগড়াগড়ে যখন বিস্ফোরণ হয়েছিল, তার পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছিলেন। আর প্রধানমন্ত্রী দিল্লি ছেড়ে ভুটান চলে গিয়েছেন!
২০১৫ সালে উধমপুরে সেনা কনভয়ে হামলা, ২০১৬ সালে উরি এবং পাঠানকোটে সন্ত্রবাদী হানা, ২০১৯ সালে পুলওয়ামা, ২০২৫ সালে পহেলগাঁও, তার পর দিল্লি— মোদী জমানায় সমস্ত সন্ত্রাসবাদী হামলার ঘটনার কথা তুলে তৃণমূলের প্রশ্ন, একটার পর একটা ঘটনা ঘটে, তার পর নানা কথা বলা হয়। কিন্তু থামে না। মন্ত্রী শশী বলেন, ‘‘২০১৬ সালে নোটবন্দির সময়ে আমাদের লাইনে দাঁড় করিয়েছিলেন মোদীজি। বলেছিলেন সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করবেন। কিন্তু তার পরেও পুলওয়ামা, পহেলগাঁও, দিল্লির মতো ঘটনা ঘটল।’’ ব্যারাকপুরের তৃণমূল সাংসদ পার্থ প্রশ্ন তোলেন, ‘‘বিজেপি কি চাইছে এই ধরনের ঘটনা ঘটেই চলুক? তার পরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে ধর্মের নামে বিভাজন করবে?’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘পুলওয়ামার পরে বলল সব শেষ করে দিয়েছে। দেখা গেল পহেলগাঁও হল। পহেলগাঁওয়ের পরে অপারেশন সিঁদুর করে বলল সব গুঁড়িয়ে দিয়েছে। তার পর দিল্লি হল। কী শেষ করে আর কেন বার বার ঘটনা ঘটে, তা বিজেপি-ই জানে!’’ তৃণমূলের এ-ও আশঙ্কা, এর পরে ফের সীমান্তে ‘যুদ্ধের জিগির’ তৈরি করা হতে পারে।