Advertisement
E-Paper

প্রার্থী আপ্যায়নে কাড়াকাড়ি, অন্য কাজিয়া বালিতে

দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা হতেই দিকে দিকে নেতা-কর্মীদের ক্ষোভের মুখে তৃণমূল। ব্যতিক্রম বালি। এবং সেই ব্যতিক্রমেই বালি দেখাচ্ছে কাজিয়ার অন্য মুখ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৬ ০৪:২২

দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা হতেই দিকে দিকে নেতা-কর্মীদের ক্ষোভের মুখে তৃণমূল। ব্যতিক্রম বালি। এবং সেই ব্যতিক্রমেই বালি দেখাচ্ছে কাজিয়ার অন্য মুখ। সেখানে প্রকাশ্যে অন্তত কোনও অসন্তোষের চিহ্ন নেই। বরং ঘোষিত নতুন প্রার্থীকে নিয়ে দলের বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে টানাটানি দেখে মনে হবে, ‘অল কোয়ায়েট অন দ্য বালি ফ্রন্ট’। বালিতে সবই শান্ত। কিন্তু নতুন প্রার্থী বৈশালী ডালমিয়াকে ঘিরে রবিবার দলের সব শিবিরে আগ্রহ ও আপ্যায়নের যে-আতিশয্য দেখা গেল, তাতে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেরই অন্য ধরনের প্রকাশ দেখছে রাজনৈতিক শিবির।

একদা লাল দুর্গ বালিতে প্রথম যিনি ঘাসফুল ফুটিয়েছিলেন, সেই সুলতান সিংহ এ বার তৃণমূলের টিকিট পাননি। তা সত্ত্বেও তাঁর অনুগামীরা প্রকাশ্যে কোনও ক্ষোভ-বিক্ষোভের রাস্তায় হাঁটেননি। বরং ভোট প্রচারের প্রথম রবিবারে বালির মাটিতে পা দিতেই নতুন প্রার্থীকে মেনে নেওয়ার প্রমাণ কে আগে কতটা দিতে পারে, তা নিয়ে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। প্রার্থীকে নিয়ে কে কতটা খুশি, তা দেখানোর জন্য প্রতিযোগিতা চলে কাউন্সিলর-নেতাদের মধ্যে। রাজনৈতিক শিবির বলছে, যুযুধান শিবিরগুলির মধ্যে এই প্রার্থী আপ্যায়ন-তৎপরতা তৃণমূলের গোষ্ঠী-কাজিয়ারই অভিনব রূপ।

ক্রিকেট-প্রশাসক জগমোহন ডালমিয়ার মেয়ে বৈশালী ডালমিয়া এ বার বালিতে শাসক দলের প্রার্থী। এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ বেলুড় মঠে পুজো দিতে আসার পরিকল্পনা ছিল বৈশালীদেবীর। জিটি রোড ধরে আসার সময় বেলুড় মঠের অদূরে প্রথমেই তাঁর পথ আটকান সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ কাউন্সিলর পল্টু বণিক। বেলুড় বাজার মোড়ে গাড়ি থেকে নেমে বৈশালীদেবী ওই কাউন্সিলরের আবদার মেনে কালীমন্দিরে পুজো দিতে ঢোকেন। তার পরে সেখান থেকে তাঁরা চলে যান বেলুড় মঠে। তত ক্ষণে অবশ্য প্রার্থী ‘হাইজ্যাক’-এর খবর পৌঁছে গিয়েছে তৃণমূলের হাওড়া জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী অরূপ রায়ের ঘনিষ্ঠ কাউন্সিলরদের কাছে। অরূপ-ঘনিষ্ঠ প্রাণকৃষ্ণ মজুমদার, বলরাম ভট্টাচার্য, বেবি জানা, চৈতালী বিশ্বাস, তপজিল আহমেদরাও পড়ি-কি-মরি করে ছুটে যান বেলুড় মঠে। সেখানে গিয়ে বৈশালীদেবীর সঙ্গে যোগ দেন ওই কাউন্সিলরেরা। পল্টুবাবুও হাল ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নন। তিনি তার পরেও প্রার্থীর সঙ্গে ছিলেন। জনা ৪০ কর্মী নিয়ে চলে বেলুড় মঠ দর্শন।

প্রার্থীকে নিয়ে টানাটানিতে পিছিয়ে থাকেনি তৃতীয় অর্থাৎ সুলতান-শিবিরও। বে‌লুড় মঠ থেকে বেরিয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য জিটি রোড ধরে কিছুটা এগোতেই ফের থমকাতে হয় ডালমিয়া-তনয়াকে। বালির বাদামতলায় তখন অপেক্ষা করছিলেন সুলতান-ঘনিষ্ঠ ভাস্করগোপাল চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গেরা। সুলতান এ বার টিকিট না-পাওয়ায় তাঁরা বিক্ষোভ দেখানোর রাস্তায় হাঁটেননি ঠিকই। তবে নতুন প্রার্থীকে হাইজ্যাক করার দৌড়ে নেমে পড়েছিলেন পুরো মাত্রায়।

বাদামতলায় দলীয় কার্যালয়ে কিছু ক্ষণ কাটিয়ে আরও কয়েকটি মন্দিরে পুজো দিয়ে, রাস্তায় হেঁটে কিছুটা প্রচার করে বাড়ির দিকে রওনা দেন বৈশালীদেবী। তাঁকে নিয়ে টানাটানি, হাইজ্যাকের প্রতিযোগিতা নিয়ে বা গোষ্ঠী-কাজিয়ার অভিনব প্রকাশ নিয়ে কিছু বলতে চাননি তিনি। শুধু বললেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর তৃণমূলের প্রতিনিধি হয়ে বালিতে এসেছি উন্নয়নের কাজ করতে। কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তো দেখিনি। সকলে তো স্বাগতই জানালেন।’’

candidate TMC conflict assambly
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy