Advertisement
E-Paper

বিচারপতির সঙ্গে ‘আঁতাঁত’! বিকাশকে ঘিরে বিক্ষোভ উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীদের, উড়ে এল প্লাস্টিকের বোতল

হাই কোর্টের প্রধান ভবনের বাইরে বিকাশের চেম্বারের সামনে বিক্ষোভ দেখান ওই প্রার্থীরা। সেখান থেকে পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দেয়। পরে বিকাশের সহকারীদের চেম্বারের বাইরে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন তাঁরা।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৫ ২০:০৭
বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের দফতরের সামনে বিক্ষোভ চাকরিপ্রার্থীদের।

বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের দফতরের সামনে বিক্ষোভ চাকরিপ্রার্থীদের। — নিজস্ব চিত্র।

কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের চেম্বারের বাইরে শুক্রবার বিক্ষোভ দেখালেন উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্টের সুপারনিউমেরারি পদ নিয়ে নির্দেশের পরেও উচ্চ প্রাথমিক নিয়োগ মামলার কোনও অগ্রগতি হয়নি কলকাতা হাই কোর্টে। আর এ জন্য তাঁরা বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু এবং বিকাশকেই দায়ী করেছেন। তাঁদের দাবি, বিচারপতির সঙ্গে বিকাশের ‘আঁতাঁত’ রয়েছে। আর তার জেরেই এই মামলার অগ্রগতি হচ্ছে না। এই অভিযোগ জানিয়ে হাই কোর্টের প্রধান ভবনের বাইরে বিকাশের চেম্বারের সামনে বিক্ষোভ দেখান ওই প্রার্থীরা। সেখান থেকে পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দেয়। শেষ পর্যন্ত বিকাশের দুই জুনিয়র আইনজীবীর দফতরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন ওই প্রার্থীরা। সেখানে বিকাশ এসে উপস্থিত হলে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁর দিকে জলের বোতলও ছোড়েন। পুলিশ লাঠি চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। জুনিয়রদের এর পরে দফতর থেকে বার করে নিয়ে যান বিকাশ। তিনি পাল্টা আঙুল তোলেন রাজ্যের শাসকদলের দিকে।

কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে শুক্রবার উচ্চ প্রাথমিকের মামলার শুনানি ছিল। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, বিচারপতি বসুর এজলাসে মামলার কোনও অগ্রগতি হয়নি। সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারের অতিরিক্ত শূন্যপদ (সুপারনিউমেরারি) তৈরিতে হস্তক্ষেপ করেনি। কলকাতা হাই কোর্টের দেওয়া সিবিআই তদন্তের নির্দেশও খারিজ করে দিয়েছে। তার পরেও কেন মামলার অগ্রগতি হয়নি, সেই প্রশ্নই তুলেছেন প্রার্থীরা। প্রসঙ্গত, সুপার নিউমেরারি পদ তৈরির ফলে চাকরি পাওয়ার কথা উচ্চ প্রাথমিকের এই শিক্ষকদের একাংশের। তাঁদের আশঙ্কা, বিকাশের করা মামলার কারণে তাঁদের চাকরি যেতে পারে। বিকাশের চেম্বারের সামনে স্লোগান দিতে থাকেন উচ্চ প্রাথমিকের প্রার্থীরা। হাই কোর্টের প্রধান ভবনের বাইরেই রয়েছে ‘টেম্পল চেম্বার’। সেখানেই বসেন বিকাশ। বিচারপতি বসুর এজলাস থেকে মামলা সরানোর দাবিও তোলেন।

হাই কোর্টের সামনে চত্বরে ১৪৪ ধারা থাকে। তাই বিক্ষোভকারীদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয় পুলিশ। তার পরেই তারা সিটি সিভিল কোর্টের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন। সেখানে বিকাশের দুই জুনিয়র ফিরদৌস শামিম এবং সুদীপ্ত দাশগুপ্তের চেম্বার রয়েছে। তার নীচে অবস্থান শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। অভিযোগ, আইনজীবীদের জুতো দেখিয়েছেন তাঁরা। এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘‘বিচারপতি বিকাশের সঙ্গে টাইআপ করেছেন। তিন বছর আমাদের যন্ত্রণায় রেখে দিয়েছেন। বিকাশ একটা ফেল করা প্রার্থীকে দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করিয়ে আটকে রেখেছেন। তাঁর হলফনামা জমা দিচ্ছেন আদালতে। বিচারপতি তা গ্রহণ করছেন। তিনি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ কী ভাবে লঙ্ঘন করলেন, সেই প্রশ্ন তুলছি। বিচারপতি বসুর বেঞ্চ থেকে এই মামলা সরানো হোক।’’

শুক্রবার রাতে বিক্ষোভস্থলে পৌঁছন বিকাশ। তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁর দিকে প্লাস্টিকের জলের বোতল, চায়ের ভাঁড় ধেয়ে আসে। বোতল ছুড়লে বিক্ষোভরত চাকরিপ্রার্থীদের দিকে তেড়ে যান আইনজীবী শামিম। তাঁর সঙ্গে বচসা হয় বিক্ষোভকারীদের। পুলিশ এসে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেন। তার পরে নিজের সহকারীদের দফতর থেকে বার করে নিয়ে যান বিকাশ। তিনি বলেন, ‘‘আইনজীবীরা লড়াই করছেন, আইন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির পক্ষে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের লেলিয়ে দিচ্ছে শাসকদল। আমি বাড়ি চলে গিয়েছিলাম। শুনলাম জুনিয়রেরা বার হতে পারছেন না চেম্বার থেকে । ফিরে এলাম। মুক্ত করে নিয়ে যাচ্ছি। পরে আইনি পদক্ষেপ করব। এর থেকে প্রমাণিত, রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। ’’ আইনজীবী বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাঠিয়েছেন। আইনজীবী-সমাজকে বলব এক হয়ে গর্জে উঠুন। ৬ তারিখ মামলার পরবর্তী শুনানি। ক্ষমতা থাকে, ওই দিন আসুন।’’

Calcutta High Court Bikash Ranjan Bhattacharya Recruitment Case upper primary recruitment
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy