তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় (বাঁ দিকে) ও রঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। ছবি: রবিন রাই।
মাসখানেক আগে পর্যটকদের সঙ্গে দার্জিলিঙে এসেছিলেন কলকাতার একটি ভ্রমণ সংস্থার কর্তা ও এক কর্মী। দু’দিনের প্যাকেজ ট্যুর শেষে পর্যটকরা ফিরে গেলেও, ফেরা হয়নি তাঁদের। বিল না মেটানোয় ভ্রমণ সংস্থার ওই প্রতিনিধিদের হোটেলের ঘরে আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ। তাঁদের দিয়ে হোটেল পরিষ্কার, খাবার পরিবেশন করা এবং বাজার করানোর মতো কাজ করানো হচ্ছিল বলেও অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে ওই দু’জনকে উদ্ধার করল পুলিশ। অভিযুক্ত হোটেল মালিককে জেরা করা হচ্ছে।
জোর করে আটকে রাখার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে দার্জিলিঙের হিলকার্ট রোড লাগোয়া ওই হোটেল মালিকের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দার্জিলিং- সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন ভ্রমণ সংস্থার কর্তাদের মধ্যে।
দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, ‘‘বেহালা পর্ণশ্রী থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। সেখান থেকে তথ্য পেয়েই আমরা অভিযান চালাই। হোটেল মালিককে জেরা করা হচ্ছে। তদন্ত চলছে। দু পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন।’’
ঘটনার সূত্রপাত ২৬ মে। বেহালার পর্ণশ্রী-র বাসিন্দা, ভ্রমণ সংস্থার কর্তা তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কর্মী রঞ্জন চট্টোপাধ্যায় ৬০ জন পর্যটকের একটি দল নিয়ে দার্জিলিঙে আসেন। হোটেলের ২০টি ঘর ভাড়া নিয়েছিল সংস্থাটি। গাড়িও ভাড়া করা হয়েছিল। দু’দিন পরে ফেরার সময় তাঁদের থেকে হোটেল কর্তৃপক্ষ বেশি টাকা দাবি করে বলে অভিযোগ। তাঁরা জানিয়েছেন, হোটেল কর্তৃপক্ষের দাবি মতো প্রায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা বকেয়া ছিল। কলকাতায় ফিরে তা মিটিয়ে দেওয়ার কথা বললেও হোটেল কর্তৃপক্ষ নমনীয় হননি। তাপসবাবু বলেন, ‘‘আমাদের দু’জনকে জোর করে আটকে রাখা হয়। বলা হয় যত দিন টাকা না শোধ করা হবে ছাড়া হবে না। জোর করে আমাদের দিয়ে নানা কাজ করানো হতো। শেষে কোনও ভাবে আমরা বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারি।’’ ভ্রমণ সংস্থার কর্মী রঞ্জনবাবু অভিযোগ করে বলেন, ‘‘আমাদের দিয়ে ঘর পরিষ্কার করা, খাবার পরিবেশন করানো হতো। হোটেলের কর্মীদের সঙ্গে বাজারে পাঠানো হতো।’’ পর্ণশ্রীতে তাপসবাবু ও রঞ্জনবাবুর বাড়িতে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, তাঁদের পরিবারের সদস্যরা দার্জিলিং গিয়েছেন।
যাবতীয় অভিযোগই অস্বীকার করেছেন হোটেলের মালিক আশিস পোদ্দার। তাঁর দাবি প্রথম থেকেই ভ্রমণ সংস্থা চুক্তি খেলাপ করেছে। তাঁদের একটি চেক ব্যাঙ্ক থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। আশিসবাবুর দাবি, ‘‘কাউকে জোর করে আটকে রাখা হয়নি। ক্রমাগত চুক্তি খেলাপ করায় ওদের বিল ক্রমশ বেড়ে গিয়েছিল। সেই টাকা শোধ করতে না পেরে নিজেরাই দাবি করেছিলেন গত ২২ জুনের মধ্যে পাওনা মেটাবেন। তার নিশ্চয়তা হিসেবে নিজেরা হোটেলে থেকে যাবেন।’’ আশিসবাবু দাবি করেছেন, আইনজীবীর সামনেই ভ্রমণ সংস্থার দুই প্রতিনিধি এই চুক্তি করেছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy