পাঁচ দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু উত্তরবঙ্গ ও অসমের সঙ্গে বাকি দেশের রেল যোগাযোগ জোড়া লাগার কোনও সম্ভাবনাই এখনও দেখা যায়নি। কবে এই যোগাযোগ চালু করা সম্ভব হবে, তা-ও স্পষ্ট করে বলতে পারছেন না কেউ। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কর্তারা জানিয়েছেন, আগামী ২০ তারিখ সকালে বন্যার জলে ক্ষতিগ্রস্ত লাইনের পরিস্থিতি আবার পর্যালোচনা করা হবে। তার পরে ঠিক হবে, কবে ট্রেন চলবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো মনে করছেন, রেল যোগাযোগ পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে সপ্তাহ দুয়েক লেগে যাবে।
শুধু রেলই নয়, সড়ক যোগাযোগের অবস্থাও খুবই খারাপ। মুর্শিদাবাদ থেকে মালদহ যাওয়ার পথে সামশেরগঞ্জের কাছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত। ফলে সেই পথে এ দিন গাড়ি চলেনি। মালদহের পরে উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে যাওয়ার পথেও বহু জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত। অনেক জায়গাতেই জাতীয় সড়কের উপর দিয়ে জল বইছে। কোথাও সেতু ভেঙে গিয়েছে। তাই সড়কপথে যাতায়াতও কবে পুরোপুরি ঠিক হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। যদিও রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী এ দিন দাবি করেন, ‘‘ওই এলাকায় ৩৪টি দূরপাল্লার বাস নামানো হচ্ছে। প্রয়োজনে বাস আরও বাড়ানো হবে।
রেল সূত্রে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের মালদহ, বিহারের কাটিহার, অসমের গুয়াহাটি-সহ বেশ কয়েকটি স্টেশনে এখনও বহু যাত্রী আটকে আছেন। এই সমস্যা মেটাতে আজ, বৃহস্পতিবার রাত থেকে গৌড় এক্সপ্রেসের পাশাপাশি চার দিনে একটি করে (মোট চার জোড়া) স্পেশাল ট্রেন চালানো হবে। অন্য দিকে, শুভেন্দুর বক্তব্য, ‘‘বৃহস্পতিবার থেকে মালদহ থেকে কলকাতা পর্যন্ত এক ঘণ্টা অন্তর বাস চালানো হবে।’’ পরিবহণ দফতরের দাবি, মালদহে পৌঁছলে সেখান থেকে বাস ধরে উত্তরবঙ্গের অন্যত্র ও অসম যেতে পারবেন যাত্রীরা। যদিও জায়গায় জায়গায় রাস্তা যে খারাপ, সে কথাও মেনে নিচ্ছেন প্রশাসনের কেউ কেউ।
রেলের অবস্থা যে সত্যিই সঙ্গীন, সেটা মেনে নিয়েছেন রেল কর্তারা। তাঁদের বক্তব্য, পরিস্থিতি এ দিনও বদলায়নি। কিছু কিছু এলাকা থেকে বন্যার জল নামছে খুব ধীরে। উল্টে মালদহ থেকে কুমেদপুরের দিকে কিছু এলাকায় নতুন করে জল ঢুকে রেল লাইনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভেঙেছে রেল সেতুও। ফলে যাত্রীবাহী ট্রেন তো দূর অস্ত্, একটি মালগাড়িও চালানো সম্ভব হয়নি। এমনকী, বুধবার যে ডালখোলা-গুয়াহাটি ট্রেন চালিয়েছিল উত্তর-পূর্ব রেল, তা-ও বন্ধ করে দিতে হয়েছে।
এ দিনও উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল ৭৭টি মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি পূর্ব রেলও বাতিল করেছে ১৬টি মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেন। যাত্রীদের মতো আটকে আছে কয়েকশো মালবোঝাই গাড়িও। এই পরিস্থিতি টানা আরও কিছু দিন ধরে চললে এ বার উত্তরবঙ্গ ও অসমের ভাঁড়ারে টান পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy