Advertisement
E-Paper

মমতাকে পছন্দ করি, এখন বলছেন উদয়ন

বর্ষীয়ান বাম নেতা অশোক ঘোষের জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে ফরওয়ার্ড ব্লকের দফতরে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীকে পাশে বসিয়ে অশোকবাবু সে দিন মমতা-প্রশস্তিতে বিভোর হয়ে পড়ায় ফ ব-র রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য উদয়ন গুহ প্রশ্ন তুলেছিলেন, শাসক দলের হাতে বাম কর্মী-সমর্থকেরা যখন নিয়মিত আক্রান্ত, তখন এই সৌর্হাদ্যের বাড়াবাড়িতে কী বার্তা যাবে?

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:২৮

বর্ষীয়ান বাম নেতা অশোক ঘোষের জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে ফরওয়ার্ড ব্লকের দফতরে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীকে পাশে বসিয়ে অশোকবাবু সে দিন মমতা-প্রশস্তিতে বিভোর হয়ে পড়ায় ফ ব-র রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য উদয়ন গুহ প্রশ্ন তুলেছিলেন, শাসক দলের হাতে বাম কর্মী-সমর্থকেরা যখন নিয়মিত আক্রান্ত, তখন এই সৌর্হাদ্যের বাড়াবাড়িতে কী বার্তা যাবে? দ্রুত পট বদলে এখন বদলে গিয়েছে মতও! ফ ব-র নেতৃত্বের যাবতীয় পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বৃহস্পতিবার দিনহাটায় পৌঁছে সেই উদয়নবাবুই বললেন, মমতা তাঁকে পছন্দ করেন। তিনিও মুখ্যমন্ত্রীকে পছন্দ করেন। মাঝে কিছু বিষয়ে রাজনৈতিক কারণে বিরোধিতা করেছিলেন মাত্র!

এর পরে দিনহাটার বিধায়ককে যে তৃণমূল শিবিরে দেখতে পাওয়া কেবল সময়ের অপেক্ষা, তা নিয়ে বিশেষ সংশয় নেই কোচবিহারে ফ ব-র বড় অংশে। যদিও উদয়নবাবু এখনও দল ছাড়েননি। প্রশ্নের জবাবে এ দিন তিনি বলেছেন, “যা ঠিক মনে হয়েছে, করেছি। এর পরে দিনহাটার মানুষ এবং আমার সহকর্মী, বন্ধু, অভিভাবক সকলের সঙ্গে কথা বলে পরের পদক্ষেপ করব। তাঁরা যা মত দেবেন, তা-ই করব। যদি রাজনীতি থেকে অবসর নিতে বলেন, তা-ই করব!” শীঘ্রই তিনি একটি নাগরিক কনভেনশন ডাকবেন বলে ফ ব সূত্রের খবর। সেখানেই সকলের মতামত নেবেন। তবে দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তারাপদ বর্মন এখনও আশাবাদী, “উনি কেন দলীয় পদ ছাড়লেন, তা ফ ব-র অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। তবে আমার বিশ্বাস উদয়নবাবু তৃণমূলে যাবেন না।” যদিও তৃণমূলের একটি সূত্রের ইঙ্গিত, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যানের পদ উদয়নবাবুর জন্য ভাবা হতে পারে।

উদয়নবাবুর সঙ্গে এ দিন ফোনে কথা বলেছেন ফ ব-র রাজ্য সম্পাদক অশোকবাবু। কলকাতায় এসে তাঁর সঙ্গে কথা বলবেন বলে উদয়নবাবু অশোকবাবুকে জানিয়েছেন। দলের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাস ও রাজ্য সম্পাদক অশোকবাবু এ দিনই কলকাতায় দলের কয়েক জন রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন। ঠিক হয়েছে, উদয়নবাবুর পদ ছেড়ে দেওয়ার চিঠি গ্রহণ করা হবে না। প্রকাশ্যে কোনও বিবৃতিও দেওয়া হবে না। বরং, অপেক্ষা করা হবে উদয়নবাবু কী করেন, তার জন্য।

উদয়নবাবু অবশ্য অশোকবাবুদের ‘বৃদ্ধতন্ত্রে’র বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। কয়েক মাস আগেই বামফ্রন্টের হয়ে তৃণমূলকে হারিয়ে যে দিনহাটা পুরসভার চেয়ারম্যান হয়েছেন তিনি, সেখানে পৌঁছেই এ দিন উদয়নবাবুর মন্তব্য, “আর কয়েক দিন পরেই দক্ষিণ আফ্রিকা ভারত সফরে আসবে। তাঁদের বিরুদ্ধে কপিল দেব, গাওস্করদের মাঠে নামালে ভারত কি জিতবে? সেই সহজ সত্যটা বোঝা উচিত!”

দিনহাটায় অবশ্য রাজনৈতিক শিবিরে দু’রকম প্রতিক্রিয়া। ফ ব-র একাংশ উদয়নবাবু দল ছে়ড়ে দিলেও শিবির বদলাতে নারাজ। আবার ফ ব-র হাতে আক্রান্ত হয়ে সিপিএমের যে স্থানীয় অংশ তৃণমূলে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল, তারা উদয়নবাবুর সম্ভাব্য আগমন বার্তায় ক্ষুব্ধ! দিনহাটা-২ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সহ-সভাপতি খগেশ্বর বর্মন যেমন বলেই ফেলেছেন, “বাম জমানায় শরিক দলের লোক হয়েও আমাদের মতো অনেক সিপিএম কর্মী ফ ব-র অত্যাচার থেকে রেহাই পাননি। অত্যাচার থেকে বাঁচতে তৃণমূলে এসেছি। সেখানে ফ ব-র নেতা এলে ক্ষোভ তো থাকবেই!’’

Udayan Guha Mamata Banerjee trinamool
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy