Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Vande Bharat Mission

কলকাতায় বন্দে ভারত বন্ধ রেখে কড়া হচ্ছে বিধি

কয়েক দিনের মধ্যে সিঙ্গাপুরে আটকে থাকা বেশ কিছু কলকাতাবাসীর ফেরার কথা ছিল। সেটাও আপাতত অনিশ্চিত।

ছবি সংগৃহীত।

ছবি সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০২০ ০৩:৪৬
Share: Save:

দেশে ফেরার জন্য বিদেশে বিমানে ওঠার আগে শর্তপত্রে সই করেও ছাত্রছাত্রী-সহ কিছু যাত্রী কলকাতায় নেমে বাধ্যতামূলক সরকারি নিভৃতবাসে যাচ্ছিলেন না। এই প্রেক্ষিতে আজ, বৃহস্পতিবার থেকে কলকাতায় বন্দে ভারত প্রকল্পের উড়ান আসা স্থগিত রাখা হচ্ছে। ফের ওই উড়ান চালু হওয়ার পরেও পড়ুয়ারা আর দল বেঁধে কলকাতায় ফেরার সুযোগ পাবেন কি না, সেই বিষয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। কারণ, বিধি না-মেনে বিদেশফেরত যে-সব যাত্রী জোর করে বাড়ি চলে যাচ্ছিলেন, তাঁদের অধিকাংশই ছাত্রছাত্রী। অতঃপর ১৫-২০ জনের বেশি পড়ুয়াকে যাতে উড়ানে তোলা না-হয়, সেই বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে।

কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, বুধবার ভোরে কায়রো থেকে বন্দে ভারত উড়ানে অন্তত ৪৪ জন যাত্রী কলকাতায় আসেন। নিয়ম মেনে তাঁরা সকলেই হোটেলে নিভৃতবাসে চলে গিয়েছেন। আজ, বৃহস্পতিবার ও কাল, শুক্রবার পশ্চিম এশিয়া ও ম্যানিলা থেকে ইন্ডিগোর যে-দু’টি উড়ানের কলকাতায় আসার কথা ছিল, সেগুলি আসছে না। কয়েক দিনের মধ্যে সিঙ্গাপুরে আটকে থাকা বেশ কিছু কলকাতাবাসীর ফেরার কথা ছিল। সেটাও আপাতত অনিশ্চিত।

নবান্নের এক কর্তা জানান, এ বার কেউ বিদেশ থেকে কলকাতায় আসতে চাইলে বিমানের টিকিট কাটার আগে তাঁকে এই শহরের হোটেলের ঘর বুক করতে হবে। যাতে শহরে নামার সঙ্গে সঙ্গে তিনি সাত দিনের জন্য হোটেল-নিভৃতবাসে থাকতে বাধ্য হন। পুরো হোটেল-ভাড়া দিয়ে ঘর বুক করলে তবেই কলকাতার বিমানের টিকিট মিলবে। কলকাতায় যে-সব হোটেলে নিভৃতবাসের ব্যবস্থা হয়েছে, রাজ্য সরকার তার তালিকা বিদেশ ও বিমান মন্ত্রকের কাছে পাঠিয়েছে। শহরে নামার সঙ্গে সঙ্গে ওই যাত্রীদের পাসপোর্টও জমা রেখে দেওয়া হতে পারে। নিয়ম মেনে হোটেল-নিভৃতবাসে থাকলে তবেই সেই পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হবে।

সপ্তাহখানেক আগে কিরঘিজস্তান থেকে আসা অন্তত ১২০ জন ডাক্তারি পড়ুয়া কলকাতায় নেমে হোটেলে যেতে অস্বীকার করেন। যদিও বিমানে ওঠার আগে কিরঘিজস্তানে যে-ফর্ম তাঁরা পূরণ করেছিলেন, তাতে শর্ত ছিল, কলকাতায় নেমে তাঁদের হোটেলে থাকতেই হবে। দল বেঁধে কলকাতায় নেমে তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করেন এবং জোর করে বাড়ি চলে যান। নিয়ম না-মেনে বাড়ি চলে যান কিরঘিজস্তান থেকে আসা অন্য এক দল ডাক্তারি পড়ুয়া এবং মালয়েশিয়া থেকে ফেরা বেশ কিছু শ্রমিকও।

বন্দে ভারত প্রকল্পে মঙ্গলবারেও লন্ডন থেকে দিল্লি হয়ে এবং দোহা, কুয়েত ও ঢাকা থেকে মোট পাঁচটি উড়ান কলকাতায় নেমেছে। কিন্তু রাজ্য চিঠি দিয়ে বিদেশ ও বিমান মন্ত্রককে বলেছে, বিদেশ থেকে বন্দে ভারত উড়ানে কলকাতায় নামার পরে নিভৃতবাসে যেতে বাধ্য করানোর জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম তৈরি করার আগে ওই প্রকল্পের আর কোনও উড়ান যেন এই শহরে পাঠানো না-হয়। তাই ১ জুলাই থেকে কলকাতায় বন্দে ভারতের উড়ান আসা বন্ধ রাখছে কেন্দ্র।

নবান্নের কর্তা জানান, এক দল উচ্ছৃঙ্খল যাত্রীর জন্য বিদেশ থেকে কলকাতায় আসতে চাওয়া বহু মানুষকে ভুগতে হচ্ছে। ওমানে বসে গত দু’মাস ধরে কলকাতায় ফেরার চেষ্টা করছিলেন অমিতাভ সেনগুপ্ত। সরাসরি বন্দে ভারত উড়ান না-পেয়ে সম্পূর্ণ নিজেদের উদ্যোগে ৬ জুলাই বিমান ভাড়া করে কলকাতায় ফেরার তোড়জোড় করছিলেন। কিন্তু এই ডামাডোলে আপাতত সেটাও বন্ধ। ক্যালিফর্নিয়ায় বসে নির্মলেন্দু দাস জানান, লকডাউনের মধ্যে কলকাতায় শ্বশুরমশাইয়ের মৃত্যুর পরে শাশুড়ি একা হয়ে পড়েছেন। অবিলম্বে তাঁর অথবা স্ত্রীর কলকাতায় আসা ভীষণ জরুরি। কলকাতায় বন্দে ভারতের উড়ান স্থগিত হয়ে যাওয়ায় তাঁকে সাধারণ আন্তর্জাতিক যাত্রী উড়ান চালু হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE