Advertisement
E-Paper

টুকলেই বাতিল হবে গবেষণা, কড়া শাস্তি গাইডেরও

এ বার উচ্চতর শিক্ষা, বিশেষত গবেষণায় নকল ঠেকাতে কঠোর বিধি বা নীতি-নির্দেশিকা ঘোষণা করল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৮ ০৩:০৩
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

স্কুল এবং কলেজ স্তরে পরীক্ষায় টোকাটুকি করলে নানাবিধ শাস্তির ব্যবস্থা আছে। এ বার উচ্চতর শিক্ষা, বিশেষত গবেষণায় নকল ঠেকাতে কঠোর বিধি বা নীতি-নির্দেশিকা ঘোষণা করল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

গবেষণা ক্ষেত্রে নকল ধরা পড়লে সংশ্লিষ্ট পড়ুয়া এবং গাইড বা নির্দেশক শিক্ষকেরা কী ধরনের শাস্তির মুখে পড়বেন, শুক্রবার প্রকাশিত ওই নীতি-নির্দেশিকায় তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার মোদ্দা কথা: নকল করলে গবেষণাপত্র বাতিল হতে পারে। শিক্ষকদের ক্ষেত্রে বন্ধ হতে পারে ইনক্রিমেন্ট বা বার্ষিক বেতন বৃদ্ধিও। পরবর্তী পর্যায়ে শিক্ষকের গাইড হওয়ার অধিকার থাকবে না।

ইউজিসি-র বিধিতে গবেষণায় নকলনবিশিকে চারটি ‘লেভেল’ বা স্তরে ভাগ করা হয়েছে। কোন পর্যায়ের টোকাটুকিতে পড়ুয়া এবং শিক্ষকের কী শাস্তি হবে, তা-ও জানানো হয়েছে ওই নির্দেশিকায়।

লেভেল শূন্য: ছাত্রছাত্রীদের থিসিস, ডিজার্টেশন বা গবেষণামূলক রচনায় নকলের হার ১০% পর্যন্ত হলে কোনও শাস্তি নয়।

লেভেল ১: ১০% থেকে ৪০% নকল ধরা পড়লে সংশ্লিষ্ট পড়ুয়াকে ছ’মাসের মধ্যে আবার সংশোধিত পাণ্ডুলিপি জমা দিতে বলা হবে।

লেভেল ২: নকলের হার ৪০% থেকে ৬০% হলে পড়ুয়া এক বছর আর কোনও রকম সংশোধিত পাণ্ডুলিপি জমা দিতে পারবেন না।

লেভেল ৩: ৬০ শতাংশের বেশি নকল ধরা পড়লে পড়ুয়ার রেজিস্ট্রেশনই বাতিল হয়ে যাবে।

প্রকাশিত বা প্রকাশের জন্য তৈরি গবেষণাপত্রে নকল করা হলেও চারটি পর্যায়ে শাস্তির বিধান দেওয়া হয়েছে।

লেভেল শূন্য: ১০% পর্যন্ত নকলের ক্ষেত্রে কোনও শাস্তি নয়।

লেভেল ১: ১০% থেকে ৪০% নকল ধরা পড়লে পাণ্ডুলিপি প্রত্যাহার করে নিতে বলা হবে।

লেভেল ২: নকল ৪০% থেকে ৬০% হলে পাণ্ডুলিপি প্রত্যাহার করে নিতে বলা হতে পারে। এক বছরের ইনক্রিমেন্ট বন্ধ হয়ে যেতে পারে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের। পরবর্তী দু’বছর কোনও মাস্টার্স, এমফিল, পিএইচ ডি পড়ুয়ার গাইড হিসেবে কাজ করতেও পারবেন না সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-শিক্ষিকা।

লেভেল ৩: ৬০ শতাংশের বেশি নকল ধরা পড়লে পাণ্ডুলিপি প্রত্যাহার করে নিতে বলা হতে পারে। ইনক্রিমেন্ট বন্ধ রাখা যেতে পারে পরপর দু’বছর। পরবর্তী তিন বছর কোনও মাস্টার্স, এমফিল, পিএইচ ডি পড়ুয়ার গাইড হিসেবে কাজ করতে পারবেন না সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-শিক্ষিকা।

নকল ঠেকানোর এই বিধিতে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে সচেতনতা বাড়ানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। নকল ধরার সফটওয়্যার রাখতে হবে সব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। জমা দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে ওই সফটওয়্যারে থিসিস বা গবেষণাপত্র যাচাই করে নিতে হবে। পড়ুয়াদের লিখিত ভাবে জানাতে হবে, এটি তাঁর মৌলিক কাজ। সংশ্লিষ্ট গাইডকেও সেটা জানাতে হবে লিখিত ভাবে। নকলনবিশির প্রবণতা ঠেকাতে সহ-উপাচার্য অথবা ডিনের নেতৃত্বে ইনস্টিটিউশনাল অ্যাকাডেমিক ইন্টিগ্রিটি প্যানেল (আইএআইপি) এবং প্রতিটি বিভাগে অ্যাকাডেমিক ইন্টিগ্রিটি প্যানেল (ডিএআইপি) গড়ার কথাও বলা হয়েছে। শাস্তির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে আইএআইপি।

আগে গবেষণাপত্রে নকল যাচাইয়ের কোনও ধরাবাঁধা নিয়ম ছিল না। নামী জার্নালগুলি নিজেরা খতিয়ে দেখে কোনও কোনও ক্ষেত্রে গবেষণাপত্র বাতিল করে দিত। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তি বিভাগের ডিন অম্লান চক্রবর্তী ইউজিসি-র এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘‘গবেষণা ক্ষেত্রে এই পদক্ষেপের খুবই দরকার ছিল।’’ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক পার্থপ্রতিম রায়ের বক্তব্য, নকল ঠেকাতে এই বিধির যথাযথ ব্যবহার প্রয়োজন। ‘‘দেখতে হবে এই নীতি-নির্দেশিকার যেন কোনও রকম অপব্যবহার না-হয়,’’ বলছেন পার্থপ্রতিমবাবু।

UGC University Grants Commission ইউজিসি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy