Advertisement
E-Paper

পেটের দায়ে মমতার দুয়ারে ‘মাওবাদী’

পুরুলিয়া থেকে আসা ওই দু’জন সুচান সিং মুড়া (৩০) এবং সুন্দরী সিং সর্দারকে (২৫) সোমবার সারা দিন ধরে জেরা করেছেন অফিসারেরা। সুচান নিজেকে মাওবাদীদের অযোধ্যা স্কোয়াডের সদস্য বলে দাবি করেন। তাঁর কাছ থেকে একটি ওয়ান শটার বন্দুকও মিলেছে। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার জয় বিশ্বাস জানিয়েছেন, এই দু’জনের সঙ্গে কোনও মাওবাদী যোগাযোগ পাওয়া যায়নি।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৭ ০৪:৩২
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

বাচ্চা কোলে বছর পঁচিশের এক যুবতী। সঙ্গে বছর তিরিশের এক যুবক। চেহারাতে আদিবাসী ছাপ।

সোমবার ভোরে শহরের যে এলাকায় তাঁদের ঘুর ঘুর করতে দেখা গেল, তার ঢিলছোড়া দূরত্বে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি। টহলদার পুলিশ সন্দেহবশত জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারলেন, যুবক-যুবতী আত্মসমর্পণের জন্য এসেছেন!

পুরুলিয়া থেকে আসা ওই দু’জন সুচান সিং মুড়া (৩০) এবং সুন্দরী সিং সর্দারকে (২৫) সোমবার সারা দিন ধরে জেরা করেছেন অফিসারেরা। সুচান নিজেকে মাওবাদীদের অযোধ্যা স্কোয়াডের সদস্য বলে দাবি করেন। তাঁর কাছ থেকে একটি ওয়ান শটার বন্দুকও মিলেছে। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার জয় বিশ্বাস জানিয়েছেন, এই দু’জনের সঙ্গে কোনও মাওবাদী যোগাযোগ পাওয়া যায়নি। দু’জনের কারও নামেই থানায় কোনও মামলা নেই। রাজ্যের এক গোয়েন্দা কর্তাও বলেন, ‘‘এখনও যে মাওবাদীরা ধরা দেননি, তাঁদের তালিকা রয়েছে আমাদের কাছে। সেই তালিকায় এঁদের কারও নাম নেই।’’

তবে কেন এলেন তাঁরা? পুলিশ কর্তাদের ধারণা, সুচান ও সুন্দরী জেনেছেন, মাওবাদী হিসেবে আত্মসমর্পণ করলে রাজ্যের কাছ থেকে অনেক সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়। এমনকী, সরকারি চাকরিও পাওয়া যেতে পারে। সুচানের দাদা ফুলচান্দ সিং মুড়া এক সময়ে সক্রিয় মাওবাদী ছিলেন। তিনি আত্মসমর্পণ করার পরে এখন পুলিশের হোমগার্ড হিসেবে কাজ করেন।

মনে করা হচ্ছে, অভাবের তাড়নায় স্থায়ী চাকরির সন্ধানে সুচান ও সুন্দরী রীতিমতো পরিকল্পনা করেই কলকাতায় চলে আসেন। সঙ্গে জোগাড় করে আনেন ওই ওয়ান শটার। ওঁরা দু’জনে মাসতুতো ভাই-বোন। সুন্দরীর কোলে যে বাচ্চাটি রয়েছে, সেটি তাঁরই শিশু। স্বামী তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন বলে পুলিশকে সুন্দরী জানিয়েছেন। পুলিশ খোঁজ নিয়ে দেখেছে, পুরুলিয়ার বলরামপুর থানার সাইবুরডি গ্রামের বাসিন্দা সুন্দরী। সুচানের বাড়ি বাগমুন্ডি থানায় ছতরাজেরা গ্রামে।

দু’জনকে সন্ধে পর্যন্ত জেরা করে ছেড়ে দেয় পুলিশ। যদিও একজনের কাছে অস্ত্র পাওয়ার পরেও কেন তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পুলিশের একাংশ। এক প্রাক্তন পুলিশ কর্তার কথায়, ‘‘ধৃতের থেকে অস্ত্র উদ্ধারের পর অস্ত্র আইন অনুযায়ী তাঁকে গ্রেফতার করার কথা।’’ পাল্টা রাজ্য পুলিশের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘আত্মসমর্পণ করতে আসা ব্যক্তিকে অস্ত্রের জন্য গ্রেফতার না করার এক্তিয়ার পুলিশের রয়েছে। পরিষ্কার বোঝা গিয়েছে, গরিব মানুষ, নিজেকে মাওবাদী বলে সুবিধা পেতে মরিয়া। যদি অস্ত্রের জন্য গ্রেফতার করা হয়, তা হলে তো তাঁদের দুর্দশা আরও বাড়বে।’’

Maoist Mamata Banerjee মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সুচান সিং মুড়া সুন্দরী সিং সর্দার
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy