আরজি-কর কাণ্ডের বিচার চেয়ে পথে নেমেছে নাগরিক সমাজ। বিচারের দাবিতে ধর্নায় বসেছে বিজেপি। একই ভাবে চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান দিয়ে রাস্তায় রাস্তায় মিছিল করছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। এই অবস্থার জন্য রাজ্য প্রশাসনকেই কাঠগড়ায় তুললেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। রাজ্যের একটি ঘটনার বিচার চেয়ে শাসকদলের পথে নামা যে ‘বিড়ম্বনার’, তারই ইঙ্গিত দিয়েছেন কুণাল। যদিও তৃণমূল নেতার বার্তার প্রেক্ষিতে বিজেপি খোঁচা দিয়ে বলেছে, কুণালের প্রশ্নের জবাব সবচেয়ে ভাল দিতে পারবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ, মমতাই রাজ্য প্রশাসনের মুখ। মমতাই শাসকদলের প্রধান।
আরজি-কর কাণ্ডের প্রেক্ষিতে ধারাবাহিক ভাবে বিবৃতি দিচ্ছেন কুণাল। রবিবার তিনি বলেন, ‘‘প্রশাসন এমন কাজ করবে কেন যে অবস্থা সামাল দিতে শাসকদলকেও ‘বিচার চাই’ বলে কর্মসূচি নিতে হবে? তা-ও দলের সবাই সমান ভাবে নামে না।’’ আরজি করের ঘটনার প্রেক্ষিতে নাগরিক আন্দোলনকেও সমর্থন করেছেন তিনি। তবে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিবাদ-আন্দোলনকে কটাক্ষ করেন কুণাল। তৃণমূল নেতার দাবি, বিরোধীরা ‘কুরাজনীতি’ করছেন। এটাই তাঁর অবস্থান বলে জানিয়েছেন। আরজি কর নিয়ে দীর্ঘ বার্তায় কুণাল লিখেছেন, ‘‘নাগরিকদের মিছিল, জুনিয়র ডাক্তারদের মূল দাবি আমিও সকলের মতো সমর্থন করি। বিচার চাই।’’ তৃণমূল নেতার পরের লাইন ‘তাৎপর্যপূর্ণ’। তিনি লেখেন, ‘‘প্রশাসনের কিছু পদক্ষেপকে মানুষ ভুল বুঝেছেন। সেখান থেকে বিরক্তি, অবিশ্বাসের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে বলেই নাগরিকদের পথে নামতে হচ্ছে। নির্দিষ্ট কিছু পদক্ষেপে এই পরিস্থিতি সামলানোর দায়িত্বও সরকারের।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘প্রশাসন এমন কোনও কাজ করবে কেন যে অবস্থা সামলাতে শাসকদলকেও ‘বিচার চাই’ বলে কর্মসূচি নিতে হবে?’’
নাগরিক আন্দোলনের বিরোধিতা নয়; বিরোধীদের কুরাজনীতি বিরোধিতা করছি এবং করব। আবারও স্পষ্ট করছি অবস্থান। pic.twitter.com/N6xIsXy6vK
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) September 1, 2024
কুণাল জানিয়েছেন, দলের আত্মসমালোচনা প্রয়োজন। নাগরিকদের আন্দোলনের বিরোধিতাও উচিত নয়। তবে নাগরিকদের আবেগকে কাজে লাগিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি ‘অরাজক পরিস্থিতির’ সৃষ্টি করতে চাইছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন:
কুণালের এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে রাজ্য বিজেপির মুখ্য মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলছেন, তৃণমূল নেতার কয়েকটি কথায় তাঁর সমর্থন রয়েছে। কিন্তু কুণাল তাঁর প্রশ্নের জবাব যথাযথ ভাবে পেতে পারেন এক জনের কাছেই। তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শমীকের কথায়, ‘‘তিনিই পুলিশমন্ত্রী, তিনিই স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তাই প্রশাসন নিয়ে যে কথাগুলো কুণালবাবু বলছেন, তার উত্তর সবচেয়ে ভাল দিতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই।’’ তিনি কটাক্ষ করে বলেন, কুণাল যেটা বলেছেন, সেটা তৃণমূল তথা রাজ্য সরকারের পরিস্থিতির কথা। খোঁচা দিয়ে শমীক এ-ও বলেন, ‘‘কুণালবাবু কি ‘দিদিকে বলো’র নম্বরটা হারিয়ে ফেলেছেন? ফোনটা সেখানে না-করে সমাজমাধ্যমে এ সব লিখছেন কেন? জবাব পাওয়ার হলে তো ওখান থেকেই পাবেন।’’