Advertisement
E-Paper

বর্ষায় পর্যটন জঙ্গলমহলে

বসন্ত উৎসবের মরসুমে জঙ্গলমহলে মার খেয়েছে পর্যটন ব্যবসা। তাই ক্ষতি সামলাতে ‘বর্ষামঙ্গল’ দিয়ে পর্যটনের পালে হাওয়া টানার চেষ্টা শুরু করেছে প্যাকেজ ট্যুর সংস্থাগুলি। বস্তুত, এই প্রথম বার বর্ষার মরসুমে ঝাড়গ্রামে বিশেষ প্যাকেজ ট্যুর চালু করতে চলেছে একাধিক সংস্থা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:২৭
অপেক্ষায় অপরূপ ঘাঘরা (বাঁ দিকে) ও কাঁকড়াঝোর। নিজস্ব চিত্র।

অপেক্ষায় অপরূপ ঘাঘরা (বাঁ দিকে) ও কাঁকড়াঝোর। নিজস্ব চিত্র।

বসন্ত উৎসবের মরসুমে জঙ্গলমহলে মার খেয়েছে পর্যটন ব্যবসা। তাই ক্ষতি সামলাতে ‘বর্ষামঙ্গল’ দিয়ে পর্যটনের পালে হাওয়া টানার চেষ্টা শুরু করেছে প্যাকেজ ট্যুর সংস্থাগুলি। বস্তুত, এই প্রথম বার বর্ষার মরসুমে ঝাড়গ্রামে বিশেষ প্যাকেজ ট্যুর চালু করতে চলেছে একাধিক সংস্থা। কেন? ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, ভোটের জেরে দোল উৎসবে ঝাড়গ্রামের সরকারি-বেসরকারি অতিথিশালার দখল নেয় প্রশাসন। ফলে হোটেলের ঘরের ও প্যাকেজ ট্যুরের বহু বুকিং বাতিল করতে বাধ্য হন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

প্রতি বছর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের পরে বসন্তের আবহওয়ায় অনেকে ঝাড়গ্রাম বেড়াতে আসেন। গত কয়েক বছরে ঝাড়গ্রামে পর্যটকদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে।

২০০৯ সাল থেকে একটি বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে প্রতি বছর ঝাড়গ্রাম শহরের রবীন্দ্রপার্কে বসন্তোৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে। এ বারও দোলের দিনে ঝাড়গ্রাম ট্যুরিজম নামে ওই সংস্থার উদ্যোগে উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু ভোটের প্রস্তুতি জন্য এবং বাইরে থেকে আসা আধিকারিক ও পুলিশ কর্মীদের থাকার জন্য অরণ্যশহরের বেশির ভাগ ভাল লজ-হোটেল ও অতিথিশালাগুলি প্রশাসন নিজেদের হেফাজতে নিয়েছিল। ফলে, শেষ মূহূর্তে প্রায় শ’পাঁচেক পর্যটকের জন্য থাকার জায়গার বন্দোবস্ত হয়নি। এ বার দোলের দিনে কার্যত নমো-নমো করে বসন্ত উৎসব উদ্‌যাপিত হয়। জঙ্গলমহলে ভোট ছিল ৪ এপ্রিল। ভোটের পরে তাপপ্রবাহে জঙ্গলমহলে বসন্তবিলাসে যাওয়ার ঝঁুকি নেননি পর্যটকরা। আসন্ন বর্ষায় পর্যটকদের জন্য বিশেষ প্যাকেজ ট্যুর চালু করতে চলেছে ঝাড়গ্রামের একাধিক পর্যটন সংস্থা। কিন্তু, বর্ষায় জঙ্গলে যাওয়াটা তো মোটেই নিরাপদ নয়! ঝাড়গ্রামের এক ভ্রমণ সংস্থার কর্ত্রী দেবশ্রী শ্যামল বলেন, “বর্ষায় বৃষ্টি ধোয়া ঝাড়গ্রামের সৌন্দর্যটাই আমরা পর্যটকদের সামনে তুলে ধরতে চাইছি। জঙ্গলের ভিতরে পর্যটক নিয়ে যাওয়ার প্রশ্নই নেই।”

তাহলে কী দেখবেন পর্যটকেরা? একটি পর্যটন সংস্থার লক্ষে ম্যানেজার নিখিল মণ্ডল জানিয়েছেন, বর্ষায় বেলপাহাড়ির পাহাড় চূড়োয় জড়িয়ে থাকা মেঘের চাদর, কানাইশহর পাহাড় পুজোর মেলা, খাঁদারানি জলাশয়ের টলটলে জলে বালিহাঁসের জলকেলি, নয়াগ্রামে কূল ছাপানো সুবর্ণরেখার ধারে রামেশ্বর শিবমন্দির দেখানো হবে পর্যটকদের। রাত্রিযাপনের জন্য পর্যকদের দেওয়া হবে ব্যালকনি যুক্ত থাকার ঘর। যাতে অবসরে দোতলা বা তিন তলা থেকে শালবনানীর মাঝে বর্ষার অপরূপ শোভা উপভোগ করতে পারেন পর্যটকরা। পর্যটকদের জন্য মরসুমের উপযোগী খাবারও দেওয়া হবে। বাড়তি আকর্ষণ হিসেবে কংসাবতী নদীর তীরে রণপা ও রায়বেঁশে নাচ দেখানোরও ব্যবস্থা থাকছে।

দু’রাত তিন দিনের বর্ষামঙ্গল ট্যুর-প্যাকেজের মধ্যে হোটেলে থাকা, খাওয়া, গাড়িতে বেড়ানো ও গাইড-পরিষেবা পাবেন পর্যটকরা। রয়েছে আপত্কালীন চিকিত্সা পরিষেবাও। ঝাড়গ্রামের একটি প্যাকেজ ট্যুরের আয়োজক সংস্থার কর্ণধার সুমিত দত্ত বলেন, “ভোটের জন্য বসন্তের মরসুমের ক্ষতিটা আমরা বর্ষায় পুষিয়ে নিতে চাইছি। আগে বর্ষায় প্যাকেজ করা হয়নি। ওয়েবসাইটে পর্যটকদের বিপুল সাড়া পেয়ে বর্ষামঙ্গল প্যাকেজ চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”জঙ্গলমহল শান্ত হওয়ার পরে শীত ও বসন্তে বেসরকারি প্যাকেজ ট্যুর জনপ্রিয় হয়েছে। এখন দেখার ‘বর্ষামঙ্গল’ পর্যটনের কতটা মঙ্গল করতে পারে!

Tousists Jangalmahal Monsoon
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy