Advertisement
E-Paper

তোলাবাজিকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, গড়বেতায় হত ৩

তোলাবাজিকে কেন্দ্র করে শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে রক্তাক্ত হল পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা। শুক্রবার সাতসকালেই খুন হলেন তৃণমূল এক সমর্থক। তার পাল্টা হিসেবে আগুনে পুড়ল শাসক দলেরই অন্য গোষ্ঠীর অনুগামীদের বাড়ি। মারা গেলেন আরও দু’জন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৬ ১৬:৫৬
টাঙ্গির কোপে আহত আসমা বিবি। পরে মারা যান তিনি।

টাঙ্গির কোপে আহত আসমা বিবি। পরে মারা যান তিনি।

তোলাবাজিকে কেন্দ্র করে শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে রক্তাক্ত হল পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা। শুক্রবার সাতসকালেই খুন হলেন তৃণমূল এক সমর্থক। তার পাল্টা হিসেবে আগুনে পুড়ল শাসক দলেরই অন্য গোষ্ঠীর অনুগামীদের বাড়ি। মারা গেলেন আরও দু’জন। তিন জনের প্রাণহানিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠল গোটা এলাকা। ফলে তোলাবাজি ‘রোগ’ প্রতিরোধে শহর এলাকায় শক্ত হাতে রাশ টানার ছবি খানিকটা দেখা গেলেও, রাজ্যের সর্বত্র যে এর শিকড় কতখানি তা ফের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল গড়বেতার এই ঘটনা।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় নিহত হয়েছেন সেরা মল্লিক (৪৪), আলম মণ্ডল (৬৫) ও আসমা বিবি (৪২)। সেরা মল্লিক গড়বেতার একাড়িয়া গ্রামের মল্লিকপাড়ার বাসিন্দা। অন্য দিকে, আলম মণ্ডল ও আসমা বিবির বাড়ি পাশের মণ্ডলপাড়ায়।

এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন, গত কয়েক দিন ধরেই গড়বেতা তৃণমূলের বর্তমান ব্লক সভাপতি সেবাব্রত ঘোষ ও প্রাক্তন ব্লক সভাপতি দিলীপ পালের মধ্যে এলাকা দখলের লড়াই চলছে। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে ছোটখাটো ঝামেলা লেগেই ছিল। তবে এ দিন তা চরমে ওঠে।

ঠিক কী হয়েছিল?

পুলিশ সূত্রে খবর, গড়বেতার একাড়িয়া এলাকায় এ দিন সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ বাজারে যাওয়ার পথে আক্রান্ত হন সেবাব্রত ঘোষের অনুগামী সেরা মল্লিক। দিলীপ পালের প্রায় দশ-বারো জন অনুগামী সেরা মল্লিকের উপর হামলা করে বলে অভিযোগ। প্রথমে মারধর, তার পর গুলি করে দেহ মাঠে ফেলে পালিয়ে যায় তারা। সেরা মল্লিকের খুনের কথা জানাজানি হতে না হতেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা।

পাল্টা হিসেবে মণ্ডলপাড়ায় দিলীপ পালের অনুগামীদের বাড়িতে চড়াও হয় সেবাব্রতের সমর্থকেরা। অভিযোগ, বেশ কয়েক জনের বাড়িতে আগুন লাগানো ছাড়াও পাড়ার লোকেদের মারধরও করে তারা। অগ্নিদগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান আলম মণ্ডল। তাঁকে বাঁচাতে এসে দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হন আলম মণ্ডলের পুত্রবধূ আসমা বিবি। তাঁর মাথায় টাঙ্গির কোপ চালানো হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় আসমা বিবিকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যান তিনি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। সঙ্গে বিশাল বাহিনী। তবে এখনও কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ।

এই ঘটনায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ফের প্রকাশ্যে চলে এলেও তা অস্বীকার করেছেন গড়বেতার তৃণমূল বিধায়ক আশিস চক্রবর্তী। তাঁর দাবি, “একাড়িয়ায় একটা গোলমাল হয়েছে বলে শুনেছি। তবে তা সমাজবিরোধীদের মধ্যে গোলমাল।”

গড়বেতার প্রাক্তন ব্লক সভাপতি দিলীপবাবুর দিকে অভিযোগ উঠলেও তা উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়: “যারা মার
খেয়েছে, তাদের মধ্যে আমার কিছু অনুগামী রয়েছে বটে। তবে এ ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই।” পাশাপাশি সেবাব্রত বাবু বলেন, “দলের কয়েক জন খারাপ লোক এ ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা বিকেলে বিধায়কের সঙ্গে তা নিয়ে বৈঠক করব।”

এ দিনের ঘটনার পর মুখ খুলেছেন এলাকাবাসীরাও। এলাকার বাসিন্দা আশিক পাঠান বলেন, “তৃণমূলের দু’পক্ষই এখানে নেতা হওয়ার চেষ্টা করছে। তা নিয়ে মাঝে মাঝেই গোলমাল লেগেই থাকে। আজ সে জন্যই এত বড় ঘটনা ঘটল।” ঘটনার পর সরব হয়েছে বিরোধীরা। সিপিএমের জেলা সম্পাদক তরুণ রায় বলেন, “তৃণমূলের দু’পক্ষের এ ধরনের সংঘর্ষে তিতিবিরক্ত এলাকার মানুষ।”

ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

আরও পড়ুন

শ্রীঘরেই ঠাঁই পেলেন সল্টলেকের ‘অনুব্রত’

Garhbeta TMC group clashes
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy