ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোটে পদাধিকারীদের আসন সংরক্ষণ নিয়ে ধুন্ধুমার তৃণমূলে। জেলা পরিষদের অর্ধেক আসন এ বার সংরক্ষণের জেরে বদলে যেতে চলেছে। পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতি ও গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানদের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। শাসক দল হিসাবে ‘প্রভাব’ খাটাতে চেয়েও বিশেষ সুবিধা করা যায়নি বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। এখন নির্বাচন কমিশন ও পঞ্চায়েত দফতরের উপর দলীয় নেতাদের ক্ষোভ চরমে পৌঁছেছে।
শাসক দলের অন্দরে যখন তোলপাড় চলছে তখন বিরোধীদের মধ্যে সংরক্ষণ প্রশ্নে কোনও হেলদোল নেই। খসড়া সংরক্ষণ তালিকা নিয়ে বিরোধী দলগুলি কমিশনে কোনও অভিযোগই জানায়নি। আসন সংরক্ষণের বদল চেয়ে যে ক’টি আবেদন জমা পড়েছে সবই শাসক দলের। যদিও কমিশন সূত্রের ইঙ্গিত, সংরক্ষণ বিধি মেনেই সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে তা পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। যে আবেদনগুলি পড়েছে তার উপর পঞ্চায়েত দফতরের ব্যাখ্যাও নেওয়া হয়েছে বলে কমিশনের মুখপাত্র জানান।
তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়,‘‘২০১১-র জনগণনা ধরে সংরক্ষণ হলে ভাল হত। তবে আমাদের যা সাংগঠনিক কাঠামো তাতে সামলে দিতে অসুবিধা হবে না।’’ পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় অবশ্য এ নিয়ে তাঁর দফতরের দায় ঝেড়ে ফেলেছেন। তাঁর বক্তব্য,‘‘সংরক্ষণ কীভাবে, কোথায় হবে তা ঠিক করে নির্বাচন কমিশন। এতে আমাদের কোনও ভূমিকা নেই।’’
গত ৬ ফেব্রুয়ারি ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের পদাধিকারীদের আসন সংরক্ষণের খসড়া তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। আপত্তি জানানোর সময় ছিল দু’সপ্তাহ। আলিপুরদুয়ার, দক্ষিণ দিনাজপুর, বাঁকুড়া এবং উত্তর ২৪ পরগনার সভাধিপতির আসন সংরক্ষণ নিয়ে আপত্তি জমা পড়েছে। তার শুনানিও চলছে। বাঁকুড়ার সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তীই কমিশনে তাঁর পদ সংরক্ষিত হয়ে যাওয়ায় আপত্তি জানিয়েছেন। যদিও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং আলিপুরদুয়ারের সভাধিপতিদের ‘ঘনিষ্ঠে’রা তা জানিয়েছেন।
জেলা পরিষদের পদাধিকারীদের আসন সংরক্ষণের কাজ সরাসরি করেছে কমিশন। গ্রাম প্রধান, সমিতি সভাপতিদের পদ সংরক্ষণ করেছেন জেলাশাসকেরা। কোনও স্তরেই নিজেদের মতো করে ‘সংরক্ষণ’-এর ব্যবস্থা করতে পারেনি তৃণমূল। এক শাসক দলের নেতার কথায়,‘‘ জেলা স্তরের অফিসারেরাও আমাদের অনুরোধ রাখেননি।’’ যা শুনে কমিশনের এক কর্তার বক্তব্য,‘‘পঞ্চায়েত দফতরের তৈরি করা দ্বিতীয় রোষ্টার মেনে এবার সংরক্ষণ হচ্ছে। মূলত জোড় সংখ্যার আসনগুলিই সংরক্ষিত হয়েছে। এমন সহজ অঙ্ক উল্টোতে গেলেই বিপত্তি। কোনও সরকারি অফিসারই সেই ঝুঁকি নিতে চান নি।’’ এ সব নিয়ে বিরোধী দলগুলির কোনও গতিবিধিই নজরে আসেনি কারও। ফলে নির্বিঘ্নেই শেষ হয়েছে এই প্রক্রিয়া। এখন চূড়ান্ত খসড়া দেখে ক্ষোভ জমেছে শাসক দলেই। ৬ মার্চ চূড়ান্ত সংরক্ষিত তালিকা প্রকাশ করার কথা কমিশনের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy