Advertisement
E-Paper

গুলিতে খুন তৃণমূল কর্মী, সিপিএমের বিরুদ্ধে নালিশ

খেতমজুরের পাওনা মেটাতে বেরিয়ে বাড়ির কাছেই গুলিতে খুন হয়ে গেলেন আমডাঙার গাজিপাড়ার এক তৃণমূল কর্মী। শুক্রবার রাতের এই ঘটনায় নিহতের নাম নুর হোসেন তরফদার (৩৫)। একটি খেত থেকে তাঁর দেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। চাষ নিয়ে এলাকারই চার যুবকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন নিহতের মা মাহিলা বিবি। ওই রাতেই সরিফুল গাজি নামে এক অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেফতার করে।

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৫ ০১:১৯
নিহতের স্ত্রী সবিনার সঙ্গে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।  ইনসেটে নিহত নুর  হোসেন তরফদার। ছবি: সুদীপ ঘোষ।

নিহতের স্ত্রী সবিনার সঙ্গে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ইনসেটে নিহত নুর হোসেন তরফদার। ছবি: সুদীপ ঘোষ।

খেতমজুরের পাওনা মেটাতে বেরিয়ে বাড়ির কাছেই গুলিতে খুন হয়ে গেলেন আমডাঙার গাজিপাড়ার এক তৃণমূল কর্মী। শুক্রবার রাতের এই ঘটনায় নিহতের নাম নুর হোসেন তরফদার (৩৫)। একটি খেত থেকে তাঁর দেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। চাষ নিয়ে এলাকারই চার যুবকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন নিহতের মা মাহিলা বিবি। ওই রাতেই সরিফুল গাজি নামে এক অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেফতার করে। সরিফুল এবং বাকি অভিযুক্তেরা সিপিএম সমর্থক হিসেবে পরিচিত হওয়ায় ঘটনায় রাজনীতির রং লেগেছে।

শনিবার বিকেলে নিহতের বাড়িতে যান উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, দলের জেলা পর্যবেক্ষক নির্মল ঘোষ এবং আমডাঙার বিধায়ক রফিকুর রহমান। সিপিএম পরিকল্পিত ভাবে নুর হোসেনকে খুন করেছে বলে তাঁরা অভিযোগ তোলেন। জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, ‘‘তিন মাস ধরে নুর হোসেনকে খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। এ ভাবে সিপিএম আবার জেলায় খুনখারাপির রাজনীতি শুরু করতে চাইছে।’’ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সিপিএম-এর ভারপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদক নেপালদেব ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই ওই যুবক খুন হন।’’ তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা জানিয়েছেন, দু’টি গুলি করে খুন করা হয় নুর হোসেনকে। একটি গুলি তাঁর মুখে, অন্যটি মাথার পিছনে লাগে। পুরনো বিবাদের জেরে তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে পুলিশের অনুমান। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পলাতকদের খোঁজ চলছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নুর হোসেন আগে সিপিএম সমর্থক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। গত পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। শুক্রবার রাত সাড়ে ৭টা নাগাদ স্ত্রী সবিনা বিবিকে চা করতে বলে বাড়ির পাশেই এক খেতমজুরকে তাঁর পাওনা মেটাতে যান। কিন্তু তিনি আর না-ফেরায় এবং তাঁর মোবাইল ফোনেও যোগাযোগ করতে না পারায় রাত ১০টা নাগাদ পরিবারের লোকেরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। তখনই বাড়ির কিছুটা দূরে একটি খেতে নুর হোসেনের দেহটি পড়ে থাকতে দেখেন তাঁরা। তার আগে কেউ কেউ বোমার শব্দও শুনতে পান।

সরিফুল ছাড়া আরও যে তিন জনের নামে নিহতের মা খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন, তারা ওই এলাকারই সারিফুল তরফদার, হাসান তরফদার ও রাজেশ তরফদার। চার জনের বিরুদ্ধেই এলাকায় বোমাবাজি, সন্ত্রাসের অভিযোগ তোলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, সরিফুলরা রাস্তায় যে ভাবে গুন্ডামি করে,, তাতে সকলেই তাদের ভয় পায়। থানায় অভিযোগ জানালেও পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি। পুলিশের দাবি, অভিযোগ পেয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

নিহতের পরিবারের দাবি, নুর হোসেনের তৃণমূলে যোগ দেওয়া সরিফুলরা মানতে পারেনি। মাস চারেক আগে তাঁর পাঁচ বিঘা জমির কয়েক লক্ষ টাকার ফসল নষ্ট করে দেয় ওরা। সে জন্য সরিফুলকে হাজতবাসও করতে হয়। সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পেয়ে ফিরে সে ফের তার কথামতো চলার জন্য চাপ সৃষ্টি করছিল নুর হোসেনের উপরে। খুনের হুমকিও দিচ্ছিল। নুর সরিফুলের কথা মানেনি বলেই খুন করা হল। ধৃত সরিফুলকে এ দিনই বারাসত জেলা আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাকে চার দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

simanta maitra CPM Amdanga Trinamool Police shoot
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy