প্রতীকী ছবি।
কল্যাণীতে বাজির বাজারের কাছেই বারুদের আগুনে মারাত্মক দগ্ধ হয়েছেন দু’জন। মঙ্গলবার দুপুরে তাঁদের কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাঁদের দু’জনেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এ দিন দুপুরে শহিদপল্লি-চর কাঁচড়াপাড়ার বাজির বাজার এলাকায় একটি ক্লাবের পিছনে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানায়, আহতদের নাম জীবন সিং এবং সাগর বাগ। জীবনের শরীরের ঊর্ধবাংশ ৭০ শতাংশ এবং সাগরের শরীর ৪০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। দু’জনেই ষাটোর্ধ্ব, বাড়ি স্থানীয় কাঁচরাপাড়া পঞ্চায়েতের দক্ষিণ কাছারিপাড়ায়। জায়গাটা বাজারের একেবারে লাগোয়া। যেখানে অগ্নিকাণ্ড ঘটে, তার পাশেই পর পর সার দিয়ে বাজির দোকান আছে। ফলে বড় অগ্নিকাণ্ডের আশঙ্কা ছিল বলে পুলিশ সূত্রের দাবি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, নদিয়ার এই এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরেই বাজি তৈরি ও বিক্রির কারবার চলছে। সকাল থেকে বাজি বাজার বসে। প্রায় প্রকাশ্যেই শব্দবাজি বিক্রি হয়। রাস্তার উপর ছড়িয়ে মেশানো হয় তুবড়ির মশলা। দূর-দূরান্ত থেকে পাইকারি বা খুচরো খদ্দরেরা এখানে বাজি কিনতে আসেন। সংবাদমাধ্যম খোঁজথখবর নিতে শুরু করতেই গত তিন দিনে পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বেশ কিছু শব্দবাজি। কিন্তু তার পরেও বাজি বাজার বন্ধ হয়নি। মঙ্গলবার সকালেও সার-সার বাজির দোকান যথারীতি খুলেছে।
কী করে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটল, তা অবশ্য পরিষ্কার নয়। জেএনএম হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, কী হয়েছিল তা আহতেরা কিছুই বলতে চাইছেন না। বারবার জিজ্ঞাসা করলে বিরক্ত হচ্ছেন। সাগরের ছেলে শুভ বাগের দাবি, “তুবড়ি ফাটাতে গিয়েই এই ঘটনা ঘটেছে।” এলাকায় প্যান্ডেল বাঁধার কাজ করতে এসেছিলেন কল্যাণী ২০ নম্বর ওয়ার্ডের রথতলা এলাকার বাসিন্দা মৃত্যুঞ্জয় ঘোষ। তিনিও বলেন, “দু’জন অপরিচিত লোক বিড়ির আগুন দিয়ে তুবড়ি জ্বালাচ্ছিল। একটা তুবড়ি ফেটে ওরা ঝলসে গিয়েছে।” পুলিশও কার্যত একই দাবি করেছে। যদিও দুই বৃদ্ধ কেন ভরদুপুরে তুবড়ি জ্বালাতে গেলেন, তার কোনও সদুত্তর মেলেনি। এলাকার লোকজন কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেছেন।
যে জায়গায় তুবড়ি ফাটার কথা বলা হচ্ছে, বিকালে সেখান থেকে অনেকটা দূরে একটি গলির মধ্যেও কিন্তু পোড়া বারুদের গন্ধ পাওয়া গিয়েছে। দুর্ঘটনার পরেই অবশ্য আশপাশে সব বাজির দোকান বন্ধ হয়ে যায়। রাত পর্যন্ত আর খোলেনি। পুলিশ জানায়, এ দিনই ওই বাজার থেকে ৪৭ কেজি শব্দবাজি-সহ এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে এ দিনের দুর্ঘটনা নিয়ে রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy