রুদ্ধ: নিত্যই গাড়ির জটে থমকে যায় ডানলপ মোড়। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
ডানলপ মোড়ে যানজট পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।
এমনিতেই সংস্কারের কাজ হবে বলে প্রায় চার মাস ধরে ভারী যানবাহন ওঠা বন্ধ ‘ডানলপ রাইট টার্ন ফ্লাইওভার’ উড়ালপুলে। শুধু ছোট গাড়ি ওঠার অনুমতি রয়েছে। তার জেরে দক্ষিণেশ্বর ও নিবেদিতা সেতু দিয়ে আসা কলকাতামুখী সব ভারী যানবাহনের ভিড় ডানলপ মোড় তথা বি টি রোডের যানজটে নতুন মাত্রা সংযোজন করেছে। চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যাত্রী ও চালকেরা।
পূর্ত দফতর সূত্রে খবর, এ বার সংস্কারের কাজ দ্রুত শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ১৫ ডিসেম্বরের পরে উড়ালপুলে বেয়ারিং লাগানোর কাজ শুরু হতে পারে। যত দিন ওই কাজ চলবে তত দিন বি টি রোডের উপরে কলকাতাগামী রাস্তার খানিকটা অংশ বন্ধ করে দেওয়া হবে।
পুলিশ জানায়, সেতুর নীচে ভগৎ সিংহের মূর্তির পর থেকে কিছুটা এগিয়ে গিয়ে কলকাতামুখী বি টি রোডে যে ডিভাইডার রয়েছে, তার কিছুটা ভেঙে দেওয়া হবে। ব্যারাকপুর ও দক্ষিণেশ্বরের দিক থেকে আসা যানবাহন একই লেন দিয়ে এঁকেবেঁকে কলকাতার দিকে এগোবে। এত দিন ব্যারাকপুর ও দক্ষিণেশ্বরের দিক থেকে আসা গাড়ির লেন আলাদা ছিল। এখন তা মিশে গিয়ে যানজটের সমস্যা আরও কয়েক গুণ বাড়বে বলেই আশঙ্কা ট্র্যাফিক পুলিশ কর্মীদের। তাঁরা জানান, বেয়ারিং লাগানোর কাজ ঠিক কবে শুরু হবে আর তা কত দিনে শেষ হবে সে সংক্রান্ত কোনও নির্দেশিকা না থাকায় তাঁরাও তিন মাস ধরে যানজট সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন।
পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, ডানলপ রাইট টার্ন ফ্লাইওভার-এর দু’টি স্তম্ভের তিনটি করে বেয়ারিং পরিবর্তন করা হবে। টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ, বেয়ারিংও তৈরি হয়ে গিয়েছে। এ বার রাস্তা বন্ধ রেখে সেগুলি বদলানো হবে।
ডানলপ মো়ড়ের যানজট কমাতে ২০১২ সালে ওই উড়ালপুল তৈরি হয়। তখন গাড়ি চালকদের প্রবণতা ছিল উড়ালপুল ব্যবহার না করে ডানলপ মো়ড় হয়ে কলকাতার দিকে যাওয়ার। বাধ্য হয়ে চলতি বছরে কলকাতাগামী সব গাড়ির জন্য ডানলপ রাইট টার্ন ফ্লাইওভার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে ডানলপ ট্র্যাফিক গার্ড। কিন্তু মাঝেরহাট সেতুর দুর্ঘটনার পরে রাজ্য সরকার বিভিন্ন উড়ালপুলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু করে। তখনই ডানলপ রাইট টার্ন ফ্লাইওভার-এর দু’টি বেয়ারিং পাল্টানোর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে পূর্ত দফতর। তার পর থেকেই উড়ালপুলে মোটরবাইক ও ছোট গাড়ি ছাড়া আর কোনও যানবাহন উঠতে দেওয়া হচ্ছে না। সকালে ও দুপুরে ‘নো-এন্ট্রি’ ওঠার পরে লরি চলাচল শুরু হলে পরিস্থিতি গুরুতর হচ্ছে। যানবাহনের ‘চাপ’ সাংঘাতিক বেড়ে গিয়েছে বি টি রোডের উপরে ডানলপের ওই চার রাস্তার গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে। পুজোর আগে থেকেই ওই অবস্থা।
এক পুলিশ কর্তার কথায়, ‘‘ডিসেম্বরের মাঝামাঝি যদি কাজ শুরু হয়, তাহলে এত দিন বন্ধ রেখে ভোগান্তি বাড়ানোর দরকার ছিল না।’’ তবে পূর্ত দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘সেতুর অবস্থা বিপজ্জনক জানার পরেও ভারী গাড়ি যাওয়ার ঝুঁকি নেওয়া সম্ভব নয়, তাই বন্ধ রাখতে হয়েছে। কাজ শুরুর সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে কিছুটা সময় লেগেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy