বাবার স্বপ্ন, মেয়ে পড়াশোনা করে অনেক বড় হবে। কিন্তু মেয়ের জীবনের প্রথম পরীক্ষার ফল দেখে যেতে পারলেন না তিনি। মেয়ের অঙ্ক পরীক্ষার আগের দিন হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে হুগলির পান্ডুয়ার বাসিন্দা আব্দুল কায়েমের। পিতৃশোক বুকে নিয়ে অঙ্ক পরীক্ষা দিতে বসল পান্ডুয়া হাতনী উচ্চ বিদ্যালয়ের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মুসকান খাতুন। শনিবার বৈঁচি বাটিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার আগে বছর ষোলোর মেয়েটি বলল, ‘‘বাবার ইচ্ছা পূরণ করতে হবে।’’
অন্য দিকে, অঙ্ক পরীক্ষার আগে সাপের ছোবলে জখম হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। তার পরেও হাসপাতালের শয্যায় বসে পরীক্ষা দিয়েছে জ্যোতির্ময় জানা। দুই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর মানসিক দৃঢ়তাকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন সকলে।
বাটিকা বৈঁচি পঞ্চায়েতের বাসিন্দা আব্দুল কায়েম হৃদ্জনিত অসুস্থতা নিয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন পূর্ব বর্ধমানের একটি হাসপাতালে। শুক্রবার দুপুরে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। উপপ্রধান দীপেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় মুসকানের পিতৃবিয়োগের খবর জানতে পেরে তার বাড়িতে যান। ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী যাতে পরীক্ষা দিতে যেতে পারেন, তার ব্যবস্থা করেন। তিনি বলেন, ‘‘মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় বাবার মৃত্যু দুঃখজনক ঘটনা। তবে ছাত্রীটি মানিসক ভাবে দৃঢ়। সেটা দেখে ভাল লাগছে।’’ মুসকান জানিয়েছে, অঙ্ক পরীক্ষা সে দেবে। বাবার দেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দিতে বেরিয়ে যাওয়ার আগে সে বলে, ‘‘বাবা চেয়েছে, আমি ভাল করে পড়াশোনা করি। নিজের পায়ে দাঁড়াই। সেই চেষ্টাই করব।’’
আরও পড়ুন:
পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদার সুশীনদা এলাকার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী জ্যোতির্ময় বেলদা গঙ্গাধর একাডেমির ছাত্র। বড়মোহনপুর হাই স্কুলে তার পরীক্ষাকেন্দ্র পড়েছে। পরিবার সূত্রের খবর, শুক্রবার বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল জ্যোতির্ময়। সেই সময়ে একটি সাপ তার পায়ে ছোবল মারে। পরিবারের লোকজন তড়িঘড়ি ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে নিয়ে বেলদা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে যায়। ভর্তি করানো হয় তাকে। শনিবার হাসপাতালে শয্যায় বসে পরীক্ষা দেয় জ্যোতির্ময়। জানা গিয়েছে, এখনও চিকিৎসকদের নজরদারিতে থাকতে হবে তাকে। হাসপাতালের ভিআইপি কেবিনে তার পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।