Advertisement
০৫ মে ২০২৪

ফের বোমা উত্তরে,যদুবংশ ধ্বংস হবে, কটাক্ষ বিরোধীর

ক্ষমতার ভাগ নিয়ে শাসক দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব দেখে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ কটাক্ষ করেছেন, যদুবংশ ধ্বংস হবে! দলের রাজ্য দফতরে রবিবার রাখিবন্ধন উৎসবের ফাঁকে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে তৃণমূল। তা-ও নিজেদের অভ্যাস মতো ঝগড়া করছে। যেখানে কোনও শত্রু নেই, ১৫টায় ১৫টা আসনই তৃণমূলের, সেখানেও অন্তর্দ্বন্দ্বে মারপিট, খুন হচ্ছে। তৃণমূলের দলের মধ্যে সম্প্রীতির জন্য রাখি পরানো উচিত!’’

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা ও ইসলামপুর শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৮ ০৪:১০
Share: Save:

পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে অশান্তির ঘটনা বাড়ছে। এখনও পর্যন্ত বড়সড় গোলমালের খবর এসেছে উত্তর দিনাজপুর থেকে। দক্ষিণবঙ্গের কিছু জেলাতেও বিক্ষিপ্ত গোলমালের অভিযোগ আছে। এই গোলমালের অধিকাংশই শাসক দলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে। দক্ষিণবঙ্গের বেশির ভাগ জায়গায় এই সপ্তাহে বোর্ড গড়ার প্রক্রিয়া চলবে। তখন পরিস্থিতি কোন দিকে গড়াবে, তা নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে নানা মহলেই।

ক্ষমতার ভাগ নিয়ে শাসক দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব দেখে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ কটাক্ষ করেছেন, যদুবংশ ধ্বংস হবে! দলের রাজ্য দফতরে রবিবার রাখিবন্ধন উৎসবের ফাঁকে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে তৃণমূল। তা-ও নিজেদের অভ্যাস মতো ঝগড়া করছে। যেখানে কোনও শত্রু নেই, ১৫টায় ১৫টা আসনই তৃণমূলের, সেখানেও অন্তর্দ্বন্দ্বে মারপিট, খুন হচ্ছে। তৃণমূলের দলের মধ্যে সম্প্রীতির জন্য রাখি পরানো উচিত!’’

তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য দুষেছেন বিজেপিকেই। তাঁর বক্তব্য, ‘‘রক্ত ঝরছে বলে যদি মনে হয়, তা হলে রক্ত না ঝরার বন্দোবস্ত করুন। রক্ত কেন ঝরছে, আমরা জানি। আমরা জানি, কাদের তুলে নিয়ে গিয়ে ঝাড়খণ্ডে রাখা হচ্ছে, কাদের তুলে নিয়ে গিয়ে পুরীতে রাখা হচ্ছে। প্রায় সমস্ত জায়গাতেই ওরা ভাগ করছে। আদিবাসীদের মধ্যেও ভাগ করে দিচ্ছে। এই বিভাজনের রাজনীতিটা আগে বন্ধ হওয়া উচিত।’’

উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে পণ্ডিতপোতা-১ পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে শাসক দলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে শনিবার এক জনের মৃত্যু হয়েছিল। পাশের গ্রাম পণ্ডিতপোতা-২ এ দিন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বোমাবাজিতে। আগের দিন সেখানেও বোর্ড গঠন হয়েছে। অভিযোগ, সদ্যনির্বাচিত মহিলা প্রধান সম্পর্কে স্থানীয় গোলাপাড়া বাজারে চায়ের দোকানের আড্ডায় তৃণমূলের অপর গোষ্ঠীর লোকজন অশালীন মন্তব্য করলে বচসা বাধে। লাঠি, ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা এবং তার পরে বোমাবাজি হয়। পুলিশ লাঠি চালিয়ে পরিস্থিতি সামলায়।

দু’পক্ষের ২১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয় দু’টি পিস্তল, ছ’রাউন্ড গুলি ও কয়েকটি ধারালো অস্ত্র। প্রধানের স্বামী মহম্মদ রসিদ বলেন, ‘‘চায়ের দোকানে আড্ডা থেকেই গোলমাল বেধেছে।’’ জেলার পুলিশ সুপার অনুপ জয়সবাল বলেন, ‘‘সকাল থেকে পরিস্থিতি ঠিকই ছিল। হঠাৎ করেই গন্ডগোল বাধে। বেশ কিছু ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’

পণ্ডিতপোতা-১ পঞ্চায়েতে শনিবার পুলিশের সামনেই গোলমাল হয়েছিল। পণ্ডিতপোতা-২ গ্রামে গোলমাল বড় আকার নেওয়ার আগেই এ দিন পুলিশ পৌঁছেছিল। তার পরেও বোমাবাজি হয়েছে স্থানীয়দের অভিযোগ। শনিবার বোমার আঘাতে লাল মহম্মদের মৃত্যুর ঘটনায় জেলা পরিষদের বিদায়ী সদস্য তথা তৃণমূল নেতা জাভেদ আখতারের নামে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছে নিহতের পরিবার। পুলিশ সুপারের বক্তব্য, জাভেদ-সহ যাদের নামে অভিযোগ হয়েছে, তার ভিত্তিতে মামলা রুজু করা হয়েছে। অথচ জাভেদকে এ দিনও পণ্ডিতপোতা-২ এলাকায় বোমাবাজির সময়ে দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ। জাভেদের দাবি, ‘‘আমাকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে। এই ঘটনায় আমি কোনও ভাবেই জড়িত নই।’’ যদিও তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীর কুর মহম্মদ বলেন, ‘‘জাভেদ পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের আগে থেকেই বহিরাগতদের এনে গন্ডগোল করছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE