Advertisement
E-Paper

জিএসটি-র ধাক্কা, বাড়তি কর আদায়ে নাভিশ্বাস

একেবারে শেষ বেলায় বাড়তি কর আদায়ের ফরমান আসায় আদাজল খেয়ে নামতে হচ্ছে আয়করের কর্মী-অফিসারদের। অতিরিক্ত লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে তাঁরা এ বার রাজ্যের ছোট ছোট ব্যবসা কেন্দ্রেও হানা দিতে শুরু করেছেন।

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৮ ০৩:৩৭

‘গুডস অ্যান্ড সার্ভিস ট্যাক্স’ বা জিএসটি-র আমজনতার চাপ যেমন বেড়েছে, পাল্লা দিয়ে ঝক্কি বেড়েছে আয়কর অফিসারদেরও। জিএসটি চালু হওয়ার পরে দেশ জুড়ে অর্থ সংগ্রহে যে-ঘাটতি দেখা দিয়েছে, তা পূরণ করতে ২০১৭-’১৮ অর্থবর্ষের মাঝামাঝি আয়কর দফতরের জন্য এক দফা লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম ও আন্দামান-নিকোবরের জন্য টাকার অঙ্কে সেই বর্ধিত লক্ষ্যমাত্রা হল ৬৫৬ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে নাভিশ্বাস উঠেছে আয়কর দফতরের।

একেবারে শেষ বেলায় বাড়তি কর আদায়ের ফরমান আসায় আদাজল খেয়ে নামতে হচ্ছে আয়করের কর্মী-অফিসারদের। অতিরিক্ত লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে তাঁরা এ বার রাজ্যের ছোট ছোট ব্যবসা কেন্দ্রেও হানা দিতে শুরু করেছেন। সম্প্রতি বর্ধমানের বেশ কিছু চালকলে হানা দিয়ে আয়কর ফাঁকির প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে বলে আয়কর দফতরের খবর। পরপর তল্লাশি-অভিযানে দিশাহারা চালকল-মালিকেরা অতিরিক্ত ৩০ শতাংশ আয়কর মেটানোর আশ্বাস দিয়েছেন। একই ভাবে হানা দেওয়া হচ্ছে রাজ্যের অন্যান্য জেলায়, অন্যান্য সংস্থাতেও। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর, মহেশতলার বেশ কিছু নির্মাণ সংস্থায় হানা দিয়েও অতিরিক্ত আয়কর পাওয়া গিয়েছে।

প্রতি অর্থবর্ষের শুরুতে আয়কর দফতরের জন্য একটি লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। সেই পরিমাণ কর আদায় করতেই হিমশিম খেতে হয় কর্মী-অফিসারদের। ২০১৭-’১৮ আর্থিক বছরের শুরুতে পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম ও আন্দামান-নিকোবর থেকে ৪১ হাজার ৮৯১ কোটি টাকা আয়কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ এই অর্থবর্ষে পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম ও আন্দামান-নিকোবর থেকে আয়কর হিসেবে ওই টাকা তুলতে হবে। একই ভাবে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছিল অন্যান্য ‘জোন’-এও।

আয়কর দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জিএসটি চালু হওয়ার পরে রাজকোষে ঘাটতি শুরু হয়। মাস তিনেক আগে আগেকার লক্ষ্যমাত্রা বদলে দিয়ে বলা হয়, চলতি অর্থবর্ষে পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম ও আন্দামান-নিকোবর থেকে তুলতে হবে ৪২ হাজার ৫৪৭ কোটি টাকা। যার অর্থ, আয়কর বাবদ অতিরিক্ত ৬৫৬ কোটি টাকা তোলার ধাক্কা। মাথায় হাত পড়ে যায় আয়কর অফিসারদের। বিভিন্ন সংস্থায় শুরু হয় হানা-তল্লাশি।

চলতি অর্থবর্ষের বাকি আছে আর মাত্র তিন সপ্তাহ। কলকাতায় এক আয়কর-কর্তা বলেন, ‘‘৭ মার্চ পর্যন্ত আমাদের জোন থেকে উঠেছে ৩১ হাজার ১৯২ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে আর মাত্র ২৪ দিনের মধ্যে ১১ হাজার ৩৫৫ কোটি টাকা তুলতে হবে। উঠেপড়ে অভিযান শুরু করলেও বড়জোর ১০ হাজার কোটি টাকা বাড়তে পারে। তাতেও ঘাটতি থেকে যাবে এক হাজার কোটি টাকারও বেশি। ওই টাকা কী ভাবে তোলা যায়, তা নিয়ে দফতরের সকলেই এখন দুশ্চিন্তায়।’’ অনেক বড় সংস্থাই এখনও চলতি অর্থবর্ষের আয়কর জমা দেয়নি। শেষ দিন ১৫ মার্চ। আয়কর অফিসারদের মতে, ওই খাতে বেশ কিছু টাকা পাওয়া যাবে। কিন্তু তাতেও নতুন লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে সমস্যা হতে পারে।

পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম ও আন্দামান-নিকোবরে ২০১৬-’১৭ অর্থবর্ষে আয়কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৫ হাজার ৫২০ কোটি টাকা। ২০১৭ সালের ৭ মার্চের মধ্যে উঠেছিল মাত্র ২৭ হাজার ৩৩২ কোটি। সে-বারেও ঝাঁপাতে হয়েছিল আয়কর অফিসারদের। ৮ মার্চ থেকে ৩১ মার্চের মধ্যে এই ‘জোন’-এর বাজার থেকে আয়কর বাবদ তাঁরা তোলেন ন’হাজার ২০১ কোটি টাকা, যা তখনও পর্যন্ত মেটানো হয়নি।

GST Tax Incoem Tax Department Goods and Service Tax গুডস অ্যান্ড সার্ভিস ট্যাক্স
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy