Advertisement
E-Paper

মন্তব্য এড়ালেন মমতা, বিজেপি-ই বড় সিন্ডিকেট, বলল তৃণমূল

ইস্যু ধরে ধরে মোদীর বক্তব্য খণ্ডন করল তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী শুধু বললেন,সভাস্থলে দুর্ঘটনায় যাঁরা জখম, তিনি তাঁদের নিয়ে উদ্বিগ্ন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৮ ২২:৪৮

তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এর জবাবটা মুখ্যমন্ত্রীই দেবেন, মনে করেছিল রাজনৈতিক শিবিরের বড় অংশই। জবাবটা এল প্রেস বিবৃতি এবং টুইটের মাধ্যমে। সে বিবৃতি প্রকাশ করা হল পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং ডেরেক ও’ব্রায়েনের নামে। ইস্যু ধরে ধরে মোদীর বক্তব্য খণ্ডন করল তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী শুধু বললেন,সভাস্থলে দুর্ঘটনায় যাঁরা জখম, তিনি তাঁদের নিয়ে উদ্বিগ্ন।

পথের দু’ধারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তৃণমূলের তরফে প্রকাশিত বিবৃতিতে সে প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘‘বিজেপি নেতা দাবি করেছেন, আসার সময়ে তিনি শ’য়ে শ’য়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পোস্টার দেখেছেন। এ বছর ২১ জুলাই অর্থাৎ শহিদ দিবসের ২৫ বছর পূর্ণ হবে। সেই উপলক্ষে সারা রাজ্য জুড়ে এই রকম অনেক পোস্টার, ব্যানার লাগানো হয়েছে।’’ তাঁকে স্বাগত জানানোর জন্য সে সব লাগানো হয়েছে বলে মন্তব্য করে নরেন্দ্র মোদী মিথ্যাচার করেছেন— তৃণমূলের ইঙ্গিত এমনই। মমতা বন্দ্যোপা‌ধ্যায়ের ছবি সম্বলিত অনেক ব্যানারই বিজেপি কর্মীরা নষ্ট করার চেষ্টা করেছেন বলেও তৃণমূলের অভিযোগ।

এ দিনের সমাবেশের ভিড়কেও গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। বাংলার শাসক দলের তরফ থেকে জারি করা বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, ‘‘এই সমাবেশে বেশিরভাগ জনতাই এসেছিলেন পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলি থেকে। যেমন ঝাড়খণ্ড ও ওডিশা। এমনকি, পটনার গাড়িও দেখা গিয়েছে।’’ তৃণমূলের তরফ থেকে আরও বলা হয়েছে যে, ‘‘স্থানীয় মানুষ দূরের কথা, কোনও কৃষকও ওই সমাবেশে ছিল বলে মনে হয় না।’’ বাইরে থেকে লোক আনা হয়েছে বলে দাবি করে তৃণমূলের প্রশ্ন, ‘‘এর জন্য কত টাকা খরচ করা হয়েছে? কোন কর্পোরেটদের টাকা? নিট ফল কী? এতে কত জন কৃষক লাভবান হলেন?’’

আরও পড়ুন: তীব্র সিন্ডিকেট-খোঁচা, নাম করে কটাক্ষ মমতাকে, সরকার ফেলার ডাক মোদীর

নরেন্দ্র মোদীর এ দিনের কর্মসূচির নাম ছিল কৃষক কল্যাণ সমাবেশ। কেন্দ্রীয় সরকার বেশ কিছু শস্যের সহায়ক মূল্য সম্প্রতি বাড়িয়েছে। তার প্রেক্ষিতে মোদীকে অভিনন্দন জানানোর জন্যই বিজেপির তরফে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। তৃণমূল এই সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে থেকেই বলছিল, মোদীর সরকার কৃষকদের জন্য আসলে কিছুই করেনি। সভা শেষ হওয়ার পরে তৃণমূল বলছে, কৃষকদের উন্নতির কথা বিজেপির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতেই ছিল। কিন্তু গত চার বছরে মোদীর সরকার কৃষকদের জন্য উল্লেখযোগ্য কিছুই করতে পারেনি বলে তৃণমূলের দাবি। দলের তরফে প্রকাশিত বিবৃতিতে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, ‘‘কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার জন্য উনি কী পদক্ষেপ নেবেন? অনেক বছর আগে ওঁদের ইস্তেহারে এই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখনও তা বাস্তবায়িত করা হয়নি।’’ বিবৃতিতে আরও লেখা হয়েছে, ‘‘বিজেপি নেতাকে বাংলার কিছু পরিসংখ্যান জানাতে চাই। সাত বছরে বাংলায় কৃষকদের আয় তিন গুণেরও বেশি বেড়েছে। ২০১১ সালে তাঁদের গড় আয় ছিল ৯১ হাজার টাকা। গত বছর তা বেড়ে হয়েছে ২ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা।’’

আরও পড়ুন: মোদীর সভায় যেতে না পেরে পুলিশকে ফেলে পেটালেন বিজেপি কর্মীরা

নরেন্দ্র মোদীর সবচেয়ে তীক্ষ্ণ আক্রমণ অবশ্য ছিল সিন্ডিকেট প্রশ্নে। পার্থ ও ডেরেকর তরফে প্রকাশিত বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, ‘‘সিন্ডিকেটের বিষয়ে বিজেপি নেতাদের চেয়ে ভাল আর কে জানে? আপনার দল হল ধর্মীয় কট্টরবাদ বাড়িয়ে তোলার সিন্ডিকেট। আপনার দল হল ধর্মোন্মাদদের সিন্ডিকেট। আপনার দল হল গণপ্রহারের সিন্ডিকেট। আপনার দল হল পীড়নের সিন্ডিকেট। আপনার দল হল এজেন্সিগুলোর সিন্ডিকেট। আপনার দল হল এমন একটা সিন্ডিকেট, যারা নোটবন্দি করেছিল। আপনার দল হল দুর্নীতির সিন্ডিকেট।’’ বিবৃতিতে তৃণমূলের হুঁশিয়ারি, ‘‘আগুন নিয়ে খেলা উচিত নয় বিজেপি নেতাদের।’’ কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলোকে দিয়ে যতই হেনস্থা করার চেষ্টা হোক, তৃণমূল কখনওই মাথা নোওয়াবে না— জানিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়রা।

আর যাঁর কাছ থেকে ‘জবাব’ আসবে বলে আশা করা হয়েছিল, সেই মুখ্যমন্ত্রী শুধু বলেন, “আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন। রাজ্য সরকার সবরকম সাহায্য করবে। রাজনীতি থাকবে। কিন্তু, মানবিকতা আমার কাছে আগে। সেই কারণেই কোনও মন্তব্য করব না। দল তো যা জানানোর জানিয়েছে!” পাশাপাশি, পুলিশ আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা সম্পর্কেও কিছুই বললেন না মুখ্যমন্ত্রী।

Narendra Modi Mamata Banerjee মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নরেন্দ্র মোদী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy