অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত রাজ্যে ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গিতে। আক্রান্তের সংখ্যা ১৮,৬৮৬ জন। বুধবার নবান্নে ডেঙ্গি বৈঠকে বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে। সারা বছর ধরে মশা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি চালু রাখতেও পুরসভাগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন।
বর্ষা বিদায়ের পরেও রাজ্য থেকে ডেঙ্গি বিদায় না-নেওয়ায় রোজই নতুন নতুন এলাকা থেকে ডেঙ্গি আক্রান্তের খবর আসছে। ওই সব রোগীদের অবস্থা দ্রুত খারাপ হচ্ছে। চিকিৎসকেরা অনেক ক্ষেত্রে দিশা খুঁজে বের করার আগেই মাল্টিঅর্গান ফেলিওর কিংবা শক সিন্ড্রোমে মৃত্যু হচ্ছে মানুষের। ডেঙ্গির এই প্রতাপে রাজ্য সরকার উদ্বিগ্ন।
কেন এখনও ডেঙ্গিতে রাশ টানা যাচ্ছে না, তা পর্যালোচনার জন্য এ দিন জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন স্বরাষ্ট্রসচিব মলয় দে। রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তা ও ডেঙ্গি কবলিত পুরসভাগুলির কর্তারা ছাড়াও বৈঠকে ছিলেন পুর দফতরের কর্তারা। প্রতিটি পুরসভাকে ডেঙ্গি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যাদি নিয়ে হাজির হতে বলা হয়েছিল এ দিনের বৈঠকে।
স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ৬ হাজারের উপরে রক্তের নমুনার ফল এখনও মেলেনি। ডেঙ্গি উপসর্গ সহ এমন ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাঁদের রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট এখনও চূড়ান্ত হয়নি। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কাছে গত দেড় মাস ধরে কোনও ডেঙ্গি-রিপোর্ট পাঠায়নি রাজ্য। সর্বশেষ রিপোর্টে রাজ্যে মৃতের সংখ্যা ছিল ৩২। সেই সংখ্যাটা যে গত দেড় মাসে আরও বেড়েছে, তা এ দিনের বৈঠকেই পরিষ্কার হয়েছে। সব থেকে বেশি ডেঙ্গি রোগী শনাক্ত হয়েছে বিধাননগর পুরসভায়। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ১২০০।
কলকাতা এবং সল্টলেকের বেসরকারি হাসপাতালগুলির রিপোর্ট অবশ্য বলছে, রাজ্যে এ বছর ডেঙ্গিতে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা নবান্নের ঘোষিত সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি। ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হলেও বিভিন্ন হাসপাতাল ডেথ সার্টিফিকেটে ডেঙ্গি শব্দটাই লিখছে না। ডেথ সার্টিফিকেটে লেখা হয়েছে মাল্টিঅর্গান ফেলিওর এবং শক সিন্ড্রোম।
মশা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি ঠিক মতো না হওয়াতেই এ বার ডেঙ্গিকে এখনও বশ মানানো যাচ্ছে না বলে মনে করছেন বেশির ভাগ পতঙ্গবিদ। কেন মশা নিয়ন্ত্রণ ঠিক মতো হচ্ছে না— এ দিন তা পুরসভাগুলির কাছে জানতে চান স্বরাষ্ট্রসচিব। পুরসভাগুলির ব্যাখ্যা, মশা মারার অভিযান চলছে। কিন্তু মশার লার্ভা মারার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের পাঠানো কীটনাশক কাজ করছে না। মশা মারার তেলেও কোনও ক্ষতি হচ্ছে না লার্ভার। ফলে রোগ ছড়িয়েই চলেছে। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলা হবে স্বাস্থ্য ভবনের এক কর্তা জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy