Advertisement
E-Paper

জল-খাবার অমিল, ভোগান্তি চালকের

কলকাতার মাঝেরহাটে সেতুভঙ্গের পরে শুক্রবার মাঝরাত থেকে রাজ্যের নানা প্রান্তের মতো পশ্চিম বর্ধমানেও কলকাতাগামী কয়েক হাজার ট্রাক আটকে দিয়েছে পুলিশ-প্রশাসন। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে ব্যাপক সমস্যায় পড়েছেন ট্রাক চালকেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:৩২
সারি: ২ নম্বর জাতীয় সড়কে দাঁড়িয়ে ট্রাক। শনিবার সালানপুরে। নিজস্ব চিত্র

সারি: ২ নম্বর জাতীয় সড়কে দাঁড়িয়ে ট্রাক। শনিবার সালানপুরে। নিজস্ব চিত্র

কেউ হাপিত্যেশ করছেন জলের জন্য। কেউ আশঙ্কা করছেন, বোঝাই জিনিসপত্র সময়ে গন্তব্যে না পৌঁছে দিলে তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। কলকাতার মাঝেরহাটে সেতুভঙ্গের পরে শুক্রবার মাঝরাত থেকে রাজ্যের নানা প্রান্তের মতো পশ্চিম বর্ধমানেও কলকাতাগামী কয়েক হাজার ট্রাক আটকে দিয়েছে পুলিশ-প্রশাসন। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে ব্যাপক সমস্যায় পড়েছেন ট্রাক চালকেরা।

শুক্রবার দুপরে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের বিভিন্ন মোড়ে গিয়ে দেখা গিয়েছে, রাস্তার দু’প্রান্তেই ট্রাক ও অন্য ভারী যানবাহনের সারি। দুর্গাপুরের ডিভিসি মোড়, কাঁকসার পানাগড়, আসানসোলের সালানপুরের মেলেকলা সেতু থেকে কাল্লা মোড় পর্যন্ত নানা গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সার বেঁধে দাঁড়িয়ে ট্রাক ও অন্য ভারী যানবাহনগুলি। পুলিশ জানায়, সেতুভঙ্গের পরে কলকাতার অন্য সেতুর উপরে চাপ কমাতে ও মহানগরে যানচলাচল স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসন এই যানবাহনগুলির গতি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। তার জন্য শুক্রবার রাত ১টা থেকে আসানসোল ও দুর্গাপুরে নানা এলাকায় শুরু হয় ট্রাক আটকানো। শনিবার সকালেও কোনও ভাবে মোড়গুলি ছাড়িয়ে এগিয়ে আসা ট্রাককে রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়ে দিতে দেখা গিয়েছে পুলিশকে। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (ট্র্যাফিক) এম পুষ্পা বলেন, ‘‘রাত ৮টা থেকে ভোর ৪টে পর্যন্ত ধাপে ধাপে ভারী ট্রাক ছাড়া হবে।’’

কিন্তু এই পরিস্থিতিতে চরম সমস্যায় পড়েছেন ট্রাক চালকেরা। বিশেষ করে অভাব হচ্ছে পানীয় জল ও খাবারের। তাঁরা জানান, রাস্তার ধারে সব জায়গায় খাবারের দোকান নেই। সঙ্গে থাকা জলের বোতলের জলও প্রায় শেষ। ডিভিসি মোড়ে আটকে থাকা ট্রাক চালক প্রকাশ সাউ বলেন, ‘‘সঙ্গে খাবার থাকে না। রাস্তার ধারে হোটেল বা ধাবাতেই খেয়ে নিই। আশপাশে একটিও দোকান নেই। কী খাব জানি না। জলও শেষ।’’ এ দিন দুপুরে পানাগড়ে আটকে থাকা ট্রাক চালক চন্দন মিশ্র বলেন, ‘‘রাত ৮টা থেকে ছাড়বে বলে শুনছি। সঙ্গে যেটুকু খাবার ও জল ছিল, সব শেষ।’’

শুধু কলকাতাগামী নয়, কাছাকাছি গন্তব্যের ট্রাকও আটকে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ চালকদের। গৌতম চৌধুরী নামে এক ট্রাক চালকের কথায়, ‘‘বামুনাড়া যেতে হবে। অথচ এবিএল মোড়ে আমাকে আটকে দেওয়া হয়েছে।’’ আবার বহু ট্রাক চালক জানান, তাঁদের ট্রাকে কাঁচা আনাজ রয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা এ ভাবে আটকে থাকায় তা পচে যেতে পারে। একটি ট্রাকে গিয়ে দেখা গেল, তা ছাগল নিয়ে যাচ্ছে। সেই ট্রাকের চালক জানান, দিনভর এ ভাবে আটকে থেকে জল ও খাবারের অভাবে ছাগলগুলি অসুস্থ হয়ে পড়বে। সব ট্রাক চালকদেরই প্রশ্ন, কোনও কারণে ট্রাকে থাকা জিনিসপত্র নষ্ট হলে, তার দায় নেবে কে।

পুলিশ কমিশনারেট অবশ্য জানিয়েছে, লালবাজার থেকে যেমন যেমন নির্দেশ আসছে সে ভাবেই ধাপে ধাপে ট্রাক ছাড়া হচ্ছে। ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে অবশ্য পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে পুরসভার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। পুরসভার মেয়র পারিষদ প্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খবর পাওয়ামাত্র জল সরবরাহ দফতরের দায়িত্বে থাকা মেয়র পারিষদ পবিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে ডিভিসি মোড়ে পানীয় জলের ট্যাঙ্কার পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।’’

Truck Drivers Majerhat Bridge Collapse Majerhat Kolkata Flyover Collapse
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy