Advertisement
E-Paper

‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’: শিবির শুরু আগামী শনিবার, জেলাশাসকদের কাছে কী কী নির্দেশিকা পাঠাল নবান্ন

সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ২ অগস্ট ২০২৫ থেকে ৩ নভেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত এই কর্মসূচির শিবির চলবে। ১৫ নভেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে সমস্ত আবেদনের প্রশাসনিক মূল্যায়ন এবং অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কোন কোন প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে, তা নির্ধারণ করে ফেলতে হবে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৫ ১২:৩০
Mamata Banerjee

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

একুশে জুলাই তৃণমূলের সমাবেশের পরদিনই নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ নামে এক নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য, সরকারি পরিষেবা এবং এলাকার সমস্যার সমাধানকে বুথ স্তরে পৌঁছে দেওয়া। এ বার সেই কর্মসূচিকে বাস্তব রূপ দিতে জেলাশাসকদের নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক করে বিস্তারিত নির্দেশ দিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। ইতিমধ্যেই এই কর্মসূচি ঘিরে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে নবান্ন।

সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ২ অগস্ট ২০২৫ থেকে ৩ নভেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত এই কর্মসূচির শিবির চলবে। সমস্ত আবেদনের প্রশাসনিক মূল্যায়ন এবং অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কোন কোন প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে, তা নির্ধারণ করে ফেলতে হবে ১৫ নভেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে। ১৫ জানুয়ারি ২০২৬ থেকে কাজ শুরু হবে। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, সময়মতো ক্যাম্প ও পরবর্তী কাজের অগ্রগতি তদারকির জন্য বিশেষ মনিটরিং কমিটি গঠনের কথাও ভাবা হচ্ছে। এক ভার্চুয়াল বৈঠক করে রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এই কর্মসূচিকে সফল করতে জেলাশাসকদের বেশ কিছু নির্দেশ দিয়েছেন। নবান্ন সূত্রে খবর, প্রতিটি ক্যাম্পে বিভিন্ন দফতরের সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে যেন স্থানীয় প্রতিনিধিরাও থাকেন, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। শিবির চালুর আগে যেন স্থানীয় ভাবে তা প্রচার করা হয়, যাতে সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণে উৎসাহিত হন। পাশাপাশি, প্রতিটি ক্যাম্প থেকে জমা পড়া সমস্যার তালিকা ও সমাধানের অগ্রগতি নিয়মিত ভাবে রাজ্য সদর দফতরে পাঠাতে হবে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই কাজের গতিপ্রকৃতি ঠিক করা হবে।

নবান্নের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘এই কর্মসূচির অন্যতম বৈশিষ্ট্য বুথভিত্তিক পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন। রাজ্যের মোট ৮০ হাজার বুথকে ভিত্তি করে ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ ক্যাম্প গঠিত হবে। তিনটি বুথ নিয়ে তৈরি হবে একটি ক্যাম্প বা শিবির। অর্থাৎ, রাজ্য জুড়ে আনুমানিক ২৭ হাজারের মতো ক্যাম্প করা হবে, যেখানে সরকারি আধিকারিক, জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষ একত্রিত হয়ে সরাসরি আলোচনায় বসবেন।’’ এই শিবিরে প্রথমে এলাকাবাসীদের সমস্যার কথা শোনা হবে। আলোচনা শেষে জনপ্রতিনিধি এবং সরকারি আধিকারিকেরা সংশ্লিষ্ট বুথে গিয়ে সমস্যার প্রকৃত চিত্র সরেজমিনে খতিয়ে দেখবেন। পরে তাঁরা আবার শিবিরে ফিরে এসে আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন— কোন কাজটি অগ্রাধিকার পাবে এবং কী ভাবে তা বাস্তবায়িত হবে।

প্রত্যেকটি বুথের জন্য রাজ্য সরকার ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে। এই হিসাবে রাজ্যের কোষাগার থেকে মোট ব্যয় হবে প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা। কর্মসূচির আওতায় রাস্তা নির্মাণ, নলকূপ বসানো, গ্রামীণ সেতুর মেরামতি, স্কুলের পরিকাঠামো উন্নয়ন, পানীয় জলের কল বসানো-সহ বিভিন্ন ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলি গ্রহণ করা হবে। মূলত স্থানীয় স্তরের দৈনন্দিন সমস্যা দ্রুত সমাধানের দিকেই গুরুত্ব দিচ্ছে রাজ্য। তাই নবান্ন থেকে সরাসরি মুখ্যসচিব এ বিষয়ে নজরদারি করবেন সব জেলায়। তাই জেলাশাসকদেরও প্রতিনিয়ত বুথস্তর থেকে রিপোর্ট সংগ্রহ করে কাজের বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, ২০২৬-এ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে বুথভিত্তিক এই কর্মসূচির মাধ্যমে রাজ্য সরকার একপ্রকারে প্রশাসনিক কর্মদক্ষতা ও জনসংযোগ বৃদ্ধির কৌশল হিসেবে এই প্রকল্প ব্যবহার করতে চাইছে। আবার বিরোধীদের মতে, এটি আসলে ভোটের আগে বুথমুখী রাজনীতির প্রস্তুতি। তবে প্রশাসনিক মহলের দাবি, প্রকল্পটি মূলত নাগরিকদের দৈনন্দিন সমস্যার দ্রুত সমাধান ও নিচু স্তরে প্রশাসনের সরাসরি পৌঁছোনোর উদ্দেশ্যে তৈরি হয়েছে।

Mamata Banerjee Nabanna
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy