Advertisement
E-Paper

‘শিনজিয়াং শহরটা যেন ঘরেই বন্দি, ফিরে এলাম’

নোভেল করোনাভাইরাসের ধাক্কায় জানুয়ারির শেষে চিনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেশে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে ডোমকলের লিঙ্কন মণ্ডল ও সুস্মিতা মণ্ডলকে।

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:৫২
ভয়ের দিনগুলি: চিন থেকে ফিরে মা, ভাইকে সেখানকার কাহিনি বলছেন সুস্মিতা মণ্ডল। (ইনসেটে) লিঙ্কন মণ্ডল। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম

ভয়ের দিনগুলি: চিন থেকে ফিরে মা, ভাইকে সেখানকার কাহিনি বলছেন সুস্মিতা মণ্ডল। (ইনসেটে) লিঙ্কন মণ্ডল। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম

মাসখানেক আগেও দিনের ব্যস্ত সময়ে চিনের শিনজিয়াং শহরটা থাকত ভিড়ে ঠাসা। রাস্তায় অগুনতি মাথা, গাড়ির মিছিল। সেই শহর এখন মধ্য দুপুরেও স্তব্ধ। বছর দুয়েক আগে চিনের সেই শহরের শিহেজি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়ে ডোমকলের দুই ডাক্তারি পড়ুয়ার অভিজ্ঞতা, করোনাভাইরাস আস্ত দেশটাকে যেন ঘরে ঢুকিয়ে দিয়েছে!

নোভেল করোনাভাইরাসের ধাক্কায় জানুয়ারির শেষে চিনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেশে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে ডোমকলের লিঙ্কন মণ্ডল ও সুস্মিতা মণ্ডলকে। তার আগে চিনে ও ভারতে সাত দফা পরীক্ষা হয়েছে তাঁদের। ডোমকলের বাড়িতেও গিয়েছে জেলা হাসপাতালের মেডিক্যাল টিম। শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব নেই দেখে তবেই বাড়িতে অন্যদের সঙ্গে মেলামেশার ছাড়পত্র পেয়েছেন তাঁরা।

স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের বক্তব্য, সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবেই এত পরীক্ষা। তাতে সুফলও মিলেছে। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য দফতর বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, হাসপাতালে এখন কেউ পর্যবেক্ষণে নেই। ন’জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল, একটিতেও করোনাভাইরাস মেলেনি। এ দিন নতুন চার জনকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে এক জন উহান থেকে এসেছেন। আজ, শুক্রবার তাঁর লালারসের নমুনা পরীক্ষা করার কথা। এখন ‘হোম আইসোলেশনে’ রয়েছেন সাত জন। বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে যাঁরা ছিলেন তাঁদের সকলকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। নতুন করে এদিন কেউ ভর্তি হননি। সব মিলিয়ে খানিকটা স্বস্তির আবহ।

বৃহস্পতিবার বাড়িতে বসে সুস্মিতা বলেন, ‘‘ওখানে খাবারের জোগান বন্ধ হয়ে গিয়েছিল প্রায় এক সপ্তাহ। শুকনো খাবার খেয়ে দিন কাটছিল। শিক্ষক বা কলেজ-কর্তৃপক্ষ সাহায্য করতে পারছিলেন না।’’

চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ডোমকলের রাজাপুর থেকে সুস্মিতা এবং এতবারনগর এলাকা থেকে লিঙ্কন ২০১৮ সালে পাড়ি দিয়েছিলেন চিনের শিহেজি বিশ্ববিদ্যালয়ে। জানুয়ারির মাঝামাঝি শীতকালীন ছুটি পেলেও ঘরে ফেরার ইচ্ছে ছিল না তাঁদের। কিন্তু হঠাৎ করোনাভাইরাসের আক্রমণ সব হিসেব বদলে দিয়েছে।

সুস্মিতা বলেন, ‘‘জানুয়ারির শেষ সপ্তাহটা কী ভাবে কেটেছে, বলে বোঝাতে পারব না। শিনজিয়াং শহরে করোনা ভয়াবহ আকার না-নিলেও আক্রান্ত অনেকেই। কয়েক জন মারাও গিয়েছেন। খুবই আতঙ্কে ছিলাম।’’ লিঙ্কন বলছেন, ‘‘জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে দেখলাম, রাস্তাঘাট সুনসান। দোকানপাট বন্ধ। গৃহবন্দি গোটা শহর। শেষ পর্যন্ত অনেক কষ্টে বিমানের টিকিট জোগাড় করে ঘরে ফিরেছি।’’

লিঙ্কনের মা মৌসুমদেবী বলেন, ‘‘ওরা যে সুস্থ ভাবে ঘরে ফিরেছে, এটাই সব চেয়ে বড় পাওনা।’’ ডোমকলের এসিএমওএইচ মামুন রশিদ বলেন, ‘‘আমাদের আশাকর্মীরা নিয়মিত ওই দু’টি পরিবারে যাচ্ছেন। তাঁদের শারীরিক অবস্থার বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছেন। তেমন উদ্বেগের কিছু নেই।’’

Medical Student China Novel Coronavirus Xinjiang
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy