Advertisement
E-Paper

৩৫০ কোটি টাকার চিটফান্ড কেলেঙ্কারি: পালাতে গিয়ে ধরা পড়লেন তৃণমূল নেতার ছেলে, মিলল লক্ষ লক্ষ টাকার সোনা

প্রায় সাড়ে ৩৫০ কোটি টাকার চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ে অবশেষে গ্রেফতার হলেন আসানসোলের তৃণমূল নেতার ছেলে। পুলিশ সূত্রে খবর, তিনি পালানোর চেষ্টা করছিলেন। ঝাড়খণ্ডের দিকে যাচ্ছিলেন।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২৫ ১৯:২৪

—প্রতীকী চিত্র।

প্রায় সাড়ে ৩৫০ কোটি টাকার চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ে অবশেষে গ্রেফতার হলেন আসানসোলের তৃণমূল নেতার ছেলে তহসিন আহমেদ। পুলিশ সূত্রে খবর, তিনি পালানোর চেষ্টা করছিলেন। ঝাড়খণ্ডের দিকে যাচ্ছিলেন। সেই সময় ফাঁদ পেতে তাঁকে পাকড়াও করা হয়। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধারও হয়েছে প্রায় আড়াইশো গ্রাম সোনা, বর্তমানে যার মূল্য ৩১ লাখ টাকারও বেশি।

পুলিশ সূত্রে খবর, ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর চন্দ্রচূড় মোড়ের কাছ থেকে তহসিনকে গ্রেফতার করেছেন আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ। তদন্তকারীদের একটি সূত্রে দাবি, তহসিন বাস ধরে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। সম্ভবত ঝাড়খণ্ডে পালানোর পরিকল্পনা ছিল তাঁর। কিন্তু গোপন সূত্র মারফত খবর পেয়ে ফাঁদ পেতে তাঁকে পাকড়াও করা হয়েছে।

প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে পশ্চিম বর্ধমানে তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের প্রাক্তন সহ-সভাপতি শাকিল আহমেদের ছেলে তহসিন আহমেদের বিরুদ্ধে। শাসক তৃণমূলের অবশ্য দাবি, শাকিলের সঙ্গে এই মুহূর্তে দলের কোনও যোগাযোগ নেই। দলের সংখ্যালঘু সেলের জেলা সভাপতি মেহফুজুল হাসানের কথায়, ‘‘অভিযুক্ত তহসিন আহমেদের বাবা শাকিল আহমেদের সঙ্গে এখন দলের কোনও যোগাযোগ নেই। আগে উনি সংখ্যালঘু সেলের সহ-সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে উনি দলের কেউ নন।’’

বাম আমলে ফরওয়ার্ড ব্লকে ছিলেন শাকিল। কাউন্সিলরও হয়েছিলেন। রাজ্যে পালাবদলের পর তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। দলের গুরুত্বপূর্ণ কিছু পদেও ছিলেন। ছেলের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর শাকিলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁর ফোন বন্ধ। ফোন বন্ধ তহসিনেরও।

আসানসোলের রেলপাড়ার জাহাঙ্গির মহল্লার একাধিক বাসিন্দা তহসিনের বিরুদ্ধে তাঁদের সঞ্চয়ের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলেছেন। তাঁদের অভিযোগ, বেশি রিটার্নের লোভ দেখিয়ে প্রতারণা করেছেন তহসিন। মাসে মাসে মোটা অঙ্কের সুদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। প্রথমে দিকে বিনিয়োগকারীরা লাভবান হলেও, পরে অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকা বন্ধ হয়ে যায়। এর পর টাকা ফেরতের দাবিতে গত বুধবার তহসিনের বাড়ির সামনে বিক্ষোভও দেখিয়েছিলেন বিনিয়োগকারীদের একাংশ।

অবসরপ্রাপ্ত এক বিএসএফ অফিসার বলেন, ‘‘প্রথমে ৩ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছিলাম। ভাল রিটার্ন পেয়ে আরও টাকা বিনিয়োগ করি। সব মিলিয়ে প্রায় ৪১ লক্ষ টাকা দিয়েছি। কিন্তু এখন আর কোনও টাকা পাচ্ছি না। অনেকেই আমার কথা শুনে এই প্রকল্পে টাকা দিয়েছিলেন। এখন সকলেরই টাকা আটকে গিয়েছে। আমাদের ধারণা, প্রায় ৪৫০ কোটি টাকার বড় আর্থিক কেলেঙ্কারি হয়েছে।” ওই বিএসএফ অফিসারের দাবি, মোট সাত জন জড়িত। প্রায় আড়াই হাজার বিনিয়োগকারী প্রতারিত হয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি আসানসোল উত্তরের বিধায়ক তথা রাজ্যের আইন ও শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকের সঙ্গে দেখাও করেছেন। বিএসএফ অফিসারের দাবি, মন্ত্রী বলেছেন, প্রশাসন আইনগত ভাবে ব্যবস্থা নেবে।

একই ভাবে, মহিশীলা কলোনির বটতলা এলাকার বাসিন্দা মৌটুসি দত্ত বলেন, ‘‘আমি বেকার। সোনার গয়না বন্ধক রেখে ২০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছিলাম। কয়েক মাস সুদ পেয়েছিলাম। তার পর হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। এখন টাকা চাইতে গেলে ধাক্কাধাক্কি করা হচ্ছে। আমি আসানসোল উত্তর থানায় অভিযোগ দায়ের করি।’’

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। তহসিন আহমেদ এবং তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।

Chitfund Fraud
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy