Advertisement
০৬ ডিসেম্বর ২০২৩
Humayun kabir

বিধানসভায় সরকারকে আবার প্রশ্ন ডেবরার হুমায়ুনের, তবে এ বার হাত মেলালেন মন্ত্রী অরূপ

শুক্রবার একেবারে অন্য ছবি দেখেছিল বিধানসভা। সে দিনও প্রাক্তন আইপিএস হুমায়ুন সরকারের নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। যার পরে অরূপ-সহ দলের অন্য মন্ত্রীদের দেখা যায় হুমায়ুনকে ঘিরে ধরতে।

(বাঁ দিকে) ডেবরার বিধায়ক প্রাক্তন আইপিএস হুমায়ুন কবীর। (ডান দিকে) মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।

(বাঁ দিকে) ডেবরার বিধায়ক প্রাক্তন আইপিএস হুমায়ুন কবীর। (ডান দিকে) মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২৩ ১৩:৩৪
Share: Save:

বিধানসভায় আবার সরকারের নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। এ বার তিনি জানতে চাইলেন, রাজ্যের শিক্ষা নীতি নিয়ে। কিন্তু আগের দিনের মতো হুমায়ুনের প্রশ্নে দলের বিধায়কদের মধ্যে মুখ চাওয়াচাওয়ি হল না। কোনও অস্বস্তিও লক্ষ করা গেল না। উল্টে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে দেখা গেল আসন ছেড়ে এগিয়ে গিয়ে হুমায়ুনের সঙ্গে হাত মেলাতে!

অথচ শুক্রবার একেবারে অন্য ছবি দেখেছিল বিধানসভা। সে দিনও প্রাক্তন আইপিএস হুমায়ুন সরকারের নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। শুক্রবার তিনি প্রশ্ন করেছিলেন সরকারের লক্ষ্মীর ভান্ডার নীতি নিয়ে। যার পর অরূপ-সহ দলের অন্য মন্ত্রীদের দেখা যায় বিধানসভার করিডোরে হুমায়ুনকে ঘিরে ধরতে। তৃণমূল সূত্রে খবর, ডেবরার বিধায়ককে অরূপ বলেছিলেন, ‘‘তুমি এক জন শিক্ষিত মানুষ, আমাদের বিধায়ক, তুমি এই রকম একটা আলটপকা প্রশ্ন তুলে দিলে?’’ অবশ্য এ প্রশ্নের কারণও ছিল। এই ঘটনার কিছু দিন আগে আরও এক বার হুমায়ুনের কথায় অস্বস্তিতে পড়েছিল দল। তখন হুমায়ুন মন্তব্য করেছিলেন পঞ্চায়েত ভোটে হিংসা নিয়ে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে রক্তপাত নিয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে নিজের ‘হতাশা’ এবং ‘লজ্জা’র কথা জানিয়েছিলেন ডেবরার বিধায়ক। স্বাভাবিক ভাবেই পর পর দু’বার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখে উদ্বিগ্ন হয়েছিল তৃণমূলের দলীয় নেতৃত্ব। এমনকি, এর পরেই পরিষদীয় দলের শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয় তৃণমূলের তরফে। সিদ্ধান্ত হয়, এখন থেকে বিধানসভায় কী প্রশ্ন করবেন পরিষদীয় দলের সদস্যরা, তা আগে থেকে দেখে ঠিক করবে এই কমিটি। এর পরেই মঙ্গলবার আবার বিধানসভায় সরকারের শিক্ষা নীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন হুমায়ুন। যার জবাব দেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তার পরেই দেখা যায় ওই দৃশ্য। মন্ত্রী অরূপ এগিয়ে গিয়ে হাত মেলান হুমায়ুনের সঙ্গে।

কী জিজ্ঞাসা করেছিলেন হুমায়ুন? বিধানসভার প্রশ্নোত্তর পর্বে মোট দু’টি প্রশ্ন করেছিলেন হুমায়ুন। প্রথমত, কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন শিক্ষানীতি রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে কার্যকর করা হয়েছে কি? যদি হয়ে থাকে, তবে কী ভাবে করা হয়েছে? দ্বিতীয়ত, হুমায়ুন জানান, তিনি কাগজে পড়েছেন, রাজ্যে ‘প্রিমিয়ার ইনস্টিটিউট’ বেথুন-সহ একাধিক কলেজের আসন ফাঁকা রয়েছে। এটা কি কেন্দ্রীয় ভাবে কাউন্সিলিংয়ের জন্য হয়েছে? এই দু’টি প্রশ্নই ছিল অনুমোদিত প্রশ্ন। শুক্রবারের মতো দলের সঙ্গে কথা না বলে হঠাৎ যেমন লক্ষ্মীর ভান্ডার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি, তেমন নয়। অর্থাৎ, দলের সঙ্গে কথা বলেই ওই প্রশ্ন করেন হুমায়ুন। আর দলীয় শৃঙ্খলা মেনে চলার জন্যই সম্ভবত হুমায়ুনের সঙ্গে গিয়ে হাত মেলান অরূপ।

তবে একই সঙ্গে ডেবরার বিধায়কের প্রশ্নের জবাবও দেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য। বিধায়কের প্রথম প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন শিক্ষানীতি রাজ্য সরকার গ্রহণ করেনি। এর মধ্যে অনেকগুলো বিষয় আছে। একটা ছোট অংশ শুধুমাত্র ৪ বছরের ডিগ্রি কোর্স। আমরা শুধু সেটাই গ্রহণ করেছি। জোর করে তিন বছরের ডিগ্রি কোর্স রেখে দিলে সমস্যায় পড়তে হত ছাত্র-ছাত্রীদের। যে হেতু সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই চার বছরের ডিগ্রি কোর্স চালু হয়ে গিয়েছে, তাই সর্বভারতীয় স্তরে পরীক্ষার ক্ষেত্রে সমস্যা হত। বামফ্রন্ট সরকারের মতো জোর করে ইংরেজি তুলে দেওয়া অথবা ব্রিজ কোর্স চালু করে আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের সমস্যায় ফেলতে চাইনি। তাই আমরা চার বছরের ডিগ্রি কোর্স চালু করেছি।’’

অন্য দিকে, বেথুন-সহ অন্যান্য কলেজে কেন্দ্রীয় নীতিতে কাউন্সেলিং প্রসঙ্গে ব্রাত্য জানান, কলেজগুলো নিজেদের মতো ভর্তি করছে। কেন্দ্রীয় ভাবে ভর্তি করানো হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE