Advertisement
E-Paper

এসজেডিএ নিয়ে চাপের মুখে তৃণমূল

শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (এসজেডিএ) দুর্নীতির মামলায় সিআইডি-র চার্জশিট নিয়ে ঘরে বাইরে চাপের মুখে পড়েছে শাসক দল। দলীয় নেতা-কর্মীদের একটা অংশ মনে করছে, কিছু নেতাকে বাঁচাতে গিয়ে চার্জশিট থেকে তাঁদের ‘অব্যাহতি’ দিয়েছে সিআইডি। যা দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে বলেই মনে করছেন তাঁরা।

কিশোর সাহা

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৫ ০২:৫৬

শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (এসজেডিএ) দুর্নীতির মামলায় সিআইডি-র চার্জশিট নিয়ে ঘরে বাইরে চাপের মুখে পড়েছে শাসক দল। দলীয় নেতা-কর্মীদের একটা অংশ মনে করছে, কিছু নেতাকে বাঁচাতে গিয়ে চার্জশিট থেকে তাঁদের ‘অব্যাহতি’ দিয়েছে সিআইডি। যা দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে বলেই মনে করছেন তাঁরা।

বিরোধীরা অবশ্য সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন, সিআইডি-র চার্জশিটে এসজেডিএ-র সন্দেহভাজন বোর্ড সদস্যদের নাম নেই কেন?

বুধবার কলকাতায় আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে দলীয় কার্যালয়ে শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য স্পষ্টই দাবি করেছেন— সিআইডি নয়, এসজেডিএ দুর্নীতি মামলার তদন্ত করুক সিবিআই। তিনি বলেন, ‘‘বোর্ড সদস্যদের অনুমোদন ছাড়া ঠিকাদারদের টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হোক। এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান পদ থেকে তৃণমূল বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্যকে সরিয়ে দেওয়া হল। কিন্তু তাঁকে বোর্ড সদস্য রেখে দেওয়া হল কেন?’’

এ দিন তিনি দাবি করেন, শুধু সিআইডি নয়, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-ও ওই দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত করছে। তিনি বলেন, ‘‘ইডি যাতে গোদালাকে গ্রেফতার করে নিজেদের হেফাজতে নিতে না পারে, সে জন্যই সিআইডি তড়িঘড়ি তাঁকে গ্রেফতার করল।’’ সারদা-কেলেঙ্কারির প্রসঙ্গ টেনে তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘তৃণমূলের রাঘববোয়ালদের সিবিআইয়ের হাত থেকে আড়াল করতে রাজ্য সরকারের পুলিশ ঠিক যে ভাবে কুণাল ঘোষকে গ্রেফতার করেছিল, সেই ভাবেই গোদালাকেও গ্রেফতার করা হল এ বার।’’

সিবিআই চেয়েছে কংগ্রেসও। ইতিমধ্যেই ওই মামলায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআইয়ের হস্তক্ষেপ চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন শিলিগুড়ি পুরসভার কংগ্রেস কাউন্সিলর সুজয় ঘটক। তিনি বলেন, ‘‘অনেক প্রশ্নের জবাব চার্জশিটে নেই। সেই জন্যই সিবিআই তদন্ত জরুরি।’’ প্রসঙ্গত, কংগ্রেসের দার্জিলিং জেলা সভাপতি শঙ্কর মালাকারকেও এই মামলায় জেরা করেছিল পুলিশ। সিআইডি-র চার্জশিটে অবশ্য তাঁর নাম নেই বলেই জানা গিয়েছে।

সিআইডি-র চার্জশিট নিয়ে প্রশ্ন তৃণমূলের অন্দরেও। উত্তরবঙ্গের অনেক তৃণমূল নেতাই চাইছেন, ওই ঘটনায় যুক্ত নেতা-জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করুক রাজ্য নেতৃত্ব। ২১ জুলাইয়ের সভায় কলকাতা গিয়ে জেলা নেতাদের বেশ কয়েক জন সে কথা তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের কানেও তুলেছেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দার্জিলিং জেলা সভাপতি গৌতম দেবের উপরেও চাপ রয়েছে। উত্তরবঙ্গের এক নেতা বলছেন, ‘‘এজডিএ-এর টাকায় দলের অনেকেই যে ফুলে ফেঁপে উঠেছেন, তা মানুষের চোখ এড়ায়নি। তাতে দলের ভাবমূর্তি খারাপ হয়েছে।’’

পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছেন, মামলার গোড়ায় শিলিগুড়ির তৎকালীন পুলিশ কমিশনার কারলিয়াপ্পন জয়রামন রুদ্রনাথ ছাড়াও তৃণমূল নেতা রঞ্জন শীলশর্মা, চন্দন ভৌমিককে জেরা করে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছিলেন। সিআইডি-র চার্জশিটে সে সবের কোনও উল্লেখ নেই, কেন— প্রশ্নটা পুলিশ মহলের সঙ্গে দলের একাংশেরও।

রুদ্রনাথ অবশ্য বলছেন, ‘‘দুর্নীতির সূত্রপাত তো অশোকবাবুদের (অশোক ভট্টচার্য) আমলে, তারই তদন্ত চলছে।’’ তবে গৌতম দেব ধরিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী দুর্নীতির সঙ্গে আপস করেন না। কাজেই দুর্নীতিতে কেউ যুক্ত বলে প্রমাণ মিললে ছাড় পাবেন না।’’

SGDA Trinamool Siliguri Jalpaiguri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy