Advertisement
E-Paper

ভাঙা সিপিএম অফিস গড়তে প্রস্তাব শাসকের

ভোটের ফল বেরোনোর পরে শান্তি বজায় রাখতে বিরোধীদের সঙ্গে তৃণমূলের বৈঠক—হয়েছে। শান্তি রক্ষার জন্য তৃণমূলের লিফলেট বিলি—শোনা গিয়েছে তা-ও। তা বলে বিরোধীদের ভাঙচুর হওয়া পার্টি অফিস নতুন করে গড়ে দেওয়ার জন্য অর্থ সাহায্যের প্রতিশ্রুতি!

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৬ ০৩:৩২
ভাঙচুর হওয়া সিপিএম পার্টি অফিস।

ভাঙচুর হওয়া সিপিএম পার্টি অফিস।

ভোটের ফল বেরোনোর পরে শান্তি বজায় রাখতে বিরোধীদের সঙ্গে তৃণমূলের বৈঠক—হয়েছে। শান্তি রক্ষার জন্য তৃণমূলের লিফলেট বিলি—শোনা গিয়েছে তা-ও। তা বলে বিরোধীদের ভাঙচুর হওয়া পার্টি অফিস নতুন করে গড়ে দেওয়ার জন্য অর্থ সাহায্যের প্রতিশ্রুতি!

বর্ধমানের কালনায় এমনই বার্তা দিচ্ছেন এক তৃণমূল নেতা। কালনা ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি প্রণব রায়।

কালনা বিধানসভা কেন্দ্রের বড় অংশ পড়ে কালনা ২ ব্লকে। বছর তিনেক এই এলাকায় বড় রাজনৈতিক গোলমাল হয়নি। ভোটের আগে-পরেও এলাকা ছিল তুলনায় শান্ত। কিন্তু ফল বেরোতেই, গত শুক্রবার দুপুরে কুলটিবাজারে সিপিএমের শাখা অফিসে হামলা হয়।

সিপিএমের অভিযোগ, শতাধিক তৃণমূল কর্মী-সমর্থক পার্টি অফিসের জিনিসপত্রে আগুন লাগায়, ভাঙচুর করে। পুলিশে অভিযোগ হয়। তদন্ত চলছে। এরই মধ্যে সোমবার তৃণমূল নেতা প্রণববাবু দলের সিঙ্গেরকোন কার্যালয়ে ঘোষণা করেন, সিপিএম চাইলে ওই পার্টি অফিস আবার আগের অবস্থায় ফেরানোর জন্য অর্থ সাহায্য করতে চান দলের তরফে।

প্রস্তাব পেয়ে আকাশ থেকে পড়েন সিপিএমের কালনা জোনাল কমিটির সম্পাদক সুকুল সিকদার। তাঁর কথায়, ‘‘ওঁরা লিখিত আকারে প্রস্তাব পাঠালে ভেবে দেখতে হবে। প্রস্তাব মানা হবে কি না, সে সিদ্ধান্ত হবে দলের বৈঠকে।’’

তৃণমূলের লোকেরাই যেখানে ভাঙচুরে অভিযুক্ত, সেখানে এ ধরনের সাহায্য করতে চাইলে অভিযোগকেই মান্যতা দেওয়া হয় না? প্রণববাবুর দাবি, ‘‘বিশ্বাস করি না, তৃণমূলের কেউ এমন করতে পারে। এ ধরনের উন্মত্ত আচরণ দল সমর্থন করে না। তাই ওই অফিসটি সারিয়ে দিতে চাই।’’ দাবির পক্ষে তাঁর যুক্তি, ‘‘গত বার কালনায় জিতেছিলাম ১২ হাজার ভোটে। এ বার জিতেছি ২৫ হাজারেরও বেশি ভোটে। আমাদের অভিজ্ঞতা, শান্তি বজায় রাখতে পারলে মানুষ পাশে থাকেন। শান্তি রাখার কৃতিত্ব কিন্তু শাসক দলই পায়।’’

তৃণমূল নেতা প্রণব রায়।—নিজস্ব চিত্র

ভোটের ফল বেরনোর পরে শান্তি বজায় রাখার এমনই চেষ্টা হয়েছে হাওড়ার আমতার কুমারিয়া গ্রামে। হিংসা এড়াতে সেখানে তৃণমূল ও বিরোধী দলের নেতারা বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেন, গ্রামে গোলমাল চলবে না। বীরভূমের ইলামবাজারে তৃণমূল লিফলেট বিলি করে দলের কর্মীদের সংযত থাকার বার্তা দিয়েছে। কিন্তু কালনায় তৃণমূলের এমন প্রস্তাব ‘আশ্চর্যজনক’ ঠেকছে সিপিএমের কাছে। দলের বর্ধমান জেলা সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিক বলেন, ‘‘জেলায় আমাদের শতাধিক অফিসে হামলা হয়েছে। এমন প্রস্তাব পাইনি। না আঁচালে বিশ্বাস নেই। দেখি, কী হয়।’’

জেলা তৃণমূলের একাংশের অনুমান, রাজনৈতিক ভাবে মোটামুটি শান্ত এই ব্লকে ভোটে বড় জয় পাওয়ার পরে হামলার ঘটনায় নাম খারাপ হয়েছে দলের। সেই ‘দাগ’ মুছতেই এমন ঘোষণা করা হয়েছে।

তাই কি? তৃণমূলের জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘প্রণব কোন পরিস্থিতিতে, কী করেছে জানি না। তবে ভাল উদ্যোগ।’’

এমন উদ্যোগ কি তৃণমূল জেলা স্তরেও নেবে? এ বার স্বপনবাবুর জবাব, ‘‘কালনা ২ ব্লকের পরিস্থিতি স্থানীয় নেতারাই ভাল বলতে পারবেন। তবে জেলা স্তরে দলের তরফে বৈঠক করে আমরা পুলিশকে জানিয়েছি, কোথাও রাজনৈতিক কারণে পরিস্থিতি তেতে গেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে।’’

cpm tmc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy