Advertisement
E-Paper

জট দলের অন্দরেই, কলেজ-ত্যাগ মনুয়ার

শ্যামাপ্রসাদ কলেজের পরিচালন কমিটির সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিলেন তৃণমূল নেতা সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পদত্যাগপত্র কলেজের ‘টিচার ইন চার্জ’ তন্ময় বিশ্বাসের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন। সচ্চিদানন্দবাবুর বক্তব্য, ‘‘আমি যে ভাবে কলেজ চালাতে চেয়েছিলাম, কলেজ সে ভাবে চলছে না বলেই পদত্যাগ করেছি।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০১৫ ০৩:৩০
সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে মনুয়া

সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে মনুয়া

শ্যামাপ্রসাদ কলেজের পরিচালন কমিটির সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিলেন তৃণমূল নেতা সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পদত্যাগপত্র কলেজের ‘টিচার ইন চার্জ’ তন্ময় বিশ্বাসের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন। সচ্চিদানন্দবাবুর বক্তব্য, ‘‘আমি যে ভাবে কলেজ চালাতে চেয়েছিলাম, কলেজ সে ভাবে চলছে না বলেই পদত্যাগ করেছি।’’

একদা দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি এবং কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সচ্চিদানন্দবাবু দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছে ‘মনুয়া’ নামেই পরিচিত। অনেক নেতা-কর্মীরই অভিমত, ‘‘মনুয়াদা সজ্জন ও সৎ মানুষ।’’ ২০১২ সাল থেকে মনুয়াবাবু আশুতোষ কলেজের সান্ধ্য বিভাগ শ্যামাপ্রসাদ কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতির পদে ছিলেন। এদিন আচমকা তিনি পদত্যাগ করায় তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের একাংশের মধ্যেই কৌতূহল তৈরি হয়েছে। দলের অনেকেরই ধারণা, সম্প্রতি কলেজে ভর্তির ব্যাপারে দলীয় ছাত্র সংগঠনের কাজে সন্তুষ্ট ছিলেন না মনুয়াবাবু। সেই সঙ্গে কলেজে দীর্ঘদিন ধরে অধ্যক্ষ নেই। অধ্যক্ষ পদে যাঁকে কলেজ সার্ভিস কমিশন বাছাই করেছে তাঁর নিয়োগ নিয়েও টালবাহানা চলছে। এই ব্যাপারে খুবই বিরক্ত ছিলেন বলে মনুয়াবাবুর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর।

২০১২ সাল নাগাদ স্কুল সার্ভিস কমিশনের বর্তমান চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে কলেজের স্থায়ী অধ্যক্ষ করে পাঠায় কলেজ সার্ভিস কমিশন। কলেজের অন্দরের খবর, কর্তৃপক্ষের একাংশের মদতেই পড়ুয়াদের একাংশ তাঁর নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ হন।এরপর থেকেই প্রতিবারই কলেজে অস্থায়ী অধ্যক্ষ নিয়োগ হয়ে আসছে। কয়েকমাস আগেও কলেজ থেকে কন্যাশ্রীর ফর্মে অস্থায়ী অধ্যক্ষের স্বাক্ষর সংগ্রহ করতে গিয়ে বেকায়দায় পড়েছিল ছাত্রীরা। অস্থায়ী অধ্যক্ষ নিয়মিত কলেজে না আসার কারণেই ওই সমস্যা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছিলেন ছাত্রীরা। কলেজের পরিচালন সমিতির একাংশের সঙ্গে কয়েকমাস ধরেই বিরোধিতা চরমে উঠেছিল মনুয়াবাবুর। আগামী মে মাস নাগাদ কলেজের পরিচালন সমিতির নির্বাচন হওয়ার কথা। কলকাতা পুরসভার এক মেয়র পারিষদকেই পরিচালন সমিতির সভাপতির পদে বসানোর জন্যে তোড়জোড় শুরু হয়েছিল। মনুয়াবাবুর পদত্যাগের পিছনে সেই কারণই কাজ করছে কিনা তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে কলেজেরই একাংশে।

অবশ্য মনুয়াবাবুর পদত্যাগের পশ্চাতে কেবল কলেজের অভ্যন্তরীণ সমস্যাই নয়, তৃণমূলের অন্তর্দলীয় রাজনীতির ছায়াও পড়েছে বলে দলীয় নেতা-কর্মীদের একাংশের অভিমত। গত লোকসভা ভোটে দক্ষিণ কলকাতা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন সুব্রত বক্সী। তাঁর নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন মনুয়াবাবুই। তখন তিনি ভবানীপুরে ৭০ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর তথা পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। কিন্তু সেই ভোটে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের খাসতালুক ভবানীপুরে বিজেপি-র ভোট বৃদ্ধি নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেই স্থানীয় স্তরে সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। গত পুরভোটে বিজেপি প্রার্থী অসীম বসুর কাছে হেরে গিয়েছিলেন মনুয়াবাবু। অন্তর্ঘাতেই তাঁকে হারতে হয়েছিল বলে মনুয়া-ঘনিষ্ঠদের অভিযোগ। এরপরে দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূল সভাপতি পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দিয়ে দেবাশিস কুমারকে ওই পদে বসানো হয়। ফলে, দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কিছুটা দূরত্ব তৈরি হয় মনুয়াবাবুর।

শ্যামাপ্রসাদ কলেজের পরিচালন কমিটির সভাপতি পদ থেকে মনুয়াবাবু সরে দাঁড়ানোয় সেই দূরত্ব আরও বাড়বে কি না তা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে।

Trinamool Sachchidananda
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy