Advertisement
E-Paper

অপহৃত আর অভিযুক্ত, দুই কনস্টেবলই গারদে

পুলিশকর্মীকে অপহরণের অভিযোগ খোদ পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে! আর তার জেরেই ফাঁস হয়ে গেল সরকারি চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণা চক্রের কাজ-কারবার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৫ ০৪:০৪

পুলিশকর্মীকে অপহরণের অভিযোগ খোদ পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে! আর তার জেরেই ফাঁস হয়ে গেল সরকারি চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণা চক্রের কাজ-কারবার।

অপহরণে অভিযুক্ত ও অপহৃত পুলিশকর্মী— দু’জনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চক্রের পাণ্ডা তথা অপহরণে অভিযুক্ত হাওড়া পুলিশের কনস্টেবল তারিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয় শনিবার রাতে। বসিরহাট স্টেশনে তাঁকে পাকড়াও করে কলকাতার হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিশ। বাংলাদেশের লাগোয়া প্রান্তিক ব্লক ইটিন্ডার পানিতর গ্রামে তারিকুলের আত্মীয়দের বাড়ি থেকে ‘অপহৃত’ কনস্টেবল রাজকুমার সরোজকে উদ্ধার করা হয়। প্রায় গোটা দিন জিজ্ঞাসাবাদের পরে রবিবার সন্ধ্যায় রাজকুমারকেও গ্রেফতার করে পুলিশ।

অভিযুক্তের গ্রেফতার করা হতেই পারে। অপহৃতকে ধরা হল কেন?

পুলিশি তদন্তে রাজকুমারের বিরুদ্ধেও প্রতারণা চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে যে। লালবাজারের কর্তাদের দাবি, তারিকুল ও রাজকুমার প্রতারণা চক্রের দোসর। তারিকুল হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের কনস্টেবল। রাজকুমার কলকাতা পুলিশের রিজার্ভ ফোর্সের কনস্টেবল। ডিসি (সেন্ট্রাল) বাস্তব বৈদ্য বলেন, ‘‘তারিকুল ও রাজকুমার— দু’জনের ভূমিকাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ অভিযুক্ত দুই পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাও ছাড়া বিভাগীয় তদন্তের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। হাওড়ার পুলিশ কমিশনার দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহ বলেন, ‘‘এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশের রিপোর্টের অপেক্ষায় আছি। তারিকুলের বিরুদ্ধে তার পরেই বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

এই ঘটনায় পুলিশের একাংশের মধ্যে দুর্নীতির বাড়বাড়ন্তের ছবিটা বেআব্রু হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কেন অপহরণ করা হয়েছিল রাজকুমারকে?

পুলিশ জানতে পেরেছে, চাকরির টোপ দিয়ে তারিকুলের আত্মীয়দের কাছ থেকেও বেশ কয়েক লক্ষ টাকা আদায় করেছিল রাজকুমার। কিন্তু কারও চাকরি হয়নি। তার বদলা নিতেই রাজকুমারকে শায়েস্তা করার ছক কষে তারিকুল। তদন্তকারী এক অফিসারের কথায়, ‘‘তারিকুল আরও টাকা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে রাজকুমারকে বসিরহাটে ডেকে আনে। সেই ফাঁদে পা দিয়েই রাজকুমার বিপাকে পড়ে।’’ গত ৩ অগস্ট থেকে নিখোঁজ ছিলেন রাজকুমার। তদন্তে নেমে বিভিন্ন তথ্য যাচাই করে পুলিশ নিশ্চিত হয়, রাজকুমারকে অপহরণ করেছে তারিকুলই। রাজকুমারের স্ত্রী অভিযোগের ভিত্তিতে অপহরণের তদন্তে নামে পুলিশ।

পুলিশি সূত্রের খবর, কয়েক দিন ধরে তারিকুলও কাজে যাচ্ছিলেন না। তাঁর মোবাইল ফোনের অবস্থানের সূত্র থেকেই পুলিশ জানতে পারে, বসিরহাট এলাকায় গা-ঢাকা দিয়ে আছেন তিনি। তারিকুল ইতিমধ্যে মুক্তিপণের দাবিতে রাজকুমারের স্ত্রীকে ফোন করেছিলেন বলেও অভিযোগ। তাঁর মাধ্যমেই ওই পুলিশকর্মীকে টাকা দেওয়ার লোভ দেখানো হয়। বসিরহাট স্টেশনে মুক্তিপণের টাকা নিতে গিয়েই পুলিশের হাতে ধরা প়ড়ে যান তারিকুল। তাঁকে জেরা করেই ‘অপহৃত’ রাজকুমারকে উদ্ধার করা হয়। তবে রাজকুমার নিজেও যে প্রতারণা চক্রের সঙ্গে জড়িত, তখনও সেটা স্পষ্ট হয়নি। সেই বিষয়ে নিশ্চিত হয়েই পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে।

Basirhat Two police lalbazar bangladesh Kolkata police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy