সিটের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠছে নিরন্তর। সিটের উপরে অনাস্থা প্রকাশ করে সিবিআই তদন্তের দাবিতে অনড় সালেম। ১৮ ফেব্রুয়ারি মাঝরাতে তাঁদের বাড়িতে পুলিশ পাঠানোর পিছনে কারা ছিল, সেই প্রশ্নও বার বার তুলছেন তিনি।
ফাইল চিত্র।
কলকাতা এবং আমতা: ছাত্রনেতা আনিস খানের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ব্যাপারে ‘সিট’ বা রাজ্য পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দলকে প্রাথমিক রিপোর্ট পেশ করার জন্য কলকাতা হাই কোর্টের দেওয়া দু’সপ্তাহের সময়সীমা আজ, বৃহস্পতিবার শেষ হচ্ছে। আজ ফের ওই মামলার শুনানি হলে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে সিট প্রাথমিক রিপোর্ট পেশ করতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর। রিপোর্টের প্রতিলিপি পাবেন মামলাকারীর আইনজীবীরা। আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলাটি গ্রহণ করেছিল। পরে আনিসের বাবা সালেম খানের আবেদনের ভিত্তিতে তাঁকেই মামলাকারী ঘোষণা করে হাই কোর্ট।
সিটের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠছে নিরন্তর। সিটের উপরে অনাস্থা প্রকাশ করে সিবিআই তদন্তের দাবিতে অনড় সালেম। ১৮ ফেব্রুয়ারি মাঝরাতে তাঁদের বাড়িতে পুলিশ পাঠানোর পিছনে কারা ছিল, সেই প্রশ্নও বার বার তুলছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে আজ মামলার গতিপ্রকৃতি নিয়ে নানা জল্পনা রয়েছে। কোর্টের নির্দেশে কবর থেকে আনিসের দেহ তুলে দ্বিতীয় বার ময়না-তদন্ত করা হয়েছে। আজ তার রিপোর্টও কোর্টে জমা পড়তে পারে।
সালেম পুলিশি পোশাকে তাঁদের বাড়িতে যাওয়া চার জনের বিরুদ্ধে ছেলেকে খুনের অভিযোগ তুলেছেন। কিন্তু তদন্ত শুরুর দু’সপ্তাহ পরেও এক জন হোমগার্ড এবং এক জন সিভিক ভলান্টিয়ার ছাড়া বাকি দুই অভিযুক্তের খোঁজ পায়নি সিট। অথচ তাঁরাও নাকি পুলিশের লোক। একই দলের দু’জনের খোঁজ মিলল অথচ বাকি দু’জনের সম্পর্কে তদন্তকারীরা কিছু জানতে পারলেন না কেন, উঠছে সেই প্রশ্নও। একটি শিবিরের প্রশ্ন, তবে কি হোমগার্ড ও সিভিক ভলান্টিয়ারের সঙ্গে সে-দিন পুলিশ ছাড়াও আর কেউ ছিল? এই পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তের নিরপেক্ষতা নিয়েও সন্দেহ প্রকট হচ্ছে। তবে রাজ্য পুলিশ বা সিটের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। সিট সূত্রের বক্তব্য, এ ব্যাপারে যা বলার, তা আদালতেই জানানো হবে।
তদন্ত যে-পথে এগোচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে পুলিশের একাংশেও। তাঁদের অভিমত, মৃত্যুর তদন্তে যত সময় এগোয়, ততই প্রমাণ লোপাটের আশঙ্কা থাকে। পরে সিবিআই তদন্তভার পেলেও অভিযুক্তদের ধরা কঠিন হবে। সমস্যা হবে রহস্যের পর্দা উন্মোচনেও। তাঁদের বক্তব্য, সে-রাতে ধৃত হোমগার্ড ও সিভিক ভলান্টিয়ার পুলিশের কোন দলের সঙ্গে কাজে বেরিয়েছিলেন, তা তো জানা যেতেই পারে। তা হলে সেই দলের সদস্যদের চিহ্নিত করা হচ্ছে না কেন, সেই প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। এক পুলিশকর্তা বলেন, “বাইরে থেকে যদি আমরা এই পথগুলির সন্ধান দিতে পারি, তা হলে সিটের কর্তাদের মাথায় এ-সবের কথা আসেনি, এটা বিশ্বাস করা কঠিন।” আমতার তখনকার ওসি-কে যে-ভাবে তড়িঘড়ি ছুটিতে পাঠানো হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে জনমানসে।
আনিসের মৃত্যুরহস্য নিয়ে সরব হয়েছে বাম এবং কংগ্রেস। এ দিন দুপুরে ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের পশ্চিমবঙ্গ শাখার সদস্যেরা আনিসের বাবা সালেম খানের সঙ্গে দেখা করেন। সিট এখনও রিপোর্ট দিল না কেন, সেই বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা। দোষীদের শাস্তির দাবিতে তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেও জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy