Advertisement
২৬ অক্টোবর ২০২৪
Britannia Industries

রাজ্যে ব্রিটানিয়া ছিল, আছে, থাকবে! বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে দাবি অমিত মিত্রের

সোমবারই ব্রিটানিয়া সংস্থা ঘোষণা করেছিল, কলকাতার তারাতলার কারখানাটি বন্ধ করছে তারা। তার পরেই সরব হয় বিরোধীরা। বিজেপি অভিযোগ করে, রাজ্যে উন্নয়নের ‘ভাটা’ এসেছে।

অমিত মিত্র।

অমিত মিত্র। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২৪ ২১:৩৮
Share: Save:

পশ্চিমবঙ্গে আগের মতোই বিস্কুট তৈরি করে যাবে ব্রিটানিয়া। এই রাজ্যের প্রতি তারা ‘প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’। বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে এমনটাই দাবি করলেন রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। তাঁর দাবি, এ কথা তাঁকে ফোন করে জানিয়েছেন খোদ ব্রিটানিয়া সংস্থার এগজ়িকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর বরুণ বেরি।

সোমবারই ব্রিটানিয়া সংস্থা ঘোষণা করেছিল, কলকাতার তারাতলার কারখানাটি বন্ধ করছে তারা। তার পরেই সরব হয় বিরোধীরা। বিজেপি অভিযোগ করে, রাজ্যে উন্নয়নের ‘ভাটা’ এসেছে। সেই অভিযোগ উড়িয়ে অমিত জানালেন, বিদেশ থেকে ফিরে রাজ্য সরকারের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন ওই সংস্থার কর্তারা। মঙ্গলবার অমিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘ব্রিটানিয়ার এগজ়িকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর বরুণ বিদেশ থেকে ফোন করেছেন। তিনি বলেছেন, সংস্থা হিসাবে ব্রিটানিয়া পশ্চিমবঙ্গের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এখন ব্রিটানিয়া পশ্চিমবঙ্গে ১,০০০ থেকে ১,২০০ কোটি টাকার বিস্কুট তৈরি করছে। সেই উৎপাদন অব্যাহত থাকবে।’’ অমিতের কথায়, ‘‘বরুণ জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গ তাদের বৃহত্তম বাজার। তারা ব্রিটানিয়ার ব্যবসাকে আরও শক্তিশালী করতে চায় রাজ্যে। দেশে তাদের নথিভুক্ত দফতর কলকাতায়। সেখানেই থাকবে দফতর। সংস্থার শেয়ার হোল্ডারদের বৈঠক হয় কলকাতায়, সেখানেই হবে। বিদেশ থেকে তিনি ফিরলে পুরো দল-সহ এসে দেখা করবে এবং আলোচনা করবে, কী ভাবে সংস্থার ব্যবসা এখানে আরও শক্তিশালী করা যায়।’’ অমিত জানিয়েছেন, ফোন করে বরুণ নিজে জানিয়েছেন এ সব কথা। তিনি বিদেশ থেকে ফিরলেই হবে বৈঠক।

বালুরঘাটের বিজেপি বিধায়ক তথা অর্থনীতিবিদ অশোক লাহিড়ী আঙুল তুলেছেন রাজ্যের তৃণমূল সরকারের দিকে। তিনি বলেন, ‘‘দুর্ভাগ্যবশত, কলকাতার তারাতলায় স্বাধীনতার সময় থেকে যে ব্রিটানিয়া বিস্কুট তৈরি হত, তা আর তৈরি হব না। তারাতলায় যে শিল্পের কবরস্থান রয়েছে, সেখানে আর একটি কবর পোঁতা হবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, পশ্চিমবঙ্গে উন্নয়নের জোয়ার এসেছে। বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনে উদ্যোগপতিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। কোটি টাকার বিনিয়োগের চুক্তিতে স্বাক্ষর হয়। কোথায় বিনিয়োগ? শিল্পপতিরা কি এখানে উন্নয়ন দেখতে পাচ্ছেন না? এটাও কি কেন্দ্রের বঞ্চনা, নাকি মমতার বিভ্রান্তি? তিনি উন্নয়নের জোয়ার দেখছেন, ভাটা এসেছে।’’

মঙ্গলবার ব্রিটানিয়া সংস্থার দফতরে যাওয়ার চেষ্টা করেন আকিব গুলজ়ার-সহ কংগ্রেসের কয়েক জন কর্মী। তাঁদের দাবি, কারখানায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আকিবের কথায়, ‘‘আমরা বলতে গিয়েছিলাম, দয়া করে কারখানা তুলে নেবেন না। কেন রাজ্য সরকার, কেন কেন্দ্র মিটিয়ে দিচ্ছে না? এ সবের নেপথ্যে চক্রান্ত রয়েছে। সাধারণ মানুষ তার শিকার। বৃহত্তর আন্দোলনে নামব আমরা।’’

ব্রিটানিয়া সংস্থার প্রথম কারখানাটি তৈরি হয় মুম্বইয়ে। এর পরেই কলকাতার তারাতলার কারখানাটি চালু হয়। সম্প্রতি সংস্থার পক্ষে স্টক এক্সচেঞ্জকে কারখানা বন্ধের কথা জানানো হয়েছে। এটাও জানানো হয়েছে যে, সংস্থায় এখন কাজ করেন ১৫০ জন কর্মী। তাঁরা সকলেই স্বেচ্ছাবসর প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। এই কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সংস্থার আয় বা বাংলার রাজস্বের ক্ষেত্রে বিশেষ প্রভাব ফেলবে না। এটাই প্রথম নয়। এর আগে মুম্বই এবং চেন্নাইয়ের পুরনো কারখানাও বন্ধ করেছে ব্রিটানিয়া। এ বার কলকাতারটি বন্ধ হচ্ছে। কেন এই কারখানাটি বন্ধ করা হচ্ছে সে বিষয়ে সংস্থার পক্ষে স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি। তবে সূত্রের দাবি, পুরনো এই কারখানাটি এখন চালিয়ে যাওয়া আর আর্থিক ভাবে লাভজনক নয় সংস্থার পক্ষে। প্রসঙ্গত, তারাতলা ছাড়াও বাংলায় আরও একটি উৎপাদন কেন্দ্র রয়েছে ব্রিটানিয়ার। হুগলির ডানকুনিতে সেই কারখানাটি অবশ্য সংস্থার নিজস্ব নয়। অন্যের মালিকানাধীন কারখানায় চুক্তিভিত্তিক উৎপাদন হয়। সেটি এখনও চালু থাকছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Britannia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE