বিহারে ভোটার তালিকার বিশেষ ও নিবিড় সংশোধনকে (এসআইআর) সামনে রেখে সংসদে যে দিন তরজা বাধল, সে দিনই বিষয়টি নিয়ে বাংলার রাজনীতিতেও উত্তাপ বেড়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস শুক্রবার বলেছে, এই সংশোধন আদতে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি তৈরির কাজ। পূর্ণ শক্তিতে মানুষের অধিকার তারা রক্ষা করবে বলেও জানিয়েছে। একই ভাবে এসআইআর-কে ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা বলে সরব হয়েছে সিপিএম এবং কংগ্রেসও। বিজেপির পাল্টা বক্তব্য, ভুয়ো ভোটার বাদ যাওয়া নিয়ে গভীর আশঙ্কায় ভুগছে বাংলার শাসক দল।
বিহারে ওই সংশোধন প্রক্রিয়ার প্রথম-পর্ব এ দিনই শেষ হয়েছে। এই সূত্রেই বাংলাতেও এসআইআর চালু হবে কি না, তা নিয়ে রাজ্য-রাজনীতিতে চর্চা বেড়েছে। সংসদে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের আন্দোলনে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক স্তরেও প্রচার শুরু করেছে তৃণমূল। দলের তরফে এক্স হ্যান্ড্লে বলা হয়েছে, ‘এসআইআর কোনও ভাবেই ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রক্রিয়া নয়। রাজনৈতিক এই অস্ত্র ব্যবহার করে মানুষের ভোটাধিকার খর্ব করা হচ্ছে।’ তাদের আরও বক্তব্য, ভোটাধিকার বিশেষ কোনও সুযোগ দেওয়া নয়। এটি মানুষের মৌলিক অধিকার, যা তৃণমূল রক্ষা করবে।
যদিও বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য মিঠুন চক্রবর্তী পাল্টা বলেছেন, “কমিশন ঠিক ব্যবস্থা করেছে। রাজ্য সরকার এবং সবাইকে সেটা মানতে হবে। এই ব্যবস্থায় অনুপ্রবেশকারীরা নিশ্চিত ভাবেই বেরিয়ে যাবে। তবে বৈধ নাগরিককে বার করে দিলে বিজেপি প্রতিবাদ করবে।” বিজেপি নেতৃত্বের আরও দাবি, ভুয়ো ভোটারের নাম বাদ যাওয়া নিয়ে ভয় পাচ্ছে তৃণমূল।
তৃণমূলের পাশাপাশি সিপিএম ও কংগ্রেসও এসআইআর-কে সামনে রেখে ভোটাধিকার খর্বের আশঙ্কার কথা বলেছে। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী এ দিন বলেছেন, “নিবিড় সংশোধন সবসময়ই হয়। কিন্তু সর্বদল বৈঠক হল না কেন? ভোটাধিকার নিশ্চিতের কথা বলে ভোটাধিকার কাড়ার চেষ্টা চলছে। বিহারে যাঁদের খুঁজে পাওয়া গেল না, তাঁদের নিখোঁজ বলা হল। কাজের সন্ধানে বাইরের রাজ্যে থাকা গরিব মানুষ ভোট দেবেন না?” কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীর চৌধুরীও বলেছেন, “লোকসভা আর বিধানসভা ভোটের মাঝে মহারাষ্ট্রে হঠাৎ করে কয়েক লক্ষ ভোটার বেড়ে গেল। বিহারে উল্টোটা। বাংলায় জনসংখ্যা বেড়েছে। নির্বাচন কমিশনকে সামনে রেখে যুক্ত-বিযুক্তের খেলা চলছে। ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।” এই প্রক্রিয়াকে রুখতে ‘চালাকি’ না করে জনস্বার্থে রাজ্য সরকারকে কাজ করতে হবে বলেও দাবি করেছেন অধীর।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)