Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Mahua Moitra

লোকসভার ক্ষত সারাতে নদিয়ায় কোমর বাঁধছেন মহুয়ারা

তৃণমূলের একাংশের মত, নদিয়ায় দলের বিভিন্ন গোষ্ঠী সক্রিয়। কিন্তু নতুন কমিটিতে সকলকে রাখার ফলে, গোষ্ঠী সংস্কৃতিকে খুব একটা প্রশ্রয় পাবে না

মহুয়া মৈত্র, উজ্জ্বল বিশ্বাস। ফাইল চিত্র।

মহুয়া মৈত্র, উজ্জ্বল বিশ্বাস। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২০ ২১:৩৮
Share: Save:

জেলায় লোকসভা কেন্দ্র দুটো। ২০১৯-এর ভোটে তার মধ্যে কৃষ্ণনগর জিতলেও বিজেপির কাছে রানাঘাট খুইয়েছিল তৃণমূল। লোকসভার অঙ্কটা ১-১, কিন্তু বিধানসভা ভিত্তিক অঙ্কটা শাসক দলের ঘুম কেড়ে নেওয়ার মতো। সব মিলিয়ে নদিয়ায় বিধানসভা আসন ১৭টা। গত লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে তার মাত্র ৬টায় এগিয়ে ছিল তৃণমূল। বাকি ১১টাতেই পিছিয়ে। এ অবস্থায়, আগামী বিধানসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে নদিয়ায় পূর্ণাঙ্গ নতুন জেলা কমিটি গঠন করল তৃণমূল। জেলা তৃণমূল সভানেত্রী করা হয়েছে মহুয়া মৈত্রকে। চেয়ারম্যান উজ্জ্বল বিশ্বাস। রবিবারই ওই কমিটি গঠিত হয়েছে।

লোকসভা ভোটে দলের বিপর্যয়ের পর তৃণমূলের জেলা সভাপতির পদ থেকে গৌরীশঙ্কর দত্তকে সরিয়ে দেওয়া হয়। নদিয়াকে দু’টি সাংগঠনিক জেলায় ভাগ করা হয়। সেই সময় রানাঘাটের দায়িত্ব দেওয়া হয় শঙ্কর সিংহকে। আর কৃষ্ণনগরের দায়িত্ব পেয়েছিলেন মহুয়া। পরে ওই দুই সাংগঠনিক জেলাকেই মিলিয়ে দিয়ে একটি কমিটি করা হয়। এ দিন যে নতুন কমিটি তৈরি হয়েছে, সেখানে পুরনো কমিটির অনেকেই রয়েছেন। আছেন অনেক নতুন মুখ।

জেলা তৃণমূলের একাংশের মত, নদিয়ায় দলের বিভিন্ন গোষ্ঠী সক্রিয়। সেই সব গোষ্ঠীর মধ্যে কোন্দলও রয়েছে। কিন্তু নতুন কমিটিতে সকলকে রাখার ফলে, গোষ্ঠী সংস্কৃতিকে খুব একটা প্রশ্রয় দিতে পারবেন না কেউই। লোকসভা নির্বাচনে দলের খারাপ ফল এবং এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে, পুরনো অনেক কর্মী বসে গিয়েছিলেন। নতুন কমিটিতে তাঁদের অনেককেই ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে বলে জেলা তৃণমূল সূত্রে খবর। তৃণমূলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতির পদ সামলানো শঙ্কর সিংহকে ওই পদ থেকে সরিয়ে কিছু দিন আগে রাজ্য কমিটির অন্যতম সহ-সভাপতি করা হয়। তাঁকেও রাখা হয়েছে নতুন জেলা কমিটির অ্যাডভাইজরি বোর্ডে।

মহুয়া মৈত্রকে জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী, উজ্জ্বল বিশ্বাসকে চেয়ারম্যান করার পাশাপাশি ১৭ বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য তিন জন কোঅর্ডিনেটরকেও রাখা হয়েছে ওই কমিটিতে। এঁরা হলেন দীপক বসু, নাসিরুদ্দিন আহমেদ এবং আবিররঞ্জন বিশ্বাস। জেলা তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘আগের যে কোনও কমিটিতেই কৃষ্ণনগরের দাপট বেশি থাকত। কমিটির প্রায় ৯০ শতাংশ সদস্যই কৃষ্ণনগরের হতেন। এ বারের কমিটিতে কিন্তু জেলার প্রতিটি ব্লকের উপস্থিতি রয়েছে।’’

নতুন এই কমিটিতে জেলার তৃণমূলকর্মীরাও বেশ আশান্বিত। এক কর্মীর কথায়, ‘‘আমাদের জেলায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বটা বড় বেশি প্রকট। সকলেই কোনও না কোনও গোষ্ঠীর লোক হিসেবে পরিচিত। কেউ গৌরীশঙ্কর দত্তের লোক। কেউ মহুয়া মৈত্রের। কেউ আবার শঙ্কর সিংহের।’’ জেলা তৃণমূলের এক নেতা এই অভিযোগ মেনে নিয়ে বললেন, ‘‘নতুন কমিটিতে কেউ কারও লোক নয়। সকলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লোক। দিদির লোক হয়েই সকলে ভোটের ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। আমরা আগামী বিধানসভায় ১৭টার মধ্যে অন্তত ১৪টা আসন পাবই। তার বেশিও হতে পারে।’’

আরও পড়ুন: দু’সপ্তাহ পর রাজ্যে করোনা সংক্রমণের হার নামল ৮ শতাংশে, বাড়ছে সুস্থতাও

আরও পড়ুন: ফের গাছে বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত দেহ, এ বার নদিয়ার গয়েশপুরে

জেলার সভানেত্রী মহুয়া মৈত্র জানিয়েছেন, নতুন কমিটি আগামী সপ্তাহ থেকে বিভিন্ন ব্লকে কাজ শুরু করবে। তিনি বলেন, ‘‘নতুন যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়েছে, সেখানে সমস্ত ব্লকের উপস্থিতি রয়েছে। আমরা সকলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আগামী বিধানসভায় লড়াই করব। বিরোধীদের কোনও সুযোগই আর দেব না। নতুন কমিটি নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করবে আগামী ৪ নভেম্বর থেকে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE