বিনিয়োগের নাম করে প্রতারণার দু’টি পৃথক মামলায় দু’জনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। দু’জনকে দু’টি রাজ্য থেকে ধরেছে সিআইডি-র সাইবার অপরাধ থানা। সিআইডি জানিয়েছে, বিনিয়োগ করার নাম করে প্রায় ৪৭ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগে পঞ্জাব থেকে এক জনকে গ্রেফতার করেছেন গোয়েন্দারা। ধৃতের নাম কার্তিক ধুরিয়া। তাকে পঞ্জাবের মুকসার থেকে গ্রেফতার করে বৃহস্পতিবার ট্রানজ়িট রিমান্ডে শিলিগুড়িতে নিয়ে আসা হয়।
অন্য একটি ঘটনায় শেয়ারে বিনিয়োগের নাম করে ৩৬ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগে অসম থেকে এক জনকে বুধবার রাতে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। ধৃতের নাম জাহিরুল ইসলাম। তার বাড়ি অসমের রঙ্গিয়া এলাকায়। তাকে ধরা হয়েছে দিসপুর থেকে। বৃহস্পতিবার স্থানীয় আদালতে তোলা হলে জাহিরুলকে পাঁচ দিনের ট্রানজ়িট রিমান্ডে এ রাজ্যে নিয়ে আসার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
গোয়েন্দারা জানান, জাহিরুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে বারাসত থানায় দায়ের হওয়া একটি প্রতারণার মামলায়। গত জানুয়ারি মাসে এক চিকিৎসক বারাসত থানায় অভিযোগ দায়ের করে জানান, তিনি সমাজমাধ্যমে শেয়ারে বিনিয়োগের একটি বিজ্ঞাপন দেখে সেখানে যোগাযোগ করেছিলেন। এর পরে তাঁকে একটি ওয়টস্যাপ গ্রুপে যুক্ত করা হয়। শেয়ারে কী ভাবে বিনিয়োগ করতে হবে, সেই গ্রুপে তা শেখানো হয়। গোয়েন্দারা জানান, ওই অভিযোগকারী দু’মাস ধরে ধাপে ধাপে ৩৬ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেন। পরে তিনি জানতে পারেন, প্রতারিত হয়েছেন। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে সিআইডি তদন্তে নেমে জানতে পারে, একটি চক্র ওই প্রতারণার সঙ্গে জড়িত, যারঅন্যতম মাথা অসমের জাহিরুল। ওই ঘটনায় অভিযোগকারীর টাকা যে সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে গিয়েছে, সেগুলির সূত্র ধরে আগেই গোয়েন্দারা চার জনকে গ্রেফতার করেছিলেন। যাদের মধ্যে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের এক কর্মীও ছিল। জাহিরুলকে নিয়ে ওই ঘটনায় মোট পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হল।
সিআইডি জানিয়েছে, কার্তিক ধুরিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে শিলিগুড়ি থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায়। শিলিগুড়ির বাসিন্দা এক ব্যবসায়ী গত বছর পুলিশেঅভিযোগ করে জানান, সমাজমাধ্যমে কয়েক জনের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। তারা তাঁকে জানায়, একটি ওয়েবসাইটে বিনিয়োগ করলে মোটা টাকা পাওয়া যাবে। সেই মতো অভিযোগকারী ওই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রায় ৪৭ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেন। পরে তিনি জানতে পারেন, ওই ওয়েবসাইটিটি ভুয়ো। প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি।
কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে সিআইডি ঘটনার তদন্তভার নিয়ে জানতে পারে, ফিলিপিন্স থেকে ওই ওয়েবসাইট নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছিল। এমনকি, অভিযোগকারীর সঙ্গে যে ওয়টস্যাপের মাধ্যমে কথা বলেছে অভিযুক্তেরা, সেটিও বিদেশ থেকে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছিল। ওই ঘটনায় আগে গুজরাত থেকে তিন ভাইকে গ্রেফতার করেছিল সিআইডি। কার্তিককে নিয়ে চার জনকে ওই মামলায় গ্রেফতার করা হল।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)