ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠল রাজস্থানের তিন বিধায়কের বিরুদ্ধে। এক জন শাসকদল বিজেপির বিধায়ক, এক জন বিরোধী দল কংগ্রেসের, অপর জন নির্দল। অভিযোগ, কোনও কাজে বিধায়ক তহবিলের টাকা দিলে, সেখান থেকে ‘কমিশন’ নিতেন এই তিন বিধায়ক। ঘটনাকে কেন্দ্র করে অস্বস্তিতে পড়েছে রাজস্থানের শাসক-বিরোধী উভয় পক্ষই। বিজেপি এবং কংগ্রেস উভয়েই অভিযুক্তদের জবাবদিহি দাবি করেছে। রাজস্থান সরকার ইতিমধ্যে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্তেরও নির্দেশ দিয়েছে।
সম্প্রতি গোপন ক্যামেরায় অভিযানের প্রেক্ষিতে তিন বিধায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে আসে। বিজেপির রেবন্ত্রম দঙ্গ, কংগ্রেসের অনিতা যাদব এবং নির্দল বিধায়ক রিতু বানাওয়াত নিজ নিজ বিধায়ক তহবিল থেকে অর্থ অনুমোদন করার বিনিময়ে টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি জানাজানি হতেই অস্বস্তি পড়ে দুই দলই। তড়িঘড়ি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা। সরকার যে দুর্নীতি কোনও ভাবেই রেয়াত করবে না, সেই বার্তা স্পষ্ট করে দেন তিনি। ভজনলাল লেখেন, “কেউ যত প্রভাবশালীই হোক না কেন, দোষী প্রমাণিত হলে কাউকে রেয়াত করা হবে না।”
অতিরিক্ত মুখ্যসচিব (স্বরাষ্ট্র) ভাস্কর সাওয়ান্তের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথাও বলেন তিনি। সেই মতো রাজস্থানের মুখ্যসচিব এবং পুলিশপ্রধানকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশ দেন ভজনলাল। সেই মতো একটি চার সদস্যের কমিটি ইতিমধ্যে গঠিত হয়েছে। কমিটিতে রয়েছেন পঞ্চায়েত, অর্থ এবং স্বরাষ্ট্র দফতরের বিশেষ সচিব। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ওই কমিটিকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
রাজস্থানের বিধানসভার শাসকদলের মুখ্য সচেতক যোগেশ্বর গর্গও ইতিমধ্যে একটি চিঠি লিখেছেন স্পিকার বাসুদেব দেবনানির কাছে। বিষয়টি বিধানসভার এথিক্স কমিটিতে পাঠিয়ে অনুসন্ধানের অনুরোধ করেছেন তিনি। পদক্ষেপ করা হয়েছে দলীয় স্তরেও। রাজস্থানের বিজেপি সভাপতি মদন রাঠৌর ইতিমধ্যে দলীয় বিধায়ক রেবন্ত্রমকে একটি নোটিস পাঠিয়েছেন। বিধায়কের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, সে বিষয়ে তিন দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। রাজস্থানের বিজেপি সভাপতির বক্তব্য, এটি অভিযোগটি দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের আওতায় পড়ে। কেন রেবন্ত্রমের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে না, দলীয় বিধায়ককে সেই কারণ দর্শানোর জন্য বলেছেন তিনি।
অন্য দিকে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তিকরাম জুলিও জানান, কংগ্রেস বিধায়ককে নোটিস পাঠানো হয়েছে। দলীয় বিধায়কের থেকে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। তিকরাম বলেন, “জনপ্রতিনিধিরা জনগণের জন্য কাজ করেন। বিধায়ক তহবিলে দুর্নীতি হলে বা ‘কমিশন’ নেওয়া হলে, এটি অত্যন্ত নিন্দনীয়। আমাদের দলের বিধায়ক হলেও তা সহ্য করা হবে না।” রাজস্থান সরকার যাতে নিরপেক্ষ ভাবে এবং রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে প্রত্যেক অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্ত করে, সেই দাবি তুলেছে কংগ্রেস। একই সঙ্গে তদন্তের অগ্রগতিতে কী কী তথ্য উঠে এসেছে, তা-ও প্রকাশ্যে আনার দাবি তুলেছে তারা।