Advertisement
E-Paper

রঞ্জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হয়নি, প্রশ্ন দলে

ঘোঘোমালি বাজারে ব্যবসায়ীদের মেরে রক্ত ঝরানোর ঘটনায় অভিযুক্ত কাউন্সিলর রঞ্জন শীলশর্মাকে স্রেফ সতর্ক করেই দল দায় সেরেছে বলে অভিযোগ উঠল তৃণমূলের অন্দরেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৫ ০২:৫৬
দলীয় বৈঠক সেরে বেরোচ্ছেন তৃণমূল কাউন্সিলর রঞ্জন শীলশর্মা। শুক্রবার বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।

দলীয় বৈঠক সেরে বেরোচ্ছেন তৃণমূল কাউন্সিলর রঞ্জন শীলশর্মা। শুক্রবার বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।

ঘোঘোমালি বাজারে ব্যবসায়ীদের মেরে রক্ত ঝরানোর ঘটনায় অভিযুক্ত কাউন্সিলর রঞ্জন শীলশর্মাকে স্রেফ সতর্ক করেই দল দায় সেরেছে বলে অভিযোগ উঠল তৃণমূলের অন্দরেই।

তৃণমূল সূত্রে খবর, শুক্রবার শিলিগুড়ির সেবক রোডে তৃণমূলের জেলা অফিসে আয়োজিত বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো হই-হট্টগোল হয়। সেখানে রঞ্জনবাবুর কাছে গোটা ঘটনার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। রঞ্জনবাবুর যুক্তি শোনার পরে দলের জেলা স্তরের নেতাদের প্রায় অনেকেই জানিয়ে দেন, ঘোঘোমালির ঘটনায় কোনও দায় দল নেবে না।

দলের একাংশের দাবি, বারবার আন্দোলনের নামে গোলমাল বাঁধিয়ে দেওয়ার ঘটনায় শুধু সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়ার ফলে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। নীচুতলায় ক্ষোভও বাড়ছে। সে জন্য তাঁরা কড়া পদক্ষেপের পক্ষে মত দেন। কিন্তু, জেলা নেতাদের আরেকটি অংশ অবশ্য রঞ্জনবাবুর পাশে দাঁড়ান। এরপরেই বৈঠকে উপস্থিতদের একাংশ দল শুধু দায়সারা আচরণ করছে বলে অভিযোগে সরব হন।

এই অবস্থায়, পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রদেশ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জেলা নেতৃত্বকে ঘোষণা করতে হয়, মারপিটের যে মামলা হয়েছে তা রঞ্জনবাবুকে আইনের পথে মোকাবিলা করতে হবে। সেই সঙ্গে প্রদেশ নেতা তথা দার্জিলিং জেলার পর্যবেক্ষক মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের নাম করে রঞ্জনবাবুকে সতর্ক করেন জেলা নেতৃত্ব। তখনই বৈঠকে ঘোষণা করা হয়, আগামী ২৩ এবং ২৪ ডিসেম্বর অরূপবাবু শিলিগুড়িতে বৈঠক করবেন।

তৃণমূলের অন্দরের খবর, জেলা সভাপতি বৈঠকে জানিয়েছেন, আগামী দিনে দলকে না জানিয়ে রঞ্জনবাবুকে কোনও আন্দোলনে নামতে নিষেধ করা হয়েছে। এটাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, দলের সকলকেই কোথাও কোনও আন্দোলনে নামার আগে জেলা ও প্রদেশ স্তরের অনুমতি নিতে হবে। তাতেও অবশ্য পরিস্থিতি শান্ত হতে অনেক সময় লাগে বলেতৃণমূল সূ্ত্রে জানা গিয়েছে। তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টি দল নজরে রাখছে। আমরা আইনি বিষয়ে কোনও হস্তক্ষেপ করব না। আইনি প্রক্রিয়ায় আমাদের আস্থা রয়েছে।’’

রঞ্জনকে আন্দোলনে নামার আগে দল জানানোর জন্য রঞ্জন শীলশর্মাকে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সেই প্রসঙ্গে জেলা সভাপতি বলেন, ‘‘দলের বৈঠকে আন্দোলনের রূপরেখা নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। তা একেবারেই দলীয় ব্যাপার। সেটা নিয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়। কবে কী আন্দোলন হবে তা যথাসময়ে জানিয়ে দেওয়া হবে।’’

দল সূত্রের খবর, গত মঙ্গলবার ঘোঘোমালি বাজারে ব্যবসায়ী সমিতির বিরুদ্ধে আর্থিক লেনদেনে গোলমালের অভিযোগ তুলে পথে নামার ব্যাপারে দলকে আগাম কিছুই জানাননি রঞ্জনবাবু। ব্যবসায়ী সমিতির অফিসে হামলা, মারধর, রক্তারক্তির ঘটনার প্রতিবাদে ঘোঘোমালিতে বাজার বন্ধ হয়ে যায়। পর দিন এলাকায় ব্যবসায়ীদের মিছিলে অংশ নেন সাধারণ বাসিন্দারাও। চাপের মুখে পড়ে ওই তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা দায়ের করে। হামলা এবং ভাঙচুরের মামলায় জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে আত্মসর্মপণ করে এ দিনই রঞ্জনবাবু জামিন পেয়েছেন। জামিন নিয়ে জলপাইগুড়ি থেকে ফিরে শিলিগুড়িতে দলের বৈঠকে আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য রাখেন রঞ্জনবাবু। দলীয় সূত্রের খবর, শুক্রবারের বৈঠকে রঞ্জনবাবু দাবি করেছেন, তাঁকে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হয়েছে।

এ দিন দুপুরে পুরসভায় বিরোধী দলনেতা নান্টু পাল দলের কাউন্সিলরদের নিয়ে তৃণমূল পরিষদীয় দলের ঘরে বৈঠক করেন। সেখানে পুর পরিষেবার পরিস্থিতি এবং তা নিয়ে তাদের আন্দোলন বিষয়ে আলোচনা হয়। তার মধ্যে রঞ্জনবাবুর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

তৃণমূল সূত্রেই জানা গিয়েছে, সেখানে দলের কাউন্সিলরদের কয়েকজন ঘোঘোমালির ঘটনায় রঞ্জনবাবুর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার পক্ষে সওয়াল করেন। তৃণমূলের বিরোধী দলনেতা নান্টুবাবু প্রত্যেকের বক্তব্য যথাস্থানে জানাবেন বলে আশ্বাসও দিয়েছেন। পরে নান্টুবাবু প্রকাশ্যে অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। রঞ্জন শীলশর্মার সঙ্গেও এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি।

ranjan silsharma tmc steps
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy