বিজেপির 'রিসর্ট রাজনীতি' নিয়ে কটাক্ষ করলেন অভিষেক।
সোমবার সকালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন শুরুর অব্যবহিত পরে বিজেপির ‘রিসর্ট রাজনীতি’ নিয়ে কড়া কটাক্ষ করলেন তৃণমূলে অন্যতম শীর্ষনেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর তিনি যান বিধানসভায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিতে। বিজেপি অবশ্য অভিষেকের অভিযোগকে আমল দিতে চায়নি।
প্রসঙ্গত, সোমবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগের দিন রবিবার থেকে বিজেপি বিধায়কদের রাখা হয়েছিল নিউ টাউনের এক হোটেলে। গত বিধানসভা ভোটে বিজেপি জিতেছিল ৭৭টি আসনে। কিন্তু সাত বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় তাদের বিধায়কের সংখ্যা এখন ৭০। যদিও হোটেলে যাননি এক বিধায়ক। তিনি সাংসদ অর্জুন সিংহের পুত্র পবন সিংহ। অর্জুন সম্প্রতি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। ফলে রাজারহাটের শিবিরে তাঁর অনুপস্থিতি এমন জল্পনা জন্ম দিয়েছে যে, বিজেপির ৭০টি ভোট দ্রৌপদী মুর্মুর পক্ষে পড়বে কি না।
এই পরিস্থিতিতেই অভিষেক কটাক্ষ করেছেন, বাংলায় নিজের ‘ঘর’ বাঁচাতে গেরুয়া শিবির ‘রিসর্ট রাজনীতি’র আশ্রয় নিয়েছে। অভিষেকের কথায়, ‘যেমন কর্ম করবেন, তেমনই ফল পাবেন। আপনি যেমন করেছেন, তেমনই ফল আপনার প্রাপ্য। বিজেপিকে দেশের জনতার কাছে মাথা নত করতেই হবে। অন্যান্য রাজনৈতিক দলের বিধায়ককে বন্দি করার পরিবর্তে বিজেপির রিসর্ট পলিটিক্স তাদের উপরেই কার্যকর হয়েছে দেখে হাস্যকর লাগছে! সত্যিই, বাংলা পথ দেখায়।’
রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যও বিজেপির ওই পদক্ষেপকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ওদের বিধায়কদের স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মতো দলবেঁধে, সাজিয়েগুজিয়ে নিয়ে গিয়ে ভোট দেওয়াচ্ছে। পাছে ক্রস ভোটিং হয়, তাই ওদের একসঙ্গে হোটেলে নিয়ে গিয়ে রেখেছে!’’
প্রসঙ্গত, দেশের রাজনীতিতে যখনই কোনও সরকার ভাঙার অভিযোগ ওঠে, তখনই বিজেপি ‘রিসর্ট রাজনীতি’র উপর নির্ভর করে বলে অভিযোগ করেন বিরোধীরা। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রে সরকার বদলের ঘটনায় শিবসেনা নেতা একনাথ শিন্ডে যখন ‘বিদ্রোহী’ বিধায়কদের নিয়ে প্রথমে অসম এবং পরে গোয়ায় ঘাঁটি গেড়েছিলেন, তখন অভিযোগের আঙুল উঠেছিল বিজেপির দিকেই।
তবে অভিষেকের অভিযোগকে বিশেষ আমল দিতে নারাজ বিজেপি পরিষদীয় দল। গোঘাটের প্রবীণ বিজেপি বিধায়ক বিশ্বনাথ কারক বলেন, ‘‘আমাদের দলের বেশির ভাগ বিধায়ক নতুন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে তাই তাঁদের অনেক কিছু শেখানো-পড়ানোর দরকার ছিল। তাই এক দিন আগে সবাইকে এক হোটেলে রেখে রাষ্ট্রপতি ভোট সংক্রান্ত যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। অভিষেকবাবু যা বলছেন, তা সত্য নয়।’’ দক্ষিণ কাঁথির বিজেপি বিধায়ক অরূপ দাস বলেন, ‘‘অভিষেকবাবুরা আগে নিজেদের দল সামলান! তার পর না হয় আমাদের দল নিয়ে কথা বলবেন।’’ আসানসোলের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল দাবি করেন, ‘‘পবন সিংহ হোটেলে না-এলেও উনি আমাদের সঙ্গেই আছেন। দ্রৌপদী মুর্মু আমাদের ৭০টা ভোটই পাবেন।’’ ভোটগণনা ২১ জুলাই। সেদিনই স্পষ্ট হয়ে যাবে, দ্রৌপদী বাংলা থেকে কত ভোট পেলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy