E-Paper

মুখবদল-প্রক্রিয়ার আভাস! ছুটছেন নবীনরা, বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চে প্রবীণদের ‘জায়গা’ কমাল তৃণমূল

সংগঠনে নাড়াচাড়া দিতে দুর্গাপুজোর আগেই বিজয়া সম্মিলনীর পরিকল্পনা করেছিল তৃণমূল। জেলায় জেলায় কর্মসূচির রূপরেখা পাঠিয়ে দেওয়া হয়। প্রত্যেকটি জায়গায় দলের তরফে প্রতিনিধিও চূড়ান্ত করে দেওয়া হয়েছে।

রবিশঙ্কর দত্ত

শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:০৪
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল ছবি।

দলের বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চেও প্রবীণদের ‘জায়গা’ কমিয়ে ফেলল তৃণমূল কংগ্রেস। পাশাপাশি রাজ্য দলের প্রতিনিধি হিসেবে ‘জায়গা’ বাড়ানো হল নবীন নেতাদের। বিজয়া সম্মিলনী মঞ্চের এই ছবিকে দলের মুখবদলের প্রস্তাবিত প্রক্রিয়ার পূর্বাভাস বলে মনে করছেন দলীয় নেতৃত্বের একাংশ।

সংগঠনে নাড়াচাড়া দিতে দুর্গাপুজোর আগেই বিজয়া সম্মিলনীর পরিকল্পনা করেছিল তৃণমূল। জেলায় জেলায় সেই কর্মসূচির রূপরেখা পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি প্রত্যেকটি জায়গায় রাজ্য দলের তরফে প্রতিনিধিও চূড়ান্ত করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিনিধিদের সেই তালিকায় দলের প্রবীণ নেতাদের নাম কার্যত নেই বললেই চলে। দু’একজন পুরনো নেতা-মন্ত্রীকে এই দায়িত্ব দেওয়া হলেও তাঁরা যে সব জেলায় সাংগঠনিক সমন্বয় রাখতেন, সে সব জায়গায় পাঠানো হচ্ছে অন্যদের। সংখ্যার বিচারেও প্রবীণ ও নবীন নেতাদের কর্মসূচির ফারাক বিস্তর। উত্তর থেকে দক্ষিণ, গোটা রাজ্যে নবীনরাই ছুটে বেড়াচ্ছেন।

রাজ্য তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “কমবেশি এক বছরের মাথায় রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে প্রতিনিধিত্ব নিয়ে দলের নির্দিষ্ট ভাবনা থাকতেই পারে।” কিছু দিন আগেই দলের পরামর্শদাতা সংস্থার রাশ টানতে স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্যোগী হয়েছিলেন। মুখবদলের লক্ষ্যে শুরু সমীক্ষা বন্ধের নির্দেশও দিয়েছিলেন তিনি। এই প্রেক্ষাপটেও বিজয়া সম্মিলনীর এই তালিকা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। দলীয় কর্মসূচি হলেও বিজয়া সম্মিলনীর বিষয়টি পুরোপুরি চূড়ান্ত হয়েছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিস থেকে।

সেখান থেকে জেলায় প্রতিনিধি নেতাদের তালিকা পাঠানোর পর আলোচনা চলছে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও অরূপ বিশ্বাসকে নিয়ে। দলের ওই তালিকায় সুব্রত ও ফিরহাদের নাম নেই। আর একাধিক জেলায় দলের সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা অরূপের উপস্থিতি নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে শুধুমাত্র দক্ষিণ কলকাতায়। রাজ্য সভাপতি হিসেবে বক্সী যে কোনও জায়গায় যেতে পারেন। তবে যে বীরভূম, হুগলি, মুর্শিদাবাদ ও মালদহে ফিরহাদ দীর্ঘ দিন যাতায়াত করছেন, সেখানে পাঠানো হয়েছে অন্য নেতাদের। বীরভূমের দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া হয়েছে স্থানীয় নেতাদের উপরে।

দলীয় সাংসদদের মধ্যে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্রে গুটিকতক কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দমদমের সাংসদ সৌগত রায় ও উত্তর কলকাতায় সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম দলের তালিকায় নেই। গুচ্ছ গুচ্ছ কর্মসূচি রয়েছে কুণাল ঘোষ, পার্থ ভৌমিক, দেবাংশু ভট্টাচার্য, অরূপ চক্রবর্তী, ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের। প্রতিনিধি হিসেবে তুলনায় নবীন মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী, বিরবাহা হাঁসদা, ব্রাত্য বসু, শশী পাঁজার ‘নম্বর’ ভাল। এঁরা অভিষেকের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। কর্মসূচি রয়েছে দুই মন্ত্রী মানস ভুইয়াঁ ও চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যেরও। মধ্যবর্তী অবস্থানে থাকা সমীর চক্রবর্তী ও বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়ের নাম আছে প্রতিনিধি তালিকায়।

এই গুঞ্জনের মধ্যে দলের অন্দরে পাল্টা চর্চা চলছে ছয় বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন নিয়ে। নিজস্ব বৃত্তে এই প্রস্তুতি পরিচালনা করছেন রাজ্য সভাপতি সুব্রত। নৈহাটি ও হাড়োয়ায় জয়প্রকাশ মজুমদার, তালড্যাংরায় আশিস চক্রবর্তীকে পাঠিয়েছেন তিনি। সিতাই, মাদারিহাট ও মেদিনীপুরে নিজেই যাবেন রাজ্য সভাপতি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TMC Mamata Banerjee Abhishek Banerjee

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy