রাস্তা দখল করে থাকা এমন দোকান, পার্কিংই যানজটের কারণ। রামনগর মোড়ে। নিজস্ব চিত্র
দিঘায় যানজট ঠেকাতে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ ও প্রশাসন নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। অথচ দিঘায় আসা ও যাওয়ার পথে রামনগরে যানজটে পড়ে পর্যটক থেকে নিত্যযাত্রীদের নাজেহাল হতে হচ্ছে প্রতিদিন।
পর্যটক থেকে সাধারণ যাত্রী সকলের অভিযোগ, দিঘায় যানজট নিয়ে প্রশাসনের মাথাব্যথা থাকলেও, দিঘায় ঢোকার পথে রামনগরের মতো গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে যানজট নিয়ে মাথাব্যথা নেই।
দিঘা-নন্দকুমার ১১৬ বি জাতীয় সড়কে দিঘার আগে বড় বাসস্টপ বলতে রামনগর মোড়। দিঘায় আসা-যাওয়ার পথে রামনগর মোড়ে যানজটে পড়েননি এমন পর্যটকের সংখ্যা খুবই কম। তার উপর বিশেষ বিশেষ ছুটির দিনে দিঘা ও কলকাতাগামী যানবাহনের সংখ্যা বাড়ায় এখানে যানজট লাগামছাড়া হয়ে যায়। কিন্তু এর কারণ কি?
স্থানীয় বাসিন্দা থেকে নিত্যযাত্রী সকলেরই অভিযোগ, একে তো ফুটপাতে হকারদের দাপট। তার উপর রাস্তায় যেখানে সেখানে মোটরবাইক, সাইকেল, ইঞ্জিনভ্যান, গাড়ি, অটো-টোটোর রাস্তা দখল করে পার্কিং। ফলে সংকীর্ণ সড়কে দু’দিক থেকে যানবাহন চলাচলে সমস্যার শেষ থাকে না। যার পরিণামেই যানজট। রামনগর সেতু হয়ে রেল ক্রসিং ও চোদ্দোমাইল পর্যন্ত রাস্তায় যানজট মুক্তির দাবি দীর্ঘদিনের। কিন্তু দখলদার ও বেআইনি পার্কিং রোখার ক্ষেত্রে পুলিশ-প্রশাসন তৎপর নয়। ফলে ভোগান্তিরও শেষ নেই।
রামনগরের বাসিন্দা দীপক সার জানান, যাতায়াতের দিক থেকে এই রাস্তাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে দিঘা থেকে রামনগর হয়ে কাঁথি, অন্যদিকে রামনগর থেকে এগরা—দুই রাস্তার সংযোগস্থলে রামনগর বাসস্ট্যান্ড। ওই জায়গা এতটাই ঘিঞ্জি যে হাঁটাচলা করা দায়। রাস্তার একপাশে অটো-টোটার উপদ্রব। অন্যপাশে রাস্তা দখল করে অবাধে চলছে দোকানদারি। স্থানীয় বিশ্বজিৎ মাইতি বলেন, ‘‘অটো এবং টোটোর সংখ্যা বেড়ে গেলেও তাদের জন্য নির্দিষ্ট স্ট্যান্ড নেই। ফলে তারা রাস্তা দখল করে দাঁড়িয়ে থাকে। এতে দুর্ঘটনাও ঘটছে। দুর্ঘটনা ঘটলে পুলিশ কয়েকদিন একটু নড়েচড়ে। তারপর ফের যেই কে সেই।’’
দিঘায় বেড়াতে আসা নদিয়ার কৃষ্ণনগরের ব্যবসায়ী তপন পণ্ডা বলেন, “গত বছর গরমে দিঘায় এসেছিলাম। এ বছর বর্ষায় এলাম। প্রতিবারেই রামনগরে যানজটে পড়তে হয়েছে। পর্যটকদের স্বার্থে যানজট সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত।’’
রামনগর-১ এর বিডিও অনুপম বাগের দাবি, ‘‘এই সড়কে আগের চেয় যান চলাচল অনেক বেড়েছে। তাই সমস্যা হচ্ছে। তবে কিছুদিনের মধ্যে রামনগর আরএসএ ময়দানের কাছে স্থায়ী বাসস্ট্যান্ড হবে। তখন যানজট অনেকটাই কমে যাবে।’’
রামনগর-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি ও রামনগর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক নিতাই চরণ সার বলেন, ‘‘দিঘা থেকে নন্দকুমার ১১৬ বি জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ চলছে। তাই এখানে সরকারি জমি ও রাস্তা দখল করে যারা ব্যবসা করছে তাদের সরে যেতে হবে। তখন রামনগরে যানজট আর থাকবে না।’’
এখন কবে যানজটমুক্ত রামনগর দেখা যাবে, সে দিকেই তাকিয়ে পর্যটক থেকে স্থানীয় মানুষজন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy