Advertisement
E-Paper

তিনটি আসনে হার, কারণ খুঁজছে শাসক

তছনছ পাশের জেলা একদা লাল গড় পশ্চিম মেদিনীপুর। অথচ ২০০৮ সালে যে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা থেকে তৃণমূলের বিজয়রথের যাত্রা শুরু, সেখানেই তিনটি আসন হাতছাড়া হল শাসকদলের। কোন অঙ্কে পূর্বে বামেদের ফল ভাল হল, কারণ নিয়ে জল্পনা তৃণমূলের অন্দরেও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৬ ০১:৪২
Share
Save

তছনছ পাশের জেলা একদা লাল গড় পশ্চিম মেদিনীপুর। অথচ ২০০৮ সালে যে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা থেকে তৃণমূলের বিজয়রথের যাত্রা শুরু, সেখানেই তিনটি আসন হাতছাড়া হল শাসকদলের। কোন অঙ্কে পূর্বে বামেদের ফল ভাল হল, কারণ নিয়ে জল্পনা তৃণমূলের অন্দরেও।

২০১১ সালের বিধানসভা ভোটে তৃণমূল জেলার ১৬টি আসনই দখল করে। এ বার তাই প্রথম থেকেই লড়াইটা ছিল গড় রক্ষার। যদিও জেলার হলদিয়া, তমলুক ও পাঁশকুড়়া পূর্ব আসনে জোটের প্রার্থীরা জয়ী হওয়ায় অধিকারী-গড়ে হাল্কা চিড় নিয়ে চিন্তায় জেলা নেতৃত্ব।

হলদিয়ায় সিপিএম প্রার্থী তাপসী মণ্ডলের কাছে পরাজিত হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী তথা জেলা সভাধিপতি মধুরিমা মণ্ডল। গত বিধানসভা ভোটে হলদিয়া কেন্দ্রে প্রায় ১২ হাজার ভোটে জিতেছিলেন তৃণমূল প্রার্থী শিউলি সাহা। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে তৃণমূল প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীও এই কেন্দ্রে প্রায় সাড়ে ১১ হাজার ভোটে এগিয়েছিলেন। এ বারের ভোটে হলদিয়ায় শাসকের ধরাশায়ী হওয়ার কারণ কী?

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হলদিয়ার এক তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘দলের একাংশ শ্রমিক নেতার নানা কার্যকলাপে শ্রমিক-সহ এলাকার সাধারণ মানুষের ক্ষোভ বাড়ছিল। এ ছাড়াও দলের একাংশ নেতা অন্তর্ঘাত করে সিপিএম প্রার্থীকে সমর্থন করার ফলেই হলদিয়ায় আমাদের দলের প্রার্থীর এমন শোচনীয় হার হয়েছে।’’ মধুরিমাদেবীরও বক্তব্য, ‘‘হলদিয়া পুরসভায় আমাদের দল ক্ষমতায় রয়েছে। তাই আমরা অনেকটা এগিয়ে থাকব বলে আশা করেছিলাম। কিন্তু ওই এলাকায় আমরা যে এত পিছিয়ে যাব ভাবতে পারিনি। সেই তুলনায় সুতাহাটা পঞ্চায়েত এলাকায় কম ব্যবধানে পিছিয়ে ছিলাম।’’

বন্দর শহরের মতো বিপুল ব্যবধানে না হলেও জেলার সদর তমলুকও ছিনিয়ে নিয়েছে জোট। তমলুক কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী নির্বেদ রায়কে হারিয়েছেন সিপিআই প্রার্থী অশোক দিণ্ডা। হারের কারণ নিয়ে তমলুক শহর তৃণমূল সভাপতি দিব্যেন্দু রায় বলেন, ‘‘পুরসভা এলাকায় আমরা যে ভাবে জনসমর্থন পেয়েছিলাম গ্রামীণ এলাকায় সে ভাবে সমর্থন না মেলায় এমন ফল হয়েছে। তবে ঠিক কী কারণে এমনটা ঘটল তা নিয়ে পর্যালোচনা করা হবে।’’ পাঁশকুড়া পূর্ব কেন্দ্রে হার নিয়েও অস্বস্তিতে শাসকদল। যদিও ওই কেন্দ্রে হারের পর তৃণমূল প্রার্থী বিপ্লব রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘মানুষ আমাকে পছন্দ করেনি বলেই এমনটা হয়েছে। এ নিয়ে দলের কাউকে দোষারোপ করতে চাই না।’’

২০০৭ সালে নন্দীগ্রামে জমিরক্ষা আন্দোলনের জেরে তৃণমূলের উত্থানের পাশাপাশি বামেদের শক্তিক্ষয় শুরু হয়। সেখানে নন্দীগ্রামের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে তিনটি আসনে জয় তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে বাম শিবির। সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, ‘‘জেলায় আমাদের দল-সহ বামফ্রন্টের সাংগঠনিক শক্তি আগের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে বলেই তিনটি আসনে জয় এসেছে। বিশেষ করে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের মতো এলাকার মানুষ সমর্থন করে আমাদের প্রার্থীকে জিতিয়েছেন। এ ছাড়া জেলা সদর ও কোলাঘাট শিল্পাঞ্চলের মানুষও আমাদের প্রার্থীকে জিতিয়ে তৃণমূলকে উপযুক্ত জবাব দিয়েছে।’’

সারা রাজ্যে যেখানে বামেদের ভরাডুবি, সেখানে জেলায় ভাল ফলের কারণ কী? নিরঞ্জনবাবুর দাবি, ‘‘২০১২ সালে হলদিয়া পুরসভা নির্বাচনে সেখানকার বাসিন্দারা আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছিলেন। তার পরেও তৃণমূল যে ভাবে জোর করে পুরবোর্ড দখল করেছে তা হলদিয়ার মানুষ মেনে নেননি। এতে প্রমাণ হচ্ছে শিল্প শ্রমিক-সহ সাধারণ মানুষ আমাদের পাশেই রয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘হলদিয়া, তমলুক ও পূর্ব পাঁশকুড়া বিধানসভা কেন্দ্রে জয় তো হয়েছে, জেলার বাকি বিধানসভা আসনগুলিতেও গত লোকসভা ভোটের তুলনায় আমাদের পক্ষে সাধারণ মানুষের
সমর্থন বেড়েছে।’’ আরএসপির জেলা সম্পাদক অমৃত মাইতিরও বক্তব্য, ‘‘জেলায় তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত-সহ বিভিন্ন স্তরের নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ছিল। এ ছাড়াও সরকারের বিভিন্ন কাজেও ক্ষুব্ধ মানুষ। তাই জেলায় আমাদের
সমর্থন বেড়েছে।’’

তৃণমূল জেলা সভাপতি শিশির অধিকারী বলেন, ‘‘এই ফলের পিছনে নানা কারণ রয়েছে। বিষয়টি আমরা পর্যালোচনা করে দেখব।’’

Midnapore reasons defeat TMC

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে আপনার সাবস্ক্রিপশন আপনাআপনি রিনিউ হয়ে যাবে

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।