Advertisement
E-Paper

গুড়িয়া-খুনে যাবজ্জীবন উদয়চাঁদ ও শ্যামলের

দু’বছর আগে গুড়াপের হোমে মানসিক ভারসাম্যহীন আবাসিক গুড়িয়াকে হত্যার দায়ে তৎকালীন হোম-সম্পাদক উদয়চাঁদ কুমার এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ শ্যামল ঘোষকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিল আদালত। উপযুক্ত সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস পেয়েছেন অভিযুক্ত বাকি ন’জন। হুগলির চুঁচুড়া আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (ফার্স্ট কোর্ট) অরূপ বসু মঙ্গলবার উদয়চাঁদ এবং শ্যামলকে দোষী সাব্যস্ত করে ওই সাজা শোনান। একই সঙ্গে দু’জনকে এক লক্ষ টাকা করে জরিমানার নির্দেশ দেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:১৪

দু’বছর আগে গুড়াপের হোমে মানসিক ভারসাম্যহীন আবাসিক গুড়িয়াকে হত্যার দায়ে তৎকালীন হোম-সম্পাদক উদয়চাঁদ কুমার এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ শ্যামল ঘোষকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিল আদালত। উপযুক্ত সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস পেয়েছেন অভিযুক্ত বাকি ন’জন।

হুগলির চুঁচুড়া আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (ফার্স্ট কোর্ট) অরূপ বসু মঙ্গলবার উদয়চাঁদ এবং শ্যামলকে দোষী সাব্যস্ত করে ওই সাজা শোনান। একই সঙ্গে দু’জনকে এক লক্ষ টাকা করে জরিমানার নির্দেশ দেন। সেই টাকা সমাজকল্যাণ দফতরের উন্নয়ন খাতে খরচ করা হবে বলে জানান বিচারক। সাজা ঘোষণার আগে উদয়চাঁদ এবং শ্যামলের উদ্দেশে বিচারক মন্তব্য করেন, ‘আপনাদের আকৃতি মানুষের মতো। কিন্তু আপনারা মানুষ নন। আপনাদের মূলস্রোতে ফিরিয়ে দেওয়া যাবে না। তাতে বর্তমান সমাজের মহিলা, স্কুল-কলেজের ছাত্রীরা আপনাদের শিকার হতে পারেন।’

মামলার সরকারি আইনজীবী বিদ্যুৎ রায়চৌধুরী আদালতে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছিলেন। রায় জানার পরে তিনি বলেন, “অপরাধীদের সর্বোচ্চ সাজা চেয়ে উচ্চ আদালতে যাওয়ার জন্য রাজ্যের কাছে সুপারিশ করব। সরকার পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।” উদয়চাঁদ এবং শ্যামলকে ফাঁসানো হয়েছে দাবি করে দু’জনের পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, রায়ের বিরুদ্ধে তাঁরা কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করবেন। একই বক্তব্য আসামি পক্ষের আইনজীবী মানস বন্দ্যোপাধ্যায়েরও।

এই সংক্রান্ত আরও খবর

সাজা শুনতে আদালতে ভিড় ছিল ভালই। এজলাসে উদয়চাঁদ ও শ্যামল কোনও কথা বলেনি। তবে আদালত থেকে বেরিয়ে পুলিশের গাড়িতে ওঠার সময়ে উদয়চাঁদ দাবি করেন, “গুড়িয়ার মৃত্যু নিয়ে কিছু জানি না।” ওই হোমেরই অন্য এক আবাসিককে ধর্ষণের আর এক মামলায় ক’দিন আগেও শ্যামলকে যাবজ্জীবন দিয়েছিল চুঁচুড়া আদালত।

গুড়াপের ‘দুলাল স্মৃতি সংসদ’ নামে ওই হোমের আবাসিক গুড়িয়া-হত্যার ঘটনা সামনে আসে ২০১২ সালের ১১ জুলাই। সে দিন হোমের পাঁচিলের ধারের মাটি খুঁড়ে গুড়িয়ার পচাগলা দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বছর বত্রিশের ওই যুবতীর উপর অত্যাচার চালিয়ে খুন করে তথ্যপ্রমাণ লোপাটের জন্য দেহ পুঁতে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। উদয়চাঁদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে থানায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়ের করা হয়। উদয়চাঁদ, শ্যামল-সহ ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্তভার দেওয়া হয় সিআইডি-কে। পরে একটি জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে হোম-কাণ্ডের তদন্তে নামে সিবিআই-ও। ধৃত ১১ জনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ (খুন), সঙ্ঘবদ্ধ অপরাধ (৩৪) এবং তথ্যপ্রমাণ লোপাটের (২০১) মামলা রুজু করে তদন্ত করে সিআইডি।

২০১২ সালের অক্টোবর থেকে মামলার শুনানি শুরু হয় চুঁচুড়া আদালতে। হোমের আবাসিক এবং কর্মী-সহ মোট ২৭ জন সাক্ষ্য দেন। তাঁদের অনেকেই আদালতে জানান, শ্যামল হোমের সঙ্গে আদপেই কোনও ভাবে যুক্ত ছিল না। কিন্ত উদয়চাঁদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে সে নিয়মিত হোমে এসে ছড়ি ঘোরাত। আবাসিক মেয়েদের উপরে অত্যাচার করত। এ দিন সাজা ঘোষণার আগে বিচারক দু’জনের কাছেই জানতে চান, তাদের কিছু বলার আছে কি না। তবে দু’জনেই জানিয়ে দেয়, তাদের কিছু বলার নেই।

guria murder udaychand shyamal life imprisonment
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy