কোনও রকম অবরোধ তিনি চান না বলে বারবার জানিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ তাঁর দলেরই কর্মী-সমর্থকদের আচমকা রেল অবরোধে রবিবার জেরবার হয়ে গেলেন পূর্ব রেলের শিয়ালদহ মেন শাখার যাত্রীরা।
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূলের সাংসদ-নেতারা নোট বাতিলের প্রতিবাদ করায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রোষে তাঁদের হেনস্থা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে এ দিন বেলা সওয়া ১১টা নাগাদ শ্যামনগর স্টেশনের কাছে রেললাইন অবরোধ করেন তৃণমূলকর্মীরা। প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন নিয়ে এবং মোদীর ছবি দিয়ে কার্টুন এঁকে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা ও কর্মীরা স্টেশন লাগোয়া ২৪ নম্বর রেলগেটের কাছে রেললাইনে বসেন পড়েন। এমনিতেই ঘোষপাড়া রোড ও ফিডার রোডের লাগোয়া ওই রেলগেটে সব সময় ভিড় থাকে। গেটের দু’পারেই বাজার। এ দিনের রেল অবরোধের জেরে ঘোষপাড়া রোডেও যানজট হয়ে যায়।
পূর্ব রেলের খবর, সাড়ে ১১টা থেকে ১২টা চল্লিশ পর্যন্ত অবরোধের জেরে আপ ও ডাউন লাইনের ট্রেনগুলি বিভিন্ন স্টেশনে ও স্টেশনের মাঝখানে দাঁড়িয়ে যায়। পৌনে ১টার পরে ফের ট্রেন চালু হয়। তবে তা স্বাভাবিক হতে বেলা গড়িয়ে যায়।
কয়েক দিন ধরেই বিভিন্ন জায়গায় একের পর এক রেল ও সড়ক অবরোধ চলছে। তার উপরে ছুটির দিনে রেল অবরোধের জেরে নাকাল যাত্রীরা তিতিবিরক্ত। শান্তিপুর থেকে অসুস্থ বাবাকে শিয়ালদহের বি আর সিংহ হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন নিখিলেশ সরকার। মাঝপথে আটকে পড়ায় দিশাহারা দেখাচ্ছিল তাঁকে। ক্ষুব্ধ স্বরে তিনি বললেন, ‘‘অসুস্থ মানুষটিকে নিয়ে আমি এখন কোথায় যাই!’’ ক্ষোভ-বিরক্তি ঝরে পড়ে অফিসের কাজে শিয়ালদহের ট্রেন ধরতে যাওয়া নৈহাটির সন্দীপ চক্রবর্তীর মতো যাত্রীদের গলাতেও। অনেক যাত্রীর প্রশ্ন, নিজের রাজ্যের মানুষকে দুর্ভোগে ফেলে কি প্রতিবাদ হয়? আটকে পড়া কৃষ্ণনগর লোকালের যাত্রী তপন দাস, তরুণ বিশ্বাসেরা বলেন, ‘‘আগে থেকে জানা থাকলে এক রকম। এখন তো রবিবার মানেই সকলের ছুটির দিন নয়। আচমকা মাঝেমধ্যেই রেল বা পথ অবরোধ। দিনটাই পণ্ড!’’
তবে সাধারণ মানুষও তাঁদের আন্দোলনের পাশে আছেন বলে ভাটপাড়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তৃণমূলের সোমনাথ তালুকদারের দাবি। এ দিনের রেল অবরোধে নেতৃত্ব দেন তিনিই। তাঁর দাবি, ‘‘কালো টাকা ধরতে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস সরব হওয়ায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই সুদীপবাবু এবং অন্য সাংসদদের উপরে মিথ্যা মামলা চাপানো হচ্ছে। তাই সাধারণ মানুষও প্রতিবাদে এগিয়ে এসেছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy