Advertisement
E-Paper

তৃণমূল নেতার গাড়িতে হামলা রাতের মুরারইয়ে

দলের কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে দুষ্কৃতীদের হামলার শিকার হলেন বীরভূম জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা দলের রামপুরহাট মহকুমা পর্যবেক্ষক ত্রিদিব ভট্টাচার্য। তিনি তেমন চোট-আঘাত না পেলেও, তাঁর গাড়ির চালক উত্তম সরকারকে লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:১৪

দলের কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে দুষ্কৃতীদের হামলার শিকার হলেন বীরভূম জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা দলের রামপুরহাট মহকুমা পর্যবেক্ষক ত্রিদিব ভট্টাচার্য। তিনি তেমন চোট-আঘাত না পেলেও, তাঁর গাড়ির চালক উত্তম সরকারকে লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়েছে। দু’জনকেই অবশ্য প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। শুক্রবার গভীর রাতে মুরারই–ঘুসকিরা বাইপাস রাস্তায় ঘটনাটি ঘটে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ এখনও পর্যন্ত পাঁচ জনকে আটক করেছে।

রামপুরহাট থানার বড়শাল গ্রামের বাসিন্দা ত্রিদিববাবু মুরারই থানায় লিখিত অভিযোগে দাবি করেছেন, শুক্রবার মুরারই ১ ব্লকের সভা শেষে মুরারই ২ ব্লকে জেলা সভাপতির আগামী সভার প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করে বাড়ি ফিরছিলেন। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, সভার কাজ নিয়ে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের সঙ্গে আলোচনা সেরে রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ বাড়ি ফেরার জন্য রওনা দেন। মুরারই-ঘুসকিরা বাইপাস রাস্তায় মুরারই ও ঘুসকিরার মাঝে একটা মাঠের কাছে সাত-আট জন দুষ্কৃতী ধানের বোঝা ফেলে রাস্তা আটকায়। প্রত্যেকের মুখ চাদর এবং গামছা দিয়ে ঢাকা ছিল। প্রত্যেকেরই বয়স ২০ থেকে ৩০ বছর। ঝরঝরে বাংলায় কথা বলছিল। এক জনের হাতে ছিল বোমা। অন্য এক জনের হাতে ছিল ভোজালি জাতীয় অস্ত্র। বাকিদের সকলের হাতে লাঠি ছিল।

ত্রিদিববাবুর কথায়, ‘‘গাড়ি আটকে প্রথমেই লাঠি দিয়ে চালকের পাশে থাকা ডান দিকের কাঁচ ভাঙচুর করে দুষ্কৃতীরা। গাড়ি থেকে নেমে যেতে বলে। নামতে দেরি হচ্ছে দেখে গাড়ির সামনের কাঁচও লাঠি দিয়ে গুড়িয়ে দেয়। পরে বোমা এবং ভোজালির ভয় দেখিয়ে গাড়ি থেকে নামাতেই চালককে লাঠি দিয়ে মারধর করে। ছিনিয়ে নেয় মোবাইল, সঙ্গে থাকা পাঁচ হাজার টাকা এমনকি চালকের আংটিটুকুও। শেষে গাড়ির সিটের তলা, টুল-বক্স হাতড়েও কিছু না পেয়ে আধ ঘণ্টা পরে ছেড়ে দেয়।’’ অপ্রত্যাশিত ঘটনার প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে তৃণমূলের রামপুরহাট মহকুমা পর্যবেক্ষক সোজা চলে যান মুরারই থানায়। তৃণমূল সূত্রের খবর, তখনই পথে দেখা হয়ে যায় মুরারইয়ের তৃণমূল নেতা আসরাফ আলির সঙ্গে। পরে আসরাফ আলির মাধ্যমে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ এবং জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি রাণা সিংহকে সমস্ত ঘটনা ফোনে জানানো হয়। মুরারই থানায় লিখিত অভিযোগ করার পরে পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করে।

রাতেই খবর পেয়ে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ মুরারই থানার কলহপুরের বাড়ি থেকে মুরারই থানায় চলে আসেন। মুরারই থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। মুরারই থানার ঘুসকিরা থেকে এক জনকে এবং পানিয়ারা–মহিল্লাপুর গ্রাম থেকে দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ। তিন জনেই পুলিশের খাতায় নাম থাকা দাগী আসামি বলে এলাকায় পরিচিত। ঘটনার সঙ্গে যুক্ত সন্দেহে দু’জন মাঠ পাহারাদারকেও আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ।

কিন্তু, কারা এমন করল?

ত্রিদিববাবুর মনে হয়েছে, এটা দুষ্কৃতীদেরই কাজ। পুলিশের একটি অংশের প্রাথমিক ধারনাও তাই। পুলিশ সূত্রের খবর, গত এক বছরে ওই রাস্তায় রাতের বেলায় অন্তত চার বার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। কোনও বার কেড়ে নেওয়া হয়েছে মোটরবাইক, তো কোনওবার মোবাইল। পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘মনে হচ্ছে তৃণমূলের নেতার গাড়ি আলাদা ভাবে বুঝতে পারেনি ওই দুষ্কৃতীরা।’’ ওই ঘটনার পিছনে রাজনৈতিক যোগ নেই বলে মনে করেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলও।

এই ঘটনা ফের বেআব্রু করেছে রাতের মুরারইয়ের নিরাপত্তা। উঠেছে পুলিশের নিয়মিত টহলের দাবিও। গোটা ব্যাপারটি গুরুত্ব দিয়ে দেখার আশ্বাস মিলেছে পুলিশের তরফেও।

TMC Attack Miscreants ত্রিদিব ভট্টাচার্য
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy