Advertisement
১০ মে ২০২৪
KLO

KLO: বাবার প্রতীক্ষায় জীবন-কন্যারা

একদা দেশের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ জঙ্গি নেতা জীবন দীর্ঘদিন মায়ানমারের জঙ্গলে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন।

বাবাকে নিয়ে কথা হচ্ছে দুই মেয়ের মধ্যে। বুধবার।

বাবাকে নিয়ে কথা হচ্ছে দুই মেয়ের মধ্যে। বুধবার। ছবি: নারায়ণ দে

পার্থ চক্রবর্তী
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২১ ০৫:১৪
Share: Save:

বাবাকে শেষ কবে দেখেছে তারা, মনে করতে পারছে না দুই বোনের কেউই। কেমন দেখতে ছিল তাঁকে? নাহ্, ভাল করে মনে নেই তা-ও। তবু বাবার পথ চেয়েই এখন বসে আছে জীবন সিংহের দুই মেয়ে। সম্প্রতি কেএলও প্রধানের ঘরে ফেরার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়েছে। আর মেয়েরা আশায় বুক বাঁধছে, ‘‘এক বার এলে সারাদিন গল্প করব বাবার সঙ্গে।’’

একদা দেশের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ জঙ্গি নেতা জীবন দীর্ঘদিন মায়ানমারের জঙ্গলে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন। কিন্তু আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রামে, উত্তর হলদিবাড়িতে পনেরো ও এগারো বছরের যে দু’টি মেয়ে বড় হচ্ছে, তাদের কাছে জীবন শুধুই বাবা। চার বছর আগে মা ভারতী দাস মারা গিয়েছেন। তার পর বৈষ্ণবপাড়ায় মামা অজিতকুমার দাসের বাড়ি থেকেই বড় হচ্ছে তারা। বাড়ির কাছেই ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের নবম শ্রেণিতে পড়ে বড় মেয়ে। ছোট জন পড়ে সপ্তম শ্রেণিতে।

বুধবার বাড়ির সামনে বসে কথা বলছিল দুই বোন। বাবার প্রসঙ্গ উঠতেই স্বল্পভাষী বড়র মুখে চওড়া হাসি। সে বলল, “বাবাকে নিয়ে অনেক কিছু ভেবে রেখেছি। বাড়ি এলেই বাবার সঙ্গে সারাদিন গল্প করব। পেঁয়াজ কুচি দিয়ে আলু সেদ্ধ আমি খুব ভাল করে মাখতে পারি। বাবাকে সেটা খাওয়াব।’’ তার সঙ্গে সদ্য শেখা অমলেটও সে করে দেবে বাবাকে। পাশ থেকে ছোট মেয়ে বলে উঠল, “বাবা ফিরলে আমরা নেপালে বেড়াতে যাব, পুষ্পা আন্টির বাড়িতে।”

মামা অজিত জানান, শান্তি আলোচনার আবহ যে তৈরি হতে যাচ্ছে, দু’দিন আগেই তা জানতে পারে ওরা দু’জন। তার পর থেকে বাবার অপেক্ষায় বসে আছে। সঙ্গে চলছে বাবাকে নিয়ে নানা পরিকল্পনা। অজিত বলেন, “নিজের বাবা, মা কিংবা স্ত্রীর মৃত্যুর পরেও তাঁদের শেষ দেখা দেখতে পারেননি জামাইবাবু (জীবন)। এ বার অন্তত বাড়ি ফিরে দুই মেয়ের সঙ্গে উনি শান্তিতে থাকুন, সেটাই আমরা চাই।”

পরিবার সূত্রেই জানা যায়, দুই মেয়েকে নিয়ে দীর্ঘদিন জীবনের সঙ্গে ঘুরেছেন ভারতী। কখনও নেপালে, কখনও বাংলাদেশে। সবাইকে রেখে জীবন যখন মায়ানমারে চলে যান, বড় মেয়ে তখন আষ্টেক, ছোটর চার বছর। ২০১৭ সালে ভারতীর মৃত্যুর পর থেকে দুই বোনের ঠিকানা বৈষ্ণবপাড়া।

বাবা এলে থাকা হবে কোথায়? গ্রামে একচালা বাড়ি রয়েছে। অনেক দিন সেখানে কেউ থাকে না। তাই অবস্থা ভাল নয়। বড় মেয়ে সেখানেই থাকতে চায়। ছোট মেয়ের পছন্দ কিন্তু পাশেই মামাবাড়ি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

KLO
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE